তাঁকে ছাড়া চার বছর ৷ স্বাভাবিকভাবেই আড়ম্বর হারিয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির দুর্গাপুজো ৷ এই নিয়ে তাঁর ছেলের সঙ্গে কথা বলল ইটিভি ভারত ৷
মিরাটি (বীরভূম), 9 অক্টোবর: 129 বছরে পা দিল ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের গ্রামের বাড়ির দুর্গাপুজো । সারাবছর যেখানেই থাকুক না কেন, পুজোর চারটে দিন গ্রামের বাড়িতে আসতেন প্রণববাবু ৷ দেশের রাষ্ট্রপতি হয়ে নিজেই পুজোর তদারকি করেছেন ৷ তাঁকে ঘিরে বিরাট উন্মাদনা থাকত ৷ তবে 2020 সালে তাঁর প্রয়াণের পর স্বাভাবিকভাবেই জৌলুস হারিয়েছে মুখোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজো ৷ যদিও, তাঁর ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় এই পুজো প্রথা মেনে করে আসছেন ৷ তিনি বলেন, 'পিতৃহীন মাতৃপুজো ।'
বীরভূম জেলার কীর্ণাহারের মিরাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায় । এই গ্রামেই বড় হয়ে ওঠা । প্রত্যন্ত এই গ্রামের ছেলে এক সময় ভারতের বিদেশমন্ত্রক, প্রতিরক্ষামন্ত্রক, অর্থমন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন ৷ পরবর্তীতে ভারতের 13তম রাষ্ট্রপতি হন 'ভারতরত্ন' প্রণব মুখোপাধ্যায় ।
বীরভূমে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির দুর্গাপুজোর বর্তমান অবস্থা (ইটিভি ভারত)
1896 সালে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দাদু তারকনাথ মুখোপাধ্যায় কীর্ণাহারের মিরাটি গ্রামে মুখার্জি ভবনের অভ্যন্তরে দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন ৷ সেই থেকে চলে আসছে পুজো । পুজোর চারটে দিন গ্রামের বাড়িতে ছুটে আসতেন প্রণব মুখোপাধ্যায় । ঢাকের সঙ্গে হেলিকপ্টারের শব্দে নজর ছিল গ্রামবাসীদের ৷ পুলিশ, আমলা, ভারতের ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় ছিল গ্রামজুড়ে ৷ এই সব কিছুর মাঝে গ্রামের মানুষের সঙ্গেই পুজো কাটাতেন প্রণব মুখোপাধ্যায় । এমনকি, রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে নিজেই চণ্ডীপাঠ করতেন ৷
2020 সালের 31 অগস্ট প্রয়াত হন ভারতের 13তম রাষ্ট্রপতি । আগের মত তাঁর বাড়ির দুর্গাপুজোয় গ্রামবাসীদের ভিড় নেই ৷ কোনওরকমে হচ্ছে পুজো ৷ এই বিষয়ে প্রণবপুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, "বাবা যখন ছিলেন তখন নিরাপত্তা, প্রোটোকল, পুলিশ, আমলা এদের ভিড় থাকত ৷ এখন আর সেসব নেই ৷ তবে প্রথা মেনে পুজো হচ্ছে ৷ আমাদের বংশের নিয়ম অনুযায়ী পুজোয় পরিবারের একজনে উপস্থিত থাকতেই হবে ৷ সেই মতো আমি ও আমার পরিবার পুজোয় গ্রামের বাড়িতে আসি।"
মুখোপাধ্য়ায় বাড়ির এক রাঁধুনি অমিত্র কোনাইয়ের কথায়, "আমি 30 বছর পুজোর সময় এই বাড়িতে রান্না করে আসছি ৷ যখন প্রণববাবু আসতেন তখন বিশাল ব্যাপার ছিল । লোকে লোকারণ্য, পুলিশ, অফিসারে ভর্তি থাকত ৷ সেই সময় একটা অন্যরকম ব্যাপার ছিল ৷ প্রচুর রান্না হত ৷ এখন পুজো হচ্ছে ৷ তবে আগের মতো নয় ।"