কলকাতা, 22 জানুয়ারি: কথায় বলে আইন আছে, আইনের ফাঁকও আছে । আর সেই ফাঁক গলেই দেদার বেআইনি নির্মাণ চালিয়ে যান অসাধু প্রোমোটাররা। সেই প্রবণতায় ইতি টানতেই এবার কলকাতা কর্পোরেশনের নয়া পরিকল্পনা। তিন বার শুনানিতে হাজির না-থাকলে সংশ্লিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শুনানি আধিকারিক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে। এই মর্মে বিল্ডিং বিভাগের একটি স্ট্যান্ডার অপারেশন প্রসিডিওর (এসওপি) তৈরি করতে চলেছে বলেই খবর কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে।
এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, "মূলত যারা বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ করেন, এই এসওপি বাস্তবায়িত হলে তারা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। আইনের ফাঁক গলে নির্মাণ কাজ বেশি এগোতে পারবেন না অভিযুক্ত পক্ষ। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বেআইনি নির্মাণে কিছুটা হলেও লাগাম টানা যাবে বলেই মনে হচ্ছে ৷"
সম্প্রতি বেহালার 127 নম্বর ওয়ার্ডের এক নাগরিক 'টক টু মেয়র' অনুষ্ঠানে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ করেন ৷ তাঁর অভিযোগ ছিল, অভিযুক্ত পক্ষ তিন তিনটে শুনানি তারিখ চলে গেলেও হাজির হচ্ছেন না। এদিকে একের পর এক তারিখ দিয়ে যাচ্ছে। আর সেই সুযোগে অভিযুক্ত প্রোমোটার বেআইনি নির্মাণ কাজ দেদার করে চলেছেন। বিষয়টি শোনার পরই কলকাতার মেয়র এই প্রবণতা ঠেকাতে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন কলকাতার পুর কমিশনার ধবল জৈনকে।
এই বিষয় মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, চিরকাল শুনানি পর্ব চলতে পরে না। তাতে অবৈধ নির্মাণ আরও বাড়ে ৷ ফলে এই বিষয় কঠোর হতে হবে বিল্ডিং বিভাগকে। তার জন্য এসওপি তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূলত বেআইনি নির্মাণ যারা করেন, তারাই এই শুনানি এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ।
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, শুনানিতে দুই পক্ষের কোনও এক পক্ষ যদি একাধিকবার হাজির না-হলে কি করণীয় সেই নিয়ে আইন বা বিল্ডিং নিয়মে কিছু বলা নেই। এই প্রবণতা বিশেষ করে বেআইনি নির্মাণে অভিযুক্ত পক্ষেরই বেশি লক্ষ্য করা যায়। ফলে সময় নিয়ে বারেবারে তারা বেআইনি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যান। এবার তা আটকাতেই তৈরি হচ্ছে নতুন এসওপি। তাতে যদি কোনও পক্ষ তিনবার শুনানিতে অনুপস্থিত থাকে, তাহলে নথি খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন শুনানি আধিকারিক। অর্থাৎ অনন্তকাল নয়, তিন শুনানি পর্যন্ত অপেক্ষা করবে কর্তৃপক্ষ। না-হলেই সিদ্ধান্ত জানাবে।