কলকাতা ও বর্ধমান, ২৫ ফেব্রুয়ারি : মশার হাত থেকে বাঁচতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোতে হবে। অথচ, মশারি টাঙানোর জন্য দড়ি নেই হস্টেলে। অগত্যা অ্যানাটমির জন্য রাখা কঙ্কালের হাড়েই মশারি বেঁধে রাত কাটালেন এক ডাক্তারি পড়ুয়া। ঘটনাটি ঘটে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের হস্টেলে।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র কৌসর শেখ। ২৩ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) রাতে মশারি টাঙানোর জন্য দড়ি না পেয়ে শেষমেশ কঙ্কালের হাড়ে মশারি বেঁধে রাত কাটিয়েছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) বিকেলে এই সংক্রান্ত একটি ফেসবুক পোস্টও করেন তিনি। ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, "যখন আপনি মশারি টাঙাতে বাধ্য কিন্তু হস্টেলে দড়ি নেই। যার হাড় সে না জানি কী ভাবছে এসব দেখে।"
তবে এই বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "আজ রবিবার দড়ি কিনে নিয়ে এসেছি। মজার জন্য গতকাল হাড় দিয়ে মশারি বেঁধেছিলাম। মজার জন্যই ফেসবুকে পোস্ট করেছি। তবে হস্টেলে কোনও অব্যবস্থা নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়েও কোনও অভিযোগ নেই।" এই বিষয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট শুভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "নিছকই মজার জন্য এইভাবে হাড় দিয়ে মশারি বেঁধেছে। বিভিন্ন সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের মজা করি। কখনও তো নিজেরাই রোগী বা ডাক্তার সাজি।"
বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ তথা MSVP উৎপল দাঁ বলেন, "এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বলতে পারবেন।"
বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল এবিষয়ে হাসতে হাসতে বলেন, "মজার জন্য কে যে কখন কী করে বসে, তার কোনও ঠিক-ঠিকানা নেই।" যদিও, AIDSO-র মেডিকেল ফ্রন্টের স্থানীয় নেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী বলেন, "অন্যান্য মেডিকেল কলেজের হস্টেলগুলির মতো বর্ধমান মেডিকেল কলেজের হস্টেলেও বিভিন্ন ধরনের অব্যবস্থা রয়েছে। সময়মত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয় না। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পড়ুয়াদের থাকতে হয়।" তবে এই প্রসঙ্গে স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট শুভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বছর দেড়েক আগে হস্টেলে যে ধরনের অব্যবস্থা ছিল, সেখান থেকে এখন উন্নতি হয়েছে। আগে হয়ত মাসে একদিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হত। এখন প্রতি সপ্তাহে হয়। তিনি আরও বলেন, "লোকবলের অভাব অবশ্য রয়েছে। তবে বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে।"