শিলিগুড়ি, 6 মে : করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে জর্জরিত গোটা দেশ ৷ প্রতিদিনই সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখের বেশি সংক্রমিত হচ্ছে দেশে ৷ রাজ্যেও একই অবস্থা ৷ প্রতিদিন 17 থেকে 18 হাজার আক্রান্ত হচ্ছে রাজ্যে ৷ সংক্রমণ প্রতিরোধে ইতিমধ্যেই রাজ্য আংশিক লকডাউনের পথে হেঁটেছে ৷ লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে ৷ স্কুল, কলেজ বন্ধ ৷ দোকান খোলার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৷ আরও একবার বন্দীদশার সম্মুখীন হতে চলেছে মানুষ ৷ আর এর সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ে শিশুদের মনের উপর ৷ এই পরিস্থিতিতে শিশুদের মনের কথা ভেবেই রাজ্য বন দফতরের উদ্যান ও বনবিভাগের অধীনে থাকা উত্তরবঙ্গের 32টি পার্ক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷
করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর থেকে রাজ্য বন দফতরের অধীনে থাকা সমস্ত অভয়ারণ্য, চিড়িয়াখানা, সাফারি পার্ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । যাতে কোনওভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধি না পায়, সেই কারণেই এগুলি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বন দফতর । ইতিমধ্যে নির্দেশিকা জারি করে সেসব বন্ধ রাখা হয়েছে । আর তাতেই বিভ্রান্ত ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে । বন দফতরের অধীন চিড়িয়াখানা, অভয়ারণ্য, সাফারি পার্ক বন্ধ রাখা হলেও পার্কগুলি কিন্তু বন্ধ রাখার কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি । তাই যথারীতি খোলাই রয়েছে পার্কগুলি । বন দফতরের সূত্রে জানা গিয়েছে, বন দফতরের উদ্যান ও বনবিভাগের অধীনে থাকা উত্তরবঙ্গের 32টি পার্কই আগের মতো খোলা রাখা হয়েছে । কিন্তু, আগের নির্দেশিকায় বিভ্রান্ত হয়ে পার্কে যাওয়া প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিল খুদেরা ।
যদিও পরে বিভ্রান্তি কেটেছে ৷ আগের মতো ভিড় না হলেও বন্দিদশা থেকে কিছুটা রেহাই পেতে পার্কে মনোরঞ্জন করতে যাচ্ছে কেউ কেউ । এতে কিছুটা হলেও একঘেয়েমি কাটছে খুদে থেকে বয়স্কদের । তবে পার্ক খোলা হলেও কড়াভাবে নজর রাখা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধিতে । নো মাস্ক নো এন্ট্রি, স্যানিটাইজ়েশন ও সামাজিক দূরত্ব তো বটেই । পার্কের ভিতরে মাস্ক ছাড়া কাউকে ঘুরতে দেখলে জরিমানাও করা হচ্ছে । নিয়ম মেনে স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে খুদেদের খেলার সামগ্রী থেকে বসার জায়গা । চিড়িয়াখানা, সাফারি পার্ক বন্ধ থাকায় এখন পার্কগুলিই মনোরঞ্জন ও কিছুটা সময় কাটানোর একমাত্র ঠিকানা হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
বন দফতরের উদ্যান বিভাগের ডিএফও (উত্তরবঙ্গ) অঞ্জন গুহ বলেন, "সরকারি নির্দেশিকায় কোনও বিভ্রান্তি ছিল না । সাধারণ মানুষ একটু বিভ্রান্ত হয়েছেন ঠিকই । তবে উত্তরবঙ্গের বন দফতরের অধীনে থাকা সমস্ত পার্ক খোলা রয়েছে । কড়া স্বাস্থ্যবিধির মাধ্যমে পার্কগুলিতে সীমিত দর্শকদের ঢোকানো হচ্ছে ।"
শিলিগুড়ি বনবিভাগের রেঞ্জার মানব চক্রবর্তী বলেন, " আগে যেরকম পার্কে দর্শকের ঢল নামত, করোনা আবহের কারণে তা একদমই তলানিতে ঠেকেছে । তবু বিকেলবেলায় কয়েকজন পার্কে আসছেন ৷ স্বাস্থ্যবিধিতে নজরদারি রেখে তাদের পার্কে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে । প্রতিনিয়ত স্যানিটাইজেশন করা হচ্ছে ৷ "