ETV Bharat / state

বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে এক সুর মমতা-শুভেন্দুর - Mamata Banerjee - MAMATA BANERJEE

Mamata-Suvendu on Bengal Partition: বাংলা ভাগ নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হোক। প্রয়োজনে ভোটাভুটি হোক। বিধানসভায় প্রস্তাব এনে ভোটাভুটি চাইলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন শুভেন্দুও ৷

Mamata-Suvendu
বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে এক সুরে (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 29, 2024, 7:06 PM IST

Updated : Jul 29, 2024, 7:41 PM IST

কলকাতা, 29 জুলাই: এক সময় কাছাকাছি ছিলেন ৷ এরপর হুগলি নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল ৷ অতীতের 'অনুগত সৈনিক' এখন মূল প্রতিপক্ষ ৷ ফের তাঁদের মিলিয়ে দিল বঙ্গভঙ্গ ইস্যু ৷ গত কয়েকদিন ধরেই 'বাংলা ভাগ' সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে দলের সাংসদ-বিধায়কদের মুখে ঘুরে ফিরে আসছে বাংলা ভাগ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির দাবি ৷ কিন্তু বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতায় সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই সুর মেলাতে দেখা গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ৷

বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে এক সুরে সরব মমতা-শুভেন্দু (ইটিভি ভারত)

বঙ্গভঙ্গ ইস্যুতে শুভেন্দু-মমতা

লোকসভায় বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের মন্তব্যের পরই আলাদা রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছেন এ রাজ্যের বিজেপি সাংসদ, বিধায়করা ৷ সোমবার এ নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় প্রথমবার মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি চান বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব এনে আলোচনা হোক। আর মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই কার্যত সুর মেলালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও ৷

মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলছেন, "বলার জন্য বলতে হচ্ছে। আর হাতে ক্ষমতা আছে বলেই ছুড়ি চালাবেন ! এটা হতে পারে না। আমি মনে করি গণতন্ত্রে এখনও শ্রেষ্ঠ আদালত জনগণই। ভাগাভাগির প্রশ্ন কোনওভাবেই মানা হবে না।" সেখানেই শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "বিজেপির পরিস্কার নীতি, আমরা বঙ্গভঙ্গ চাই না ৷ দলগতভাবে এটা বলতে পারি ৷ তবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের ঘাড় ধরে বের করতে হবে ৷"

এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, "উত্তরবঙ্গ অবহেলিত বলে যাঁরা বলছেন, তারা সঠিক কথা বলছেন না। আমি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নের জন্য আলাদা দফতর 2012 সালে তৈরি করেছিলাম। তাতে 9 হাজার কোটি টাকার বেশি কাজ আমরা করেছি। সেলারি পেনশন ছাড়াও বিভিন্ন দফতরের মাধ্যমে এক লক্ষ 63 হাজার কোটি টাকার বেশি কাজ আমরা করেছি।"

এরপরই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, "উত্তরবঙ্গে আগে কী ছিল ! উত্তরবঙ্গের নতুন সচিবালয় আমরাই তৈরি করে দিয়েছি। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারকে নতুন জেলা তৈরি করা হয়েছে। কালিম্পং নতুন জেলা হয়েছে। অনেকগুলো নতুন সাব ডিভিশন হয়েছে। ধুপগুড়ি-সহ কোচবিহারকে হেরিটেজ টাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে। বলতে থাকলে শেষ হবে না।"

এরপরই বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তীব্র সোচ্চার হয়েছেন ৷ মমতা বলেন, "উত্তরবঙ্গের সব উন্নয়নের কাজ আমাদের সরকার করেছে। ভোটের সময় বিজেপির দরকার বাংলা ভাগ করে বলে গোর্খাল্যান্ডে ভোট দিন। উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার জন্য ভোট দিন। কখনও আবার বলেন, রাজবংশীকে আলাদা করে দিন। কামতাপুরী আদিবাসীদের আলাদা করে দিন। উত্তরবঙ্গের মানুষদের জন্য আপনারা কী করেছেন ?"

এর পালটা অবশ্য সুর চড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ এদিন বিরোধী দলনেতা বলেন, "72টা জায়গায় বিএসএফকে জমি দেওয়া হয়নি সেটা দিতে হবে ৷ উত্তরবঙ্গে এইমস-সহ একাধিক উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে ৷ উত্তরবঙ্গের উত্তরকন্য়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কোনও সচিব সেখানে বসেন না ৷ উত্তরবঙ্গের মানুষ কলকাতায় আসবে না ৷ হাইকোর্ট, সচিবালয়ের সুবিধা তাদের দিতে হবে ৷ উত্তরবঙ্গের মানুষের অভিমান বঞ্চনা-সহ যে সব দাবি তাদের আছে বিজেপি সরকারে এসে সেগুলি আগে করবে ৷"

বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে রেজোলিউশন আনা হোক। বাংলা ভাগ নিয়ে আলোচনা করছেন যে মন্ত্রীরা, যে সাংসদরা তাদের কিছু বলার থাকলে তারা বাংলার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলুন। ভোটাভুটি হোক। কার ভোট বেশি পরে কার ভোট কম গণতান্ত্রিকভাবে বিচার হয়ে যাক। বাংলার বিধানসভাকে বাদ দিয়ে যারা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তারা নির্বোধের দল। তাদের একটি কথাও আমরা মানি না।" মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বঙ্গভঙ্গের চেষ্টা হলে, প্রয়োজন পড়লে রবীন্দ্রনাথের কায়দায় আটকানো হবে। ভারতবর্ষের বৈশিষ্ট্য বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। নানা ভাষা নানা মত। নানা পরিধান। তাই তাদের নিয়েই আমরা এর মোকাবিলা করব।

কলকাতা, 29 জুলাই: এক সময় কাছাকাছি ছিলেন ৷ এরপর হুগলি নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল ৷ অতীতের 'অনুগত সৈনিক' এখন মূল প্রতিপক্ষ ৷ ফের তাঁদের মিলিয়ে দিল বঙ্গভঙ্গ ইস্যু ৷ গত কয়েকদিন ধরেই 'বাংলা ভাগ' সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে দলের সাংসদ-বিধায়কদের মুখে ঘুরে ফিরে আসছে বাংলা ভাগ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির দাবি ৷ কিন্তু বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতায় সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই সুর মেলাতে দেখা গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ৷

বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে এক সুরে সরব মমতা-শুভেন্দু (ইটিভি ভারত)

বঙ্গভঙ্গ ইস্যুতে শুভেন্দু-মমতা

লোকসভায় বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের মন্তব্যের পরই আলাদা রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছেন এ রাজ্যের বিজেপি সাংসদ, বিধায়করা ৷ সোমবার এ নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় প্রথমবার মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি চান বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব এনে আলোচনা হোক। আর মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই কার্যত সুর মেলালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও ৷

মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলছেন, "বলার জন্য বলতে হচ্ছে। আর হাতে ক্ষমতা আছে বলেই ছুড়ি চালাবেন ! এটা হতে পারে না। আমি মনে করি গণতন্ত্রে এখনও শ্রেষ্ঠ আদালত জনগণই। ভাগাভাগির প্রশ্ন কোনওভাবেই মানা হবে না।" সেখানেই শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "বিজেপির পরিস্কার নীতি, আমরা বঙ্গভঙ্গ চাই না ৷ দলগতভাবে এটা বলতে পারি ৷ তবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের ঘাড় ধরে বের করতে হবে ৷"

এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, "উত্তরবঙ্গ অবহেলিত বলে যাঁরা বলছেন, তারা সঠিক কথা বলছেন না। আমি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নের জন্য আলাদা দফতর 2012 সালে তৈরি করেছিলাম। তাতে 9 হাজার কোটি টাকার বেশি কাজ আমরা করেছি। সেলারি পেনশন ছাড়াও বিভিন্ন দফতরের মাধ্যমে এক লক্ষ 63 হাজার কোটি টাকার বেশি কাজ আমরা করেছি।"

এরপরই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, "উত্তরবঙ্গে আগে কী ছিল ! উত্তরবঙ্গের নতুন সচিবালয় আমরাই তৈরি করে দিয়েছি। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারকে নতুন জেলা তৈরি করা হয়েছে। কালিম্পং নতুন জেলা হয়েছে। অনেকগুলো নতুন সাব ডিভিশন হয়েছে। ধুপগুড়ি-সহ কোচবিহারকে হেরিটেজ টাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে। বলতে থাকলে শেষ হবে না।"

এরপরই বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তীব্র সোচ্চার হয়েছেন ৷ মমতা বলেন, "উত্তরবঙ্গের সব উন্নয়নের কাজ আমাদের সরকার করেছে। ভোটের সময় বিজেপির দরকার বাংলা ভাগ করে বলে গোর্খাল্যান্ডে ভোট দিন। উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার জন্য ভোট দিন। কখনও আবার বলেন, রাজবংশীকে আলাদা করে দিন। কামতাপুরী আদিবাসীদের আলাদা করে দিন। উত্তরবঙ্গের মানুষদের জন্য আপনারা কী করেছেন ?"

এর পালটা অবশ্য সুর চড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ এদিন বিরোধী দলনেতা বলেন, "72টা জায়গায় বিএসএফকে জমি দেওয়া হয়নি সেটা দিতে হবে ৷ উত্তরবঙ্গে এইমস-সহ একাধিক উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে ৷ উত্তরবঙ্গের উত্তরকন্য়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কোনও সচিব সেখানে বসেন না ৷ উত্তরবঙ্গের মানুষ কলকাতায় আসবে না ৷ হাইকোর্ট, সচিবালয়ের সুবিধা তাদের দিতে হবে ৷ উত্তরবঙ্গের মানুষের অভিমান বঞ্চনা-সহ যে সব দাবি তাদের আছে বিজেপি সরকারে এসে সেগুলি আগে করবে ৷"

বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে রেজোলিউশন আনা হোক। বাংলা ভাগ নিয়ে আলোচনা করছেন যে মন্ত্রীরা, যে সাংসদরা তাদের কিছু বলার থাকলে তারা বাংলার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলুন। ভোটাভুটি হোক। কার ভোট বেশি পরে কার ভোট কম গণতান্ত্রিকভাবে বিচার হয়ে যাক। বাংলার বিধানসভাকে বাদ দিয়ে যারা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তারা নির্বোধের দল। তাদের একটি কথাও আমরা মানি না।" মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বঙ্গভঙ্গের চেষ্টা হলে, প্রয়োজন পড়লে রবীন্দ্রনাথের কায়দায় আটকানো হবে। ভারতবর্ষের বৈশিষ্ট্য বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। নানা ভাষা নানা মত। নানা পরিধান। তাই তাদের নিয়েই আমরা এর মোকাবিলা করব।

Last Updated : Jul 29, 2024, 7:41 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.