কলকাতা, 31 অক্টোবর:ছট আচার পালনে দূষিত হয় রবীন্দ্র সরোবরের সার্বিক পরিবেশ । ফলে বেশ কয়েক বছর ধরে ছট পুজোর আগে থেকে পুজো শেষের পর পর্যন্ত সাধারণের প্রবেশ সেখানে নিষেধ । বিকল্প হিসেবে যে সমস্ত জলাশয়গুলিকে ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল, তার অন্যতম ছিল বেঙ্গল ল্যাম্প কারখানার জমির উপর একটি জলাশয় । সেটাও এবার ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । ফলে ছট পুজোর প্রস্তুতি বৈঠকে সেই নিয়েই বিকল্প সিদ্ধান্ত গৃহীত হল । পাশাপশি নিমতলা ঘাটের বিপজ্জনক অংশ নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
আসন্ন ছট উৎসব নিয়ে বুধবার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক হয় কলকাতা পুরনিগমে । উপস্থিত ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পুলিশ কর্তারা, বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌ সেনা-সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি এজেন্সি । বৈঠক সূত্রে খবর, ছট পুজোর ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয় বিস্তারিত ভাবে । দইঘাট, তক্তাঘাট-সহ একাধিক জায়গায় হাজার হাজার পুণ্যার্থীর ভিড় জমে । কীভাবে কাজ করবে প্রশাসন, তার রূপরেখা ঠিক করা হয় পুরনিগমের বৈঠকে। গঙ্গার ঘাট ছাড়াও বিভিন্ন ঝিল ও জলাশয়ে ঘাট-সহ উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে ।
এবছর ছট পুজো উপলক্ষে কেএমডিএ 40টা ঘাট তৈরি থাকবে । কলকাতা পুরনিগম অস্থায়ীভাবে 18টি ঘাট তৈরি করবে । স্থায়ীভাবে থাকবে 22টি ঘাট । পুরনিগম ও কেএমডিএ-র 40টা করে মোট আশিটি ঘাট তৈরি থাকবে ছট পুজোর জন্য । কলকাতা পুরনিগমের তরফে কৃত্রিম জলাধার করা হচ্ছে 6টি ।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বৈঠক শেষে বলেন, "দই ঘাট ও তক্তা ঘাট নিয়ে আলোচনা হয়েছে । তক্তাঘাটে নৌবাহিনীর অনুমতি প্রয়োজন । সেটা নেওয়া হল, যাতে কর্পোরেশন গিয়ে কাজ করতে পারে । দই ঘাটেও অন্যান্য বছরের মতোই ব্যবস্থাপনা করবে কলকাতা পুরনিগম । নিমতলা ঘাটের একটা অংশ ভেঙে পড়েছে । বন্দর কর্তৃপক্ষ সেই জায়গাটাকে বিপজ্জনক হিসেবে ঘিরে রাখবে, যাতে সাধারণ মানুষ সেখানে না যেতে পারেন । বেঙ্গল ল্যাম্প তাদের জলাশয় বন্ধ করে দিয়েছে ৷ বিকল্প যে ঘাটগুলো ব্যবহার করা হবে বলে ঠিক হয়েছে, সেটা নিয়ে স্থানীয় এলাকায় কলকাতা পুলিশ লাগাতার প্রচার করবে ৷"
বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় জল অনেকটা উপরে উঠেছিল ৷ তাই অনেক ঘাটেই শ্যাওলা বা নোংরা হয়ে আছে ৷ সেগুলো অবিলম্বে পরিষ্কার করে দেওয়া হবে । অন্যান্য বছরের মতোই চেঞ্জিং রুম এবং নতুন করে ঘাটে যাওয়ার রাস্তা মসৃণ করা হবে । পর্যাপ্ত আলো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র ।
রবীন্দ্র সরোবর প্রসঙ্গে তিনি জানান, আগেই এনজিটির নির্দেশমতো ছট পুজোর সময় সরোবর বন্ধ রাখা হয়েছে । বিকল্প হিসেবে অনেকগুলো ঘাট তৈরি করা হয়েছিল সেগুলো স্বাভাবিকভাবেই থাকছে । বেঙ্গল ল্যাম্পেও গত বছর থেকে সমস্যা হচ্ছে । তার বিকল্প কোনও ঘাট রয়েছে কি না তা পুলিশকে দেখতে বলা হয়েছে । যাতে সাধারণ মানুষকে ছট পুজো করতে গিয়ে ফিরে না আসতে হয় ।
উল্লেখ্য, সাত তারিখ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেল বেলা থেকে আট তারিখ, শুক্রবার সকালে যতক্ষণ না পর্যন্ত পুজোর কাজ শেষ হয়, ততক্ষণ চক্ররেল পরিষেবা বন্ধ থাকবে । কলকাতা পুরনিগম ও পুলিশ ব্যারিকেড তুলে নিলে রেল চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে ।