কলকাতা, 21 মার্চ: নগর দায়রা আদালতের পিএমএলএ কোর্টে মঙ্গলবার ফের মানিক ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদন করলেন তাঁর আইনজীবী । রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি'র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য ৷ এদিন আদালতে ধমকও খান মানিক (Manik Bhattacharya bail plea) ৷
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের গতি-প্রকৃতি, তাঁর শারীরিক সমস্যা-সহ বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে তাঁকে যেকোনো শর্তে জামিন দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য । এদিন তাঁর আইনজীবী সওয়াল করার পর ফের মানিক ভট্টাচার্য নিজে তাঁর জামিনের পক্ষে সওয়াল করতে চান ৷ এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারক বলেন "আপনি তো আইনের ছাত্র ও আপনি আইন কলেজের একজন অধ্যক্ষ ছিলেন তাহলে কী করে ফের নিজে এই মামলায় সওয়াল করার কথা বলেন ?"
মানিকবাবু অবশ্য এর জবাবে বলেন, "ইডি আমাকে জেলে 5 হাজার পাতার কাগজ পাঠিয়েছে ৷" বিচারক তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন,"আপনি কোর্টে বলতে চাইলে হাইকোর্টে যান ।" এদিন ইডি'র তরফে আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আদালতে ফের একবার মানিক ভট্টাচার্যকে প্রভাবশালী ব্যক্তি বলে উল্লেখ করেন । তিনি জানান, মানিকবাবু এতটাই প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যে সাত মাস ধরে জেলে থাকার পরও তাঁকে দল থেকে বরখাস্ত করা হয়নি । রাজনৈতিক প্রভাবশালী বলেই তিনি তাঁর ছোট ভাই হীরালাল ভট্টাচার্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জোর করে ব্যাবহার করেছিলেন । সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা করা হত ৷
এই প্রসঙ্গে ইডি'র আইনজীবীর আরও দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় হীরালাল ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, “আমার দুর্ভাগ্য যে মানিক ভট্টাচার্য আমার বড় দাদা ।" এদিন মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যের তরফেও আদালতে জামিনের আবেদন করা হয় ৷ এদিন তাঁর জামিনেরও বিরোধিতা করেন ইডি'র আইনজীবী ৷ কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার দাবি, শতরূপা বিদেশ যাতায়াতে যে টাকা খরচা করেছেন সেই টাকার সূত্র কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না । তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে 4 জন মৃত মানুষের জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট পাওয়া গিয়েছে । ফলে তার জামিন দেওয়া হলে তদন্তে কিছুই পাওয়া সম্ভব হবে না আর ৷
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতিতে দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ ইডি'র, নাম রয়েছে কুন্তলের
নিয়োগ দুর্নীতির টাকা বিদেশ ভ্রমণের জন্য ব্যাবহার করা হয়ে থাকতে পারে ৷ ইডি'র তরফে মানিক ভট্টাচার্যর ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্যর জামিনের বিরোধিতা করা হয় ৷ যেহেতু মানিক ভট্টাচার্যরা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছেন, তাই তাঁরা এই আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করতে পারেন না বলেও জানান ইডি'র আইনজীবী ৷ ইডি'র তরফে এদিন আদালতে জানানো হয়েছে এই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে রাজ্যের অন্যান্য দফতরে নিয়োগের ক্ষেত্রেও অনিয়ম ও দুর্নীতির ছবি ধরা পড়েছে ৷ এই নিয়ে তদন্ত শুরু করতে সিবিআইকে চিঠি পাঠিয়েছে ইডি । এদিন অবশ্য এই জামিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে কোনও রায় দেয়নি আদালত ৷