জলপাইগুড়ি, 25 নভেম্বর: উত্তবঙ্গের তিন জেলা জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের তিরিশেরও বেশি সংস্থায় অভিযান চালাল আঞ্চলিক প্রফিডেন্ড ফান্ড বিভাগ ৷ জানা গিয়েছে, ওই সংস্থাগুলির সব মিলিয়ে প্রায় 41 কোটি টাকা পিএফের বকেয়া রয়েছে ৷ জলপাইগুড়ির পিএফ বিভাগের নয়া কমিশনার পবন কুমার বনসাল দায়িত্ব গ্রহণ করেই এই অভিযান চালালেন ৷
জানা গিয়েছে, এই তিন জেলার বকেয়া পিএফের অধিকাংশটাই চা-বাগান শ্রমিকদের ৷ বকেয়া 41 কোটি টাকা পিএফের 60 শতাংশ চা-বাগানে কাজ করা শ্রমিক এবং অন্যান্য কর্মচারীদের ৷ একইসঙ্গে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের অফিসেও হানা দেন পিএফ বিভাগের আধিকারিকরা ৷ সেখানে হানা দিয়ে প্রথমে সরকারি এই দফতরের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয় ৷ তারপর সংস্থার বকেয়া পিএফ 4 কোটি 50 লক্ষ 4 হাজার 45 টাকা আদায় করা হয় ৷
এ নিয়ে জলপাইগুড়ির পিএফ কমিশনার পবন কুমার বনসাল জানান, একাধিকবার উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমকে পিএফের বকেয়া মেটাতে বলা হয়েছিল ৷ কিন্তু, তাতে কোনও ফল না-হওয়ায়, এবার অভিযান চালিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করে বকেয়া আদায় করা হয়েছে ৷ এর পাশাপাশি, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের তিরিশেরও বেশি সংস্থায় অভিযান চালানো হয়েছে ৷ প্রতিটি সংস্থার বিরুদ্ধে আলাদা করে এফআইআর দায়ের করেছেন পিএফ বিভাগের আধিকারিকরা ৷
জানা গিয়েছে, পিএফ বিভাগের দুই শীর্ষ আধিকারিক এলজে মারান্ডি এবং দিলীপ দেব চন্দ্র শর্মার নেতৃত্বে এই অভিযানগুলি চালানো হয় ৷ সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কমিশনার পবন কুমার বনসাল ৷ তিনি বলেন, "জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলায় মোট বকেয়া পিএফের পরিমাণ প্রায় 41 কোটি টাকা ৷ এর মধ্যে 60 শতাংশ চা-বাগানের শ্রমিকদের পিএফ বকেয়া রয়েছে ৷ আমরা লক্ষ করছি চা-বাগানের মালিকরা শ্রমিকদের বেতন থেকে পিএফের টাকা কেটে নিলেও, তা জমা করছেন না ৷ তাই আমরা পিএফের বকেয়া টাকা তোলার জন্য বিশেষ অভিযান চালাচ্ছি ৷"
তিনি আরও জানিয়েছেন, "আমরা 2018-2024 সাল পর্যন্ত 27টি চা-বাগানের মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি আমরা ৷ আগামীতে আরও কড়া পদক্ষেপ নেব ৷ কোনওভাবেই শ্রমিকদের প্রাপ্য বঞ্চিত করে, কেউ পার পাবে না ৷ পিএফের টাকা ফাঁকি দিলে 6 মাস পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে মালিকের ৷"