কলকাতা, 6 সেপ্টেম্বর: আরজিকর-কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে 20 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফের জেল হেফাজতে পাঠাল আদালত ৷ তার আগে আজ তাঁকে ভার্চুয়ালি শিয়ালদা আদালতে পেশ করার পর সিবিআইয়ের আইনজীবীর উপর নজিরবিহীনভাবে চটলেন বিচারক । শুনানি শুরু হওয়ার পরেও সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে হাজির না-হওয়ায় বিচারকের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ৷
এদিন বিকেল চারটে আট মিনিটে সঞ্জয় রায়কে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে ভার্চুয়ালি শিয়ালদা আদালতে পেশ করে সিবিআই । সেই সময় সঞ্জয় রায়ের আইনজীবীর তরফ থেকে আদালতে বিচারকের সামনে বলা হয়, এই ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি হয়নি । ফলে তাঁরা জামিন চাইছেন ।
এরপর বিচারকের তরফে প্রশ্ন করা হয় সিবিআইয়ের আইনজীবী কোথায় ? ভরা আদালতে কেউ কোনও উত্তর বা-দেওয়ায় ফের বিচারকের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, "সিবিআইয়ের আইনজীবী নেই ? এই কোর্টরুমে এমন কেউ আছেন যিনি সিবিআইয়ের আধিকারিক কিংবা এই ঘটনার তদন্তকারী আধিকারিক ?" বিচারকের প্রশ্ন শুনে এক মহিলা বিচারককে বলেন, তিনি আধিকারিক, তবে তিনি এই ঘটনায় তদন্তকারী আধিকারিককে সাহায্য করছেন । অর্থাৎ তিনি সহকারী তদন্তকারী আধিকারিক । এরপরেই বিচারকের চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় সিবিআইকে ।
ওই মহিলা সিবিআই আধিকারিককে বিচারক প্রশ্ন করেন, "কোথায় আপনার আইনজীবী ? বিকেল সাড়ে চারটা বেজে গিয়েছে ৷ এখনও কেন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হতে পারলেন না ?" সেই সময় ওই মহিলা আধিকারিক বারবার বাইরে গিয়ে তাঁদের আইনজীবীকে ফোন করতে থাকেন । এর প্রায় আট মিনিট পর আদালতে ঢুকে বিচারকের ওই সহকারী তদন্তকারী মহিলা আধিকারিক বলেন, তিনি রাস্তায় আছেন । এখনই আসবেন । এরপরই বিচারকের চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় সিবিআইকে । তিনি বলেন, 10 মিনিটের মধ্যে পৌঁছতে হবে সিবিআইয়ের আইনজীবীকে ৷ তবে তিনি আদালতে এসে পৌঁছন তার 40 মিনিট পর ৷
আরজিকর-কাণ্ডে তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে জঘন্য অপরাধের ঘটনার বিচার চেয়ে গোটা দেশ তোলপাড় ৷ ঠিক সেই সময় এই ঘটনায় একমাত্র ধৃত কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে আজ আদালতে ভার্চুয়ালি পেশ করা হলেও, নজিরবিহীনভাবে আদালতে দেরিতে আসায় সিবিআইয়ের আইনজীবীকে বিচারকের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল ।
উল্লেখ্য, সঞ্জয় রায়কে নিরাপত্তাজনিত কারণে আজ সশরীরে আদালতে পেশ করতে চায়নি সিবিআই ৷ সেই কারণে আদালতের অনুমতি নিয়ে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকেই তাঁর ভার্চুয়াল শুনানির ব্যবস্থার করা হয় ৷ সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আদালত সঞ্জয়কে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছিল ৷ তার পর থেকে তাঁর ঠিকানা প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার ৷