কলকাতা, 27 অগস্ট: নবান্ন অভিযান আমাদের কর্মসূচি নয়, সেখানে আমাদের কোনও প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছে না। ছাত্র সমাজের ডাকা মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে আজ নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজ ৷ নির্যাতিত ওই মহিলা চিকিৎসকের বিচারের দাবি চেয়ে এই নবান্ন অভিযান বলে দাবি তাদের ৷ তবে 18 দিন ধরে বিচারের দাবিতে আন্দোলন চালাতে থাকা হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, নবান্ন অভিযানের সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই ৷
মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের নেপথ্যে রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ ৷ রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তারা মনে করছেন, নবান্ন অভিযানের নামে শহরজুড়ে তাণ্ডব চলতে পারে । তাই আজকের এই অভিযানকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক কার্যালয় ৷ কলকাতা ও হাওড়া থেকে নবান্ন যাওয়ার পথগুলিতে মোতায়েন থাকছে অতিরিক্ত বাহিনী ৷ তৈরি থাকছে ড্রোন, কমব্যাট ফোর্স ৷ থাকছে জল কামানও ৷
সোমবার এই নিয়ে রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক ভবন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার ও এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা ৷ সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্নের সামনে জমায়েত করা একেবারেই বেআইনি এবং নিষিদ্ধ । এক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকেও স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া রয়েছে ৷ কিন্তু, তাও সংগঠনের তরফ থেকে কথা বলা হয়নি ৷’’
সোমবার একটি গণ কনভেনশনের ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেখানে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। আরজি কর হাসপাতালের ওই মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়ে নিজেদের মতামত জানান, সোহিনী সরকার, জিতু কমল থেকে মিরাতুন নাহার। সেই কনভেনশনের পরেই তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে দেয় জুনিয়র চিকিৎসক্ ফ্রন্ট। মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান নয়, 28 অগস্ট অর্থাৎ বুধবার শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত তারা একটি মিছিলের ডাক দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। দুপুর 12টা থেকে শুরু হবে এই মিছিল ৷ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে সেই মিছিলে পা-মেলানোর আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, এর আগেও জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্টের তরফে একটি মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত। এরপরে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যভবন অভিযানও করেছিলেন ৷ তারই পরে চিকিৎসক সংগঠনের তরফ থেকে ডাকা হয়েছিল সোমবারে এই গণ কনভেনশন। এই কনভেনশন এর অনুষ্ঠান থেকেই তাঁদের আগামী দিনের কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে প্রত্যেকটা কর্মসূচি ঘোষণা করার সময় তারা স্পষ্ট করে দেন, "কোনও রাজনৈতিক রং নয়, সাধারণ মানুষ হিসেবে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে।"