নয়াদিল্লি, 14 অক্টোবর: খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত কানাডায় ভারতের হাইকমিশনার। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এমন অভিযোগ করার পর পদক্ষেপ দিল্লির।
ট্রু়ডোর অভিযোগ খারিজ করার পাশাপাশি ভারতে কর্মরত কানাডার এক শীর্ষ আধিকারিককে ডেকে পাঠানোও হল। পাশাপাশি ঠিক হয়েছে ভারতীয় হাইকমিশনার-সহ যে সমস্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে তাঁদের সেদেশ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
বিদেশমন্ত্রকের দাবি, কানাডার বর্তমান সরকার ভারতীয় কূটনীতিককে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পাররে এমন বিশ্বাস তাদের নেই । তাছাড়া কানাডা সরকারের ওই আধিকারিককে ভারতের তরফে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়, এই ধরনের মন্তব্য মেনে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ভারত সরকার আগামিদিনে এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা দেখছে।
We have no faith in current Canadian government's commitment to ensure security of Indian diplomats in Canada: MEA
— Press Trust of India (@PTI_News) October 14, 2024
এর আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন নিজ্জরের হত্যার ঘটনায় জড়িত রয়েছেন ভারতীয় হাইকমিশনার। অভিযোগ নস্যাৎ করে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, কানাডার সরকারের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য। তারা ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির স্বার্থেই এই ধরনের কথা বলছে। এস জয়শঙ্করের মন্ত্রকের আরও দাবি, 2023 সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ভারতের বিরুদ্ধে প্র অভিযোগ তোলার পর থেকে ভারত সরকার বারবার অনুরোধ করে আসছে এই সংক্রান্ত প্রমাণ দেওয়ার জন্য । কিন্তু অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও ভারত সরকারের হাতে কোনও তথ্যপ্রমাণই তুলে দেওয়া হয়নি । এখন আবার তারা ভারতীয় হাইকমিশনারকে অভিযুক্ত করছে। আর এই আচরণ থেকেই স্পষ্ট রাজনৈতিক লাভের জন্য ভারতকে কলঙ্কিত করছে কানাডা ।
We have no faith in current Canadian government's commitment to ensure security of Indian diplomats in Canada: MEA
— Press Trust of India (@PTI_News) October 14, 2024
ভারতের চোখে হরদীপ সিং নিজ্জর জঙ্গি । আগেই তাকে জঙ্গি হিসেবে ঘোষণা করেছিল ভারত । দিল্লির অভিযোগ, কানাডায় বসে ভারতে একাধিক নাশকতামূলক কাজকর্মকে অতীতে মদত দিয়েছে হরদীপ। সম্প্রতি ভারতের খালিস্তানি আন্দোলন মাথাচাড়া দেওয়ার নেপথ্যেও তার ভূমিকা আছে বলে মনে করে ভারত। একাধিকবার ভারত সরকার এ নিয়ে প্রতিবাদও করেছে। এরপর 2023 সালের জুন মাসে হরদীপ সিং নিজ্জরকে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় ভারতের গুপ্তচর সংস্থা জড়িত বলে দাবি করে কানাডা।
দেশের সংসদে দাঁড়িয়ে এমন অভিযোগে সরব হন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। তিনি স্পষ্টই জানান, হরদীপ কানাডার নাগরিক। তাকে কে খুন করল তা জানা কানাডার সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেবারও ভারতের তরফে প্রতিবাদ করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে দু'দেশের সম্পর্ক প্রভাবিত হয়।
কানাডা সে সময় দাবি করে হত্যার সঙ্গে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা জড়িত থাকার প্রমাণ তাদের কাছে আছে । আন্তর্জাতিক মঞ্চে তারা দাবি করে এই তদন্তে সহযোগিতা করা উচিত ভারতের । পাল্টা ভারত জানায়, কানাডা যদি কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে পারে যা থেকে ভারতের যোগ প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে । কিন্তু এ পর্যন্ত তেমন কোনও তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হয়নি বলে জানাল দিল্লি । সবমিলিয়ে হরদীপের হত্যাকে কেন্দ্র করে আরও একবার ভারত এবং কানাডার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হল ।