কলকাতা, 13 অগস্ট: আরজি কর-কাণ্ডে পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ এবং একাধিক সাক্ষ্য সংগ্রহ করে সিটের তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, ঘটনার দিন আনুমানিক রাত তিনটে নাগাদ ওই চিকিৎসকের ঘরে প্রথমে অন্য দু'জন ঢুকেছিল । যারা সেমিনার হলে ওই পড়ুয়া চিকিৎসককে দেখে এসে সঞ্জয়কে খবর দিলেছিল ৷ তাদের খোঁজ করছে তদন্তকারী আধিকারিকরা ৷
সিটের সদস্যদের অনুমান, তারা হতে পারেন হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী ৷ কিংবা অন্যান্য চিকিৎসক ৷ পুলিশের দাাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ওই তরুণী চিকিৎসক খুনও হয়েছেন আনুমানিক রাত তিনটে থেকে ভোর চারটের মধ্যে ৷ অর্থাৎ পুলিশের অনুমান, সঞ্জয় আগে থেকেই বুঝে গিয়েছিল যে ওই তরুণী চিকিৎসক সেই সময় হাসপাতালের সেমিনার হলের চারতলায় একা রয়েছেন ৷ পাশাপাশি তদন্তকারীদের এও অনুমান, ওই পড়ুয়া চিকিৎসককে খুন ও শারীরিক অত্যাচারের আগে নিশ্চয় সঞ্জয় ওই কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করেছিল ৷ পরে সেমিনার হলের ভিতরে ঢুকে এক সঙ্গে এই জঘন্য অপরাধ ঘটায় ৷
পুলিশের অভিযোগ ওই তরুণী চিকিৎসক সেই সময় ভোর রাতে যে একা ছিল, এই তথ্য কারা এবং কেন সঞ্জয়কে দিয়েছিল? তাদের কী উদ্দেশ্য ছিল? সিটের তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ভোরে যে দু'জন প্রথমে ওই সেমিনার হলে ঢুকেছিল, তারা নাকি ওই তরুণী চিকিৎসককে দেখে ভেবেছিল, তিনি ঘুমাচ্ছেন ৷ সেই বিষয়টিও ভীষণভাবে ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের ৷ তাঁদের দাবি, এটি সত্যি হলে বুঝতে হবে সেই সময়ও বেচেছিলেন ওই চিকিৎসক পড়ুয়া ।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, পুরো বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ ফলে আমরা বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখছি ৷ ইতিমধ্যেই আরজি কর হাসপাতালের মোট 30টি সিসিটিভি ক্যামেরা বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত চালাচ্ছে গোয়েন্দা বিভাগ ৷ এছাড়াও ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে যে সিট গটন করা হয়েছে, তার সদস্য সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে ৷ প্রথমে সিটে আট জন সদস্য ছিলেন ৷ এবার তা বাড়িয়ে করা হল 28 করা হয়েছে । তিনটি শিফটে সিটের সদস্যরা কাজ করবেন বলেও লালবাজার সুত্রের খবর ৷ এর মধ্যে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের একাধিক উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা কর্তারা ৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরেই মঙ্গলবারই লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছে আরজি কর হাসপাতালের এক পদস্থ চিকিৎসককে ৷ অভিযোগ, এই পদস্থ চিকিৎসকই হাসপাতালে তরফ থেকে প্রথম ওই নির্যাতিতার বাড়িতে ফোন করে পুরো বিষয়টি জানিয়েছিলেন এবং আত্মহত্যার তত্ত্ব খাড়া করার চেষ্টা করেছিলেন ৷ কোথা থেকে ওই চিকিৎসক আত্মহত্যার তত্ত্বটি সামনে আনেন, তা যাচাই করতেই লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছে তাঁকে ৷ এছাড়াও আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধানকেও আজ ডাকা হয়েছে লালবাজারে ৷ সোমবারই মৃতা চিকিৎসক পড়ুয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তারপরই আরজি কর-কাণ্ডে তদন্তের জন্য পুলিশকে রবিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন মুখ্যমন্ত্রী ৷