দুর্গাপুর, 22 ডিসেম্বর: ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের জন্য জমি চাই ৷ তাই ভরা শীতে এল রেলের উচ্ছেদের নোটিশ ! তার জেরে চরম আতঙ্কে দুর্গাপুরের 30 নম্বর ওয়ার্ডের রেলবস্তির বাসিন্দারা ৷ সেই সঙ্গে জল, বিদ্যুৎ-সহ অন্য পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ ৷ তারপরই দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুইয়ের দ্বারস্থ আম্বেদকর কলোনির রেলবস্তির বাসিন্দারা ৷
উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগে রেল বাজেটে প্রস্তাব দেওয়া হলেও, লুধিয়ানা থেকে ডানকুনি পর্যন্ত রেলের ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের কাজ শুরু করা যায়নি ৷ এবার সেই ফ্রেট করিডরের কাজ শুরুর জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে রেল কর্তৃপক্ষ ৷ তার জন্য দুর্গাপুরের 30 নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত আম্বেদকর কলোনির বাসিন্দাদের উচ্ছেদের নোটিশ জারি করা হয়েছে ৷ যে বাড়িগুলি ভাঙা পড়বে, সেগুলির গায়ে লাল কালি দিয়ে কাটা চিহ্নও দিয়েছে রেল ৷
এই নোটিশের পেতেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন রেলবস্তির বাসিন্দারা ৷ পুনর্বাসন না-দিলে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে কোথায় যাবেন তাঁরা, সেই প্রশ্নে স্থানীয় বিজেপির বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুইয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন বাসিন্দারা ৷ রবিবার দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুই, বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত রেল বস্তিতে যান ৷
বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললেও, পুনর্বাসনের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের উপরেই ঠেলে দিয়েছেন বিধায়ক ৷ তাঁর মতে, রেল উচ্ছেদ করলেও পুনর্বাসন দেবে রাজ্য সরকার ৷ তিনি বলেন, "রেলের সম্প্রসারণ হোক সেটা আমরাও চাই ৷ কিন্তু, ওঁরা জায়গা ছাড়ার আগে রাজ্য সরকারকে জমি দিতে হবে পুনর্বাসনের জন্য ৷ বিধায়ক হিসেবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে আমি বাড়ি বানিয়ে দেব ৷ কিন্তু, যতক্ষণ পর্যন্ত পুনর্বাসন না-হচ্ছে, ততক্ষণ উচ্ছেদ করতে দেব না ৷ এটা আগেও বলেছি, এখনও বলছি ৷"
তবে, লক্ষ্মণ ঘড়ুইয়ের এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন দুর্গাপুর পশ্চিমের প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ৷ তৃণমূলের এই নেতা বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার উচ্ছেদ করবে আর পুনর্বাসন দেবে রাজ্য সরকার ! উনি ভেবেচিন্তে কথা বলুন ৷ কেন্দ্রীয় সরকার উচ্ছেদের আগে অনেক কথাই বলে ৷ কিন্তু, উচ্ছেদের পর কোনও উন্নয়ন হয় না ৷ উচ্ছেদ করতে এলে সাধারণ মানুষ যখন রুখে দাঁড়াবে, তাঁদের সঙ্গে আমরাও দাঁড়াব ৷"
রাজনৈতিক চাপানউতরের মধ্যে আপাতত এই ফ্রেইট করিডরের কাজ থমকে আছে ৷ তবে, শুধু এই রেল বস্তি নয় ৷ এর আগেও আসানসোল ও দুর্গাপুরের বেশকিছু জায়গায় রেল কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছে ৷ আর সঙ্গে রয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন ৷ এই দুয়ের জের ও জমি জটে রেলের ফ্রেইট করিডরের ভবিষ্যৎ কী, তা সময়ই বলবে ৷