বিধাননগর, 17 অক্টোবর: ফের কাঠগড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস ৷ এবার অভিযোগ, তৃণমূল নেতাদের মারধরের জেরে অবসাদে আত্মঘাতী এক ব্যক্তি ৷ মৃতের নাম সুশান্ত বেরা৷ ঘটনাটি ঘটেছে রাজারহাটের দাস পোল্ট্রি এলাকায় ।
বুধবার রাতে তিনি আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ ৷ রাতেই পরিবারের তরফে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করা হয় বিধাননগরের রাজারহাট থানায় ৷ এই নিয়ে পুলিশের কোনও বক্তব্য মেলেনি ৷ তবে অভিযোগপত্রে বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷
তৃণমূলের পার্টি অফিসে মারধর ! অবসাদে আত্মঘাতী শাসক দলেরই সমর্থক (ইটিভি ভারত) এই নিয়ে তৃণমূলেরও কারও প্রতিক্রিয়া এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি ৷ অন্যদিকে বৃহস্পতিবার মুখে কুলুপ এঁটেছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরাও ৷ তবে ঘটনার সঙ্গে যেহেতু রাজনীতি জড়িয়ে গিয়েছে ৷ তাই আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি ৷ তাদের দাবি, রাজারহাট ক্রমশ মাথাচাড়া দিচ্ছে শাসক দলের থ্রেট কালচার ৷ তার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে ৷
রাজারহাট থানায় মৃত সুশান্ত বেরার স্ত্রী প্রতিমা বেরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ সেখানে দাবি করা হয়েছে, গত 10 অক্টোবর সুশান্তর ভাই বাপিকে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ বাপি মানসিক ভারসাম্যহীন ৷ সেখানে বাপিকে মারধর করা হয় ৷ সেই খবর পেয়ে সুশান্ত ওই পার্টি অফিসে যান ৷ সেখানে তাঁকেও মারধর করা হয় ৷ অপমানিত করা হয় ৷
এই ঘটনায় কাঠগড়ায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা ৷ তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রাজারহাট বিষ্ণুপুর-1 পঞ্চায়েতের সদস্য রক্তিম কর ও তাঁর অনুগামী বলে পরিচিত শুভ সেন, পরিতোষ রুইদাস, পলাশ সরদার ৷ তাঁরা এলাকায় হুমকি দিয়ে বলে আসে যে বেরা পরিবারের সঙ্গে কেউ যাতে কথা না বলে ।
সুশান্ত বেরার মৃত্যুর পর পুলিশের কাছে জমা পড়া অভিযোগপত্র (নিজস্ব চিত্র) তার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সুশান্ত বেরা ৷ বুধবার রাত সাড়ে 10টা নাগাদ তিনি আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ ৷ তবে বৃহস্পতিবার পরিবারের কেউ আর মুখ খুলতে নারাজ ৷ তবে স্থানীয় বিজেপি নেতা পাপ্পু দাস বলেন, ‘‘আমাদের কাছে মৃতের ছেলে ফোন করে ৷ জানায়, বাবা (সুশান্ত বেরা) গলায় দড়ি দিয়ে মারা গিয়েছে ৷ পুজোর মধ্যে তৃণমূল নেতা রক্তিম কর তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে ৷ এই নিয়ে অপমানিত বোধ করেন সুশান্তবাবু ৷ কারণ, তিনিও তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৷ এর জেরে তিনি কয়েকদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন ৷ তার জেরেই আত্মঘাতী হয়েছে ৷’’
তৃণমূল কার্যালয়ে রক্তিম কর (কালো টি-শার্ট পরিহিত) ও অন্যদের সঙ্গে সুশান্ত বেরা (লাল গোল দিয়ে চিহ্নিত)৷ (ফাইল ছবি) তিনি আরও বলেন, ‘‘মৃতের বাড়ির লোকেরা থানায় অভিযোগ করেছে ৷ এটাও থ্রেট কালচার৷ পরিবার কোথাও ভয় পাচ্ছে ৷ তাই এখন আর কোনও অভিযোগ করতে চাইছে না ৷’’
(আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয় -যদি আপনার মধ্যে কখনও আত্মহত্যার চিন্তা মাথাচাড়া দেয় বা আপনার কোনও বন্ধু বা পরিচিত এই সমস্যায় জর্জরিত হন, তাহলে ভেঙে পড়বেন না। জানবেন, এমন কেউ আছে যে আপনার যন্ত্রণা, আপনার হতাশা ভাগ করে নিতে সদা-প্রস্তুত। আপনার পাশে দাঁড়াতে তৎপর। সাহায্য পেতে দিনের যে কোনও সময়ে 044-24640050 এই নম্বরে কল করুন স্নেহা ফাউন্ডেশনে। টাটা ইন্সটিটিউট অফ সোশাল সায়েন্সের হেল্পলাইন নম্বরেও (9152987821) কল করতে পারেন। এখানে ফোন করতে হবে সোমবার থেকে শনিবার সকাল 8টা থেকে রাত 10টার মধ্যে।)