কালিম্পং, 1 মে: চরম গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা গোটা বাংলার । একটুকরো ঠান্ডার আমেজ পেতে হারিয়ে যেতে পারেন এই পাহাড়ি গ্রামে ৷ প্রাণ জুড়োনোর পাশাপাশি মনও জুড়োবে ৷ বুদ্ধদেব গুহ লিখেছিলেন, "প্রকৃতিই আমার প্রথম প্রেম এবং সবচেয়ে বড় কথা, স্থায়ী প্রেম ।" কালিম্পংয়ের এই গ্রামে গেলে তাঁর এহেন লেখনীর কারণ বোঝা যাবে ৷
তীব্র গরমে আর ব্যস্ততম, কোলাহলপূর্ণ জীবন থেকে একটু বিরতি নিতে হলে যেতে হবে কালিম্পংয়ের চারখোল গ্রামে ।
চারখোল কথাটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে চারদিক দিয়ে খোলা । এখানে প্রকৃতি যেন হাতের মুঠোয় । শুধু হাতটা বাড়ানোর অপেক্ষা ৷ প্রকৃতি যেন গদগদ হয়ে উঠবে আপনার সেই হাতের স্পর্শে ।
কীভাবে যাবেন ?শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশন কিংবা বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে 72 কিলোমিটার দূরে সুন্দর মনোরম পাহাড়ি গ্রামের মধ্যে অনবদ্য সুন্দর প্রকৃতি । এনজেপি রেলস্টেশন কিংবা বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে কালিঝোড়া হয়ে সামথার ফরেস্ট পেরিয়ে পৌঁছনো যাবে চারখোল । রাস্তা বেশ সুন্দর । সময় লাগে মাত্র 2 ঘণ্টার মতো । কালিম্পং বাজার থেকে শেয়ার গাড়ির ব্যবস্থা আছে । এনজেপি থেকে রিজার্ভ গাড়ি করলে খরচ হবে 3 হাজার 500 টাকা (চার সিটারের গাড়ি) আর বড় চারচাকা গাড়ি (8 সিটার) 4 হাজার টাকার মতো পড়বে ।
থাকা ও খাওয়া : চারখোলে অনেক হোম স্টে রয়েছে । বেশিরভাগই ডিলাক্স রুম । থাকা-খাওয়া নিয়ে মাথাপিছু খরচ হবে 1200 টাকা ৷ একটা ঘরে সর্বনিম্ন তিনজনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে । থাকবে সকালে চা, ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ইভনিং স্ন্যাকস আর ডিনার । নিজেদের পছন্দমাফিক খাবার অর্ডারেরও ব্যবস্থা আছে ৷ প্রয়োজনমতো পনির, দেশি মুরগির মাংস, খাসির মাংসও পেয়ে যাবেন । তিন চারদিন সময় কাটানোর জন্য জাস্ট দারুণ । আর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বিষয়টা একদমই কষ্টকর নয়, বরং উপভোগ্য । খাবারের সঙ্গে রাতে থাকছে বারবিকিউ ও ক্যাম্প ফায়ারের ব্যবস্থাও ।
চারখোল গ্রামের বনের পথ ধরে হেঁটে যেতে পারেন
পারিপার্শ্বিক ঘোরার জায়গা :চারখোল গ্রামের কাছাকাছি রয়েছে অনেক ঘোরার জায়গা ৷ সামালবং রাইদারা, হনুমান পার্ক, সিংজী মনেস্ট্রি, চারখোল ভিউ পয়েন্ট । খরচ হবে আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা । তারপর পানবু ভিউ পয়েন্ট, গুরদুংদারা ভিউ পয়েন্ট, রামিটি ভিউ পয়েন্ট (মাকুম), লামহাদারা ভিউ পয়েন্ট ঘুরলে খরচ হবে তিনি থেকে চার হাজার টাকা । পাশাপাশি সানরাইজ পয়েন্ট, কাফের গাও (লোলেগাঁও), গিতাবলিংয়ের দুটো ভিউ পয়েন্ট, নোকদারা (টি গার্ডেন/লেক) দেখার খরচ হবে সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা । তারপর লাভা (ভিউ পয়েন্ট/মনেস্ট্রি), ঋষভ, কোলাখাম, ছাঙ্গে ফলস এগুলোর জন্য খরচ হবে সাড়ে চার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা ।
এছাড়া কালিম্পং জলসা বাংলো ভিউ পয়েন্ট, রামধুরা ভিউ পয়েন্ট, ডেলো পার্ক, বুদ্ধ পার্ক, হনুমান টক, সায়েন্স সিটি, মর্গ্যান হাউস, শাক্য মনেস্ট্রি, ক্যাকটাস গার্ডেন দেখতে গেলে খরচ হবে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা ৷ এছাড়া চারখোলে ট্রেকের পথে অজস্র ভিউ পয়েন্ট এবং বার্ডস ওয়াচিং পয়েন্ট ফটোগ্রাফারদের জন্য আদর্শ । এই অফবিট পরিবেশে বিভিন্ন রঙের প্রজাপতিও নজর কাড়বে ।
আরও পড়ুন :
- মেঘেদের হাতে নিয়ে খেলা করার ইচ্ছে ? আপনার অপেক্ষায় মাহালদিরাম
- মন উড়ুউ়ড়ু ? আপনার ঠিকানা হোক রাজ্যের শেষ সীমানা সাঙ্গসেরে গ্রাম
- ভিড় এড়িয়ে চলে আসুন প্রকৃতির কোলে, বড়দিঘির চা বাগানই হোক আপনার 'ডিয়ার ডেস্টিনেশন'