কলকাতা, 20 অক্টোবর: বজ্র আঁটুনি ভেঙেই উৎসবের কার্নিভালে দ্রোহের শিখা জ্বালিয়ে দেয় কলকাতা কর্পোরেশনের চিকিৎসক তপব্রত রায়। প্রতিবাদী টি শার্ট আর বুকে ব্যাজ থাকায় তাঁকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ । সেই ঘটনায় তিন দফা দাবি জানিয়ে পৌর চিকিৎসকরা ই-মেল করেন কর্তৃপক্ষের কাছে। পৌর কমিশনার থেকে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, কেউ সেই মেলের জবাব দেননি। শনিবার সেই তিন দফা দাবি সামনে রেখেই চিকিৎসকরা বৈঠক করলেন কলকাতা কর্পোরেশনের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায় চৌধুরী সঙ্গে। দীর্ঘ ঘণ্টা দুয়েক বৈঠক অবশ্য নিষ্ফলাই হল ৷ এমনটাই জানালেন চিকিৎসক দ্বৈপায়ন মজুমদার ও চিকিৎসক মানস সোম।
তবে পুলিশি হেনস্থার শিকার হওয়া চিকিৎসক তপব্রত রায়ের গলায় আক্ষেপের সুরে শোনা গেল। তিনি জানান, ঘটনার চার দিন কেটে গেলেও বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ তার সঙ্গে একটি বারের জন্যও যোগাযোগ করেননি।
গ্রেফতারির ঘটনার পর পৌর চিকিৎসকরা তিনটি দাবি জানিয়ে পৌর কমিশনার ধবল জৈন ও চিফ মিউনিসিপ্যাল হেলথ অফিসার সুব্রত রায় চৌধুরীকে মেল করেছিলেন। সেই দাবিগুলি হল, কলকাতা কর্পোরেশনের সামাজিক মাধ্যমে পেজে গোটা ঘটনা লিখে নিন্দা করতে হবে। দ্বিতীয়, পুলিশকে দুঃখ প্রকাশ করতে বলতে হবে। তৃতীয়, পৌর চিকিৎসকদের আইনি সহায়তা দিতে হবে। তবে মেলের কোনও তোয়াক্কা না করাতে শনিবার তারা সুব্রত রায় চৌধুরী সঙ্গে দেখা করে এই দাবিগুলি নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন।
আলোচনা শেষে বেরিয়ে এসে চিকিৎসকরা দাবি করেন, তাঁদের আগের যা দাবি ছিল সেগুলি তারা বলেছেন। যেহেতু বিচারাধীন বিষয় তাই এই সম্পর্কে তারা কিছু বলতে চান না। আইনি সহায়তা পাওয়া যাবে কি না বা বাকি দুটি দাবি মেনে নেওয়া হবে কিনা, সেই সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট জবাব মেলেনি। পাশাপশি, তপব্রতকে শনিবার পর্যন্ত কলকাতা কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পরিষদ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
এই ঘটনায় অবশ্য বিরোধীরা অতীন ঘোষের অবস্থান নিয়ে তীব্র নিন্দা করেছেন। তাদের একাংশের কথায়, শাসককে রাজধর্ম পালন করতে হয়। কোনও ইঞ্জিনিয়ার বেআইনি বাড়ি নির্মাণ ঠেকাতে বা ভাঙ্গতে গিয়ে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে মেয়র তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কর্তৃপক্ষের তরফে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আর এই ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিভাগের এক চিকিৎসককে কর্মরত অবস্থায় পুলিশ সন্দেহের বসে গ্রেফতার করল ৷ তার দিন অতিক্রান্ত হলেও মেয়র পরিষদ একটি বার ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন না ? এটা দুর্ভাগ্যজনক !