বোলপুর, 1 জানুয়ারি: তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না দলের উপ-প্রধানকে ৷ এমনকি, প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে । এই মর্মে বীরভূমের কংকালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মহম্মদ ওহিদউদ্দিন ওরফে মামন শেখ শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন ৷
অভিযোগের তির সংশ্লিষ্ট বোলপুর-শ্রীনিকেতন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হানিফ শেখ ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে । অনুব্রতর গড়ে এহেন অভিযোগে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে শাসক দলেরই অন্দরে ৷ বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগড়ে দেন মামন শেখ ৷ তার আগে মঙ্গলবার তিনি পুলিশের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেন ৷
সতীপীঠের অন্যতম কংকালীতলা মন্দির সংলগ্ন কংকালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের দফতর । 2013 সাল থেকে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান পদে আছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহম্মদ ওহিদউদ্দিন ওরফে মামন শেখ ।
অভিযোগ, গত 13 নভেম্বর নানুরের বিধায়ক বিধান মাঝির নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকজন গিয়ে কার্যত কংকালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েত দখল নেন ৷ অভিযোগ, তারপর থেকে দলেরই উপ-প্রধানকে পঞ্চায়েত দফতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ৷ সেই নিয়ে এদিন বোলপুরের লায়েকবাজারে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মামন শেখ ৷
তিনি বলেন, "আমাকে পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে ৷ 2013 সাল থেকে আমি এই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে চলেছি ৷ আমি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হানিফ শেখ ও কয়েকজনের নামে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এছাড়া, জেলা পুলিশ সুপার, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, এসডিও, বিডিও-কেও চিঠি দিয়েছি ৷ এখন দেখি প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয়৷ আমার দফতরের চেয়ারে দেখছি, বহিরাগতরা বসে আছে ৷ সেই ছবি দিয়ে অভিযোগ করেছি ।"
মামন শেখের সাংবাদিক বৈঠকের পর যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় বোলপুর-শ্রীনিকেতন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হানিফ শেখের সঙ্গে ৷ তবে তাঁর ফোন সুইচড অফ থাকায় এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ আর শাসক দলও এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে ৷ তবে দল যে অস্বস্তিতে তা অনেকেই মানছেন ৷
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি হল ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতাই এই ঘটনাকে অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের দ্বন্দ্ব হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন ৷ কারও কারও বক্তব্য, অনুব্রত মণ্ডল জেলে থাকাকালীন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি ফায়জুল হক ওরফে কাজল শেখের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি হয়েছিল মামন শেখের ৷
কিন্তু অনুব্রত জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর যখন কংকালীতলা মন্দিরে পুজো দিতে যান, সেই সময় থেকে মামন শেখের সঙ্গে কাজলের দূরত্ব বাড়ে ৷ তার জেরেই এই ঘটনা বলে অভিযোগ ৷ যদিও এই নিয়ে দুই নেতার শিবিরের কারও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷