কলকাতা, 17 নভেম্বর: গত কয়েক বছর ধরেই লাগাতার পাড় ভাঙছে গঙ্গাসাগরের । আর মেলার আগে সাগরের এই ভাঙন সরকারের কাছে এই মুহূর্তে বড় চিন্তার কারণ । বিশেষ করে বর্তমানে যেভাবে লাগাতার সাগরে ভাঙন হচ্ছে, তাতে আরও একবার কপিলমুনির আশ্রমের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে । আর সেই জায়গা থেকেই কপিলমুনির আশ্রমকে বাঁচাতে এবার গঙ্গাসাগরের ভাঙন মোকাবিলায় আইআইটি মাদ্রাজ এবং নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেবে রাজ্য সরকার ।
প্রত্যেক বছর গঙ্গাসাগর মেলায় লক্ষাধিক মানুষের পদধূলি পড়ে কপিল মুনির আশ্রমে । শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানের জন্য ছুটে আসেন ভক্তরা । সাগর মেলার আগে হাতে আর বেশি সময় নেই ৷ তাই মেলার আগে মেলার মাঠকে প্রস্তুত করতে স্বল্পকালীন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে । কিন্তু এই মেলা সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর বিশ্বব্যাংকের টাকায় গঙ্গাসাগর বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিতে চলেছে রাজ্য সরকার । এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করছে রাজ্যের সেচ দফতর ।
সম্প্রতি রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া কপিল মুনির আশ্রম পরিদর্শন করে এসেছেন । তিনি জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গঙ্গাসাগর মেলার সময় কপিল মুনির আশ্রমে লক্ষাধিক মানুষ এলেও গঙ্গাসাগরের ভাঙন এবং কপিল মুনির আশ্রম রক্ষা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ভাবনা চোখে পড়ছে না । রাজ্য সরকার নিজের উদ্যোগে গঙ্গাসাগরকে বাঁচাতে তৎপর হয়েছে । এই মুহূর্তে যেহেতু সামনেই মেলা রয়েছে, তাই একটি স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে । পাশাপাশি গঙ্গাসাগর তথা সুন্দরবনের ভাঙন রুখতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিচ্ছে রাজ্য সরকার ।
এক্ষেত্রে আইআইটি মাদ্রাজ এবং নেদারল্যান্ডসের প্রযুক্তিগত সাহায্য নিয়ে গঙ্গাসাগরের বাঁধ রক্ষা করার জন্য কাজ করা হচ্ছে । এনিয়ে সেচমন্ত্রী বলেন, "গঙ্গাসাগরকে রক্ষা করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ । যে কোনও মূল্যে গঙ্গাসাগরকে রক্ষা করবই । শনিবার আমি গঙ্গাসাগর থেকে ঘুরে এলাম । এক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ারদের বলে এসেছি, গঙ্গাসাগরে যে কাজ হবে তাতে যেন কোনও খামতি না থাকে । 100% তৎপরতার সঙ্গেই এই কাজ করতে হবে । পরিকল্পনা হবে ফুলপ্রুফ ।"
কিন্তু বাস্তব হল, এই মুহূর্তে গঙ্গাসাগরে প্রবল ভাঙনের ছবি ধরা পড়ছে । সেখানে এই ভাঙনের চ্যালেঞ্জ রুখে দিয়ে কতটা সুষ্ঠুভাবে গঙ্গাসাগর মেলা সম্পন্ন করতে পারবে প্রশাসন, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ।