নববর্ষে গঙ্গা বক্ষে লোকসভা ভোটের প্রচারে লকেট চট্টোপাধ্যায় চন্দননগর, 14 এপ্রিল: চন্দননগরের রানিঘাট থেকে শুরু করে চুঁচুড়া, বাঁশবেড়িয়া হয়ে ত্রিবেণীর শিবপুর ঘাট পর্যন্ত গঙ্গাবক্ষে নৌকায় করে প্রচার চালালেন হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় ৷ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রবিবার সকালে এই অভিনব প্রচার কর্মসূচি রাখা হয় হুগলি বিজেপি নেতৃত্বের তরফে ৷ যে প্রচারে গঙ্গা ভাঙন ও বলাগড় বিধানসভা এলাকার নৌকা শিল্পের বেহাল অবস্থা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হল বিদায়ী সাংসদকে ৷
আজ চন্দননগরের রানিঘাট থেকে কুলোয় 'শুভ নববর্ষ' লিখে, মঙ্গল ঘট ও মঙ্গল চিহ্ন এঁকে ঢাকের বোলে প্রচার শুরু করেন লকেট ৷ নৌকায় উঠে সিদ্ধিদাতা গণেশের পুজো করলেন বিজেপি প্রার্থী ৷ এরপর হুগলি লোকসভার চারটি বিধানসভা চন্দননগর, চুঁচুড়া, সপ্তগ্রাম ও বলাগড় কেন্দ্র ধরে এগোতে থাকে নৌকা ৷ হুগলি নদীর পাড়ে থাকা লোকজনের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান বিদায়ী সাংসদ ৷ উল্লেখ্য, বাংলা নববর্ষের বাঙালিয়ানাকে উদযাপনের পাশাপাশি, একসঙ্গে চারটি বিধানসভার গঙ্গাপাড়ের অসংখ্য বসতির মানুষের কাছে পৌঁছে গেলেন লকেট ৷
তবে, যে গঙ্গাবক্ষে প্রচার সারলেন লকেট, বলাগড় বিধানসভা এলাকায় সেই গঙ্গা ভাঙন প্রতি বর্ষায় সেখানকার মানুষের মাথাব্যথার কারণ ৷ এনিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে, পুরো দায় তিনি চাপিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শাসকদলের উপর ৷ বিদায়ী সাংসদের অভিযোগ, দু’বছর আগে তিনি বলাগড়ে দু’টি পঞ্চায়েতের বৈঠকে গিয়েছিলেন গঙ্গা ভাঙনের সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে ৷ কিন্তু, তৃণমূল সেই বৈঠক হতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি ৷
পাশাপাশি, এই ইস্যুটিকে তিনি সরাসরি সংসদেও তুলে ধরেছিলেন বলেও জানান লকেট চট্টোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, "গত পাঁচ বছরে তৃণমূলের এই জনবিরোধী নীতির সঙ্গে লড়তে লড়তে আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে রাজনৈতিকভাবে ৷ এবার জিতলে সরাসরি কেন্দ্রের মাধ্যমে কিছু করা যায় কি না, তা আমি দেখবে ৷ সবরকমভাবে গঙ্গা ভাঙনের সমাধানের চেষ্টা করব ৷ দেখুন এই সব কাজই কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে করতে হয় ৷ সেই মতোই সুষ্ঠু একটা ব্যবস্থা রয়েছে ৷ কিন্তু, এরা মানুষের জন্য কাজ করবে না ৷ বরং কীভাবে টাকা লুঠ করা যায়, দিনরাত সেটা ভেবে চলেছে ৷"
এমনকী বলাগড়ের নৌকা শিল্পের অবস্থাও বেহাল ৷ আর আজ তিনি সেই নৌকায় চেপে প্রচার করছেন ৷ সাংসদ হিসেবে নৌকা শিল্পকে বাঁচাতে কেন কোনও ব্যবস্থা নেননি হুগলির সাংসদ ? এক্ষেত্রেও রাজ্যের দিকে নিশানা করতে ছাড়েননি লকেট ৷ তাঁর দাবি, "প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনায় নৌকা শিল্পীদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে ৷ কিন্তু, সেই প্রকল্পও তাঁদের কাছে রাজ্যের মাধ্যমেই পৌঁছে যাবে ৷ কিন্তু, সেটা এই রাজ্য সরকার করছে না ৷ আমি চেষ্টা করবো পরেরবার নৌকা শিল্পীরা যাতে বিশ্বকর্মা যোজনায় 3 লক্ষ টাকার ঋণ পেয়ে যান ৷" কিন্তু, 2023 সালের 17 সেপ্টেম্বর থেকে চালু হওয়া প্রকল্পের সুবিধা কেন নৌকা শিল্পীদের কাছে নিজের উদ্যোগে পৌঁছে দিলেন না সাংসদ ? যার জবাব কার্যত এড়িয়ে গেলেন লকেট চট্টোপাধ্যায় ৷
আরও পড়ুন:
- রাম-নামে ‘কুরুচিকর’ দেওয়াল লিখন, হিরাপুর থানা ঘেরাও হিন্দু জাগরণ মঞ্চের
- ভোটের পর ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিয়ে ভাবব, ডাবগ্রামে বার্তা মমতার
- 200 পার করে দেখান, তারপর সাঁতার কাটবেন, বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ মমতার