শান্তিপুর, ১৬ মার্চ : নোটবাতিল ঘোষণার পর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শান্তিপুর শাখায় টাকা রেখেছিলেন গ্রাহকরা। কিন্তু, পরে তা তুলতে গিয়ে দেখেন, অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে গেছে। তা নিয়ে একাধিকবার ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ সকাল থেকে ব্যাঙ্কের গেটের সামনে ধরনায় বসেছেন প্রায় ৩০০ জন গ্রাহক। তাঁদের সঙ্গে শামিল হয়েছেন শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যও।
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর সন্ধ্যাবেলায় নোটবাতিলের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাত ১২টা থেকে ৫০০ টাকা ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল হয়ে যাবে। টাকা রাতারাতি বাতিল হয়ে যাওয়ায় কিছুটা হলেও দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। সরকারের তরফে জানানো হয়, সেই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরোনো ৫০০ টাকা ও ১০০০ টাকার নোট ব্যাঙ্কে জমা নেওয়া হবে। সেই মতো দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে নিজেদের সঞ্চিত টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জমা দেন শান্তিপুর এলাকার মানুষ।
তারপর থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। অভিযোগ, পরে টাকা তুলতে গিয়ে দেখা যায় অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে গেছে। ব্যাঙ্কের পাসবইতেও টাকার হিসেব দেখানো হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে শান্তিপুর শাখার ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ। বছরদুয়েক ধরে বারবার ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলেও তা দেওয়া হয়নি। কোনও সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ব্যাঙ্কের গেটের সামনে ধরনায় বসেছেন প্রায় ৩০০ জন গ্রাহক।
ব্যাঙ্কের এক গ্রাহক বলেন, "এক লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে রেখেছিলাম। সেই টাকাতেই মেয়ের বিয়ে দিতাম, ঘর সারাতাম। কিন্তু, যতবার ব্যাঙ্কে এসেছি ততবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দু'বছর ধরে এটাই চলছে।" অপর এক গ্রাহক বলেন, "আমি তো চুরি করিনি, নিজের টাকা চাইতে এসেছি। উলটে ব্যাঙ্কের দেওয়া কাগজপত্রগুলিই নকল বলে দাবি করা হচ্ছে। আমার টাকা ফেরত চাই।"
শান্তিপুরের বিধায়ক বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছে। বহু গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি হয়ে গেছে। কেউ মেয়ের বিয়ের জন্য, কেউ বা ছেলেমেয়ের চিকিৎসার জন্য টাকা জমিয়েছিলেন। যতদিন না পর্যন্ত সাধারণ মানুষ তাদের ন্যায্য টাকা ফেরত পাচ্ছেন ততদিন এই ধরনা চলবে।"