পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

প্রতিবাদী মহিলাদের টেনে-হিঁচড়ে সরাল পুলিশ, রাত দখলে তুলকালাম বারাসতে - RG Kar Doctor Rape and Murder - RG KAR DOCTOR RAPE AND MURDER

RG Kar Protest in Barasat: ফের বিতর্কে পুলিশের ভূমিকা । প্রতিবাদীদের টেনে-হিঁচড়ে জাতীয় সড়ক থেকে সরানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে । রাত দখল কর্মসূচি ঘিরে বুধবার তুলকালাম বাঁধে বারাসতের কলোনি মোড়ে ।

RG Kar Protest in Barasat
রাত দখলে তুলকালাম বারাসতে (নিজস্ব ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 5, 2024, 8:08 PM IST

বারাসত, 5 সেপ্টেম্বর: 'রাত দখল' কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বারাসতে ৷ কলোনি মোড়ে জাতীয় সড়ক থেকে টেনে-হিঁচড়ে প্রতিবাদীদের সরানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে । রেহাই পেল না শিশুও । পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক ।

রাত দখলে তুলকালাম বারাসতে (নিজস্ব ভিডিয়ো)

যদিও পুলিশের দাবি, আন্দোলন শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অকারণে 34 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল । যার ফলে পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচলে সমস্যা হচ্ছিল । যানজটও তৈরি হয়েছিল জাতীয় সড়কে । সেবিষয়ে প্রতিবাদীদের প্রথমে বোঝানোর চেষ্টা হয় । কিন্ত তাতে কাজ না হওয়ায় পরে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে । কোনও বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেনি । যদিও ভিডিয়োতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে (যার সত‍্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত), কীভাবে পুলিশ ও র‍্যাফের জওয়ানরা প্রতিবাদীদের বলপূর্বক সরিয়ে তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছেন প্রিজন ভ্যানে ।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বারাসত জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্পর্শ নীলাঙ্গী বলেন, "অকারণে রাত তিনটে পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল । বারবার আমরা ও'দের বোঝানোর চেষ্টা করি । বলা হয়, জাতীয় সড়কে প্রবল যানজট সৃষ্টি হয়েছে । সবজি বোঝাই পণ‍্যবাহী ট্রাক আটকে রয়েছে । ট্রাক চালকদের হয়রানি হচ্ছে, বলার পরেও ও'রা জাতীয় সড়ক থেকে সরেনি । সেকারণেই পুলিশকে হটিয়ে দিতে হয়েছে তাঁদের । কোনও মারধর কিংবা বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেনি ।"

14 অগস্টের পর 4 সেপ্টেম্বর । আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে বুধবার ফের দ্বিতীয় দফায় 'রাত দখল' কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল রাজ‍্যজুড়ে । জেলাসদর বারাসতে সেই কর্মসূচির মূল জমায়েতের স্থান ছিল ডাকবাংলো মোড় । ফলে রাত হতেই নাগরিক সমাজের একের পর এক প্রতিবাদ মিছিল এসে জড়ো হতে থাকে সেখানে । মানুষের ভিড় আর সুবিচারের জোরালো গর্জনে একসময় মুখরিত হয়ে ওঠে ডাকবাংলো মোড় চত্বর ।

সূত্রের খবর, পুলিশের কাছে দেওয়া সময়সীমা মেনে নাগরিক সমাজের ওই কর্মসূচি চলে রাত প্রায় দেড়টা পর্যন্ত । কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর প্রতিবাদীদের ভিড় যখন ক্রমশ সরতে শুরু করেছে ডাকবাংলো মোড় থেকে, তখন সেখান থেকে প্রতিবাদীদের একটি দল আচমকাই চলে আসেন কলোনি মোড়ে । অভিযোগ, এরপরই 34 নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বসে পড়ে প্রতিবাদ দেখাতে থাকেন তাঁরা । প্রায় দু'ঘণ্টা পর বিশাল পুলিশবাহিনী এবং র‍্যাফকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে হাজির হন বারাসতের এসডিপিও অজিঙ্কা বিদ‍্যাগর ও থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় ।

প্রথমে এসডিপিও প্রতিবাদীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জাতীয় সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন । কিন্তু সেই কথা চলার মধ্যেই 'অ্যাকশন' শুরু হয়ে যায় পুলিশের । প্রতিবাদীদের কাউকে টেনে-হিঁচড়ে, আবার কাউকে ধাক্কা মারতে মারতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে । বাঁধা দিতে গিয়ে জুটেছে পুলিশের দুর্ব্যবহার ! মহিলা ও শিশু কাউকেই রেহাই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ । বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে এই পরিস্থিতি । পরে প্রতিবাদীদের হটিয়ে শুরু হয় জাতীয় সড়কে যানচলাচল । এ দিকে অকারণে জাতীয় সড়ক অবরোধ এবং মত্ত অবস্থায় পুলিশের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগে মোট 18 জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ এমনটাই জানিয়েছেন বারাসত জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্পর্শ নীলাঙ্গী ।

অন‍্যদিকে এ দিনই ধৃত পাঁচ মহিলা-সহ মোট 18 জনকে পেশ করা হয় বারাসত আদালতে । বৃহস্পতিবার সকলের দু'হাজার টাকার ব‍্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেছে বারাসত আদালত । জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হওয়ার পরেও ধৃতদের প্রত্যেকেরই জামিন মঞ্জুর হয়ে যাওয়ায় কার্যত এ দিন আদালতে মুখ পুড়েছে বারাসত থানার পুলিশের‌ । সূত্রের খবর, খুনের চেষ্টা, আগ্নেয়াস্ত্র মজুত-সহ পুলিশকে নিগ্রহ করার মতো একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল ধৃত ওই 18 প্রতিবাদীর বিরুদ্ধে । কিন্তু তারপরেও তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details