ETV Bharat / state

অবৈধ নিয়োগ হলে আগে বাদ দিতে হয়! সুপ্রিম কোর্টে একাধিক প্রশ্নে বিদ্ধ রাজ্য - SSC JOB RECRUITMENT SCAM

2016 সালের এসএসসি পরীক্ষার আসল ওএমআর শিট খুঁজে না পাওয়া থেকে একাধিক কারণে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য়।

SSC Recruitment Scam Hearing in Supreme Court
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্ট (ফাইল ছবি)
author img

By PTI

Published : Dec 19, 2024, 9:29 PM IST

Updated : Dec 19, 2024, 10:46 PM IST

নয়াদিল্লি, 19 ডিসেম্বর: ওএমআর শিট থেকে শুরু করে সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি- এসএসসি দুর্নীতি মামলায় একাধিক প্রশ্নে রাজ্যকে বিদ্ধ করল সুপ্রিম কোর্ট ৷ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে প্রায় 26 হাজার চাকরি বাতিলের মামলার শুনানি চলছিল দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে ৷

গত 22 এপ্রিল এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ 25,573 জনের চাকরি বাতিলের পক্ষে রায় দেয় ৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনের 2016 পুরো প্যানেল (গ্রুপ-সি, ডি, নবম-দ্বাদশ) বাতিল করেন তাঁরা ৷ 281 পাতার রায়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নয়া টেন্ডার ডেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালুর নির্দেশও দেয় আদালত ৷ এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ৷

সেই মামলার শুনানিতে এদিন রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী এসএসসির বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে একটি রিপোর্ট আদালতে পেশ করেন ৷ সেই রিপোর্ট দেখেন দুই বিচারপতির বেঞ্চ ৷ তাঁরা আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীকে বলেন, "আপনারা সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি করেছিলেন কেন ? এর কারণ কী ?"

এর জবাবে আইনজীবী সওয়াল করেন, কমিটি কিছু বেনিয়ম পেয়েছে ৷ কিন্তু তা সিবিআই-এর মতো বিস্তারিত নয় ৷ বেঞ্চ জানায়, "তাহলে বেনিয়ম হয়েছিল ৷ এই পরিস্থিতিতে যাঁদের বেআইনিভাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল, তাঁদের বাদ দেওয়ার বদলে আপনারা সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি করলেন ? আপনি যদি খুঁজে পান যে বেনিয়ম হয়েছে, সেক্ষেত্রে আপনি কি প্রথমে তাঁদের ছুড়ে বাইরে ফেলে দেবেন না ?" পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবী তখন জানান, ওয়েট-লিস্টে থাকা প্রার্থীদের নিযুক্ত করতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল ৷ এরপর দেশের প্রধান বিচারপতি বলেন, "ঠিক ৷ এটাই কারণ যে, আপনারা বেআইনি প্রার্থীদের বাইরে বের করতে চাননি ৷"

এর আগে 7 মে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয় ৷ পাশাপাশি সিবিআই-কে এই বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেয় ৷ শীর্ষ আদালত উল্লেখ করে, 2022 সালের 19 মে রাজ্য সরকার ওয়েট-লিস্ট তালিকায় থাকা প্রার্থীদের জন্য শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে 6 হাজার 861 টি সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি করে ৷ আদালত আরও জানায়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) অনুমোদন অনুযায়ী ওয়েট-লিস্টে থাকা প্রার্থীদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৷ গত 7 মে শীর্ষ আদালত, হাইকোর্ট যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল, তা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ৷ কিন্তু পাশাপাশি জানিয়ে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না ৷

এদিনের শুনানিতে বেঞ্চ প্রশ্ন করে, "তালিকা থেকে বৈধ ও অবৈধ নিয়োগ আলাদা করা সম্ভব নয়, রাজ্য সরকার কি এই তত্ত্ব সমর্থন করে ?" সরকারের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী জানান, রাজ্য বৈধ-অবৈধ আলাদা করার পক্ষে ৷ আইনজীবী জানান, বেআইনি নিয়োগ খুঁজতে কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই-কে প্রয়োজনে প্রত্যেক প্রার্থীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশও দিয়েছিল ৷

আসল ওএমআর শিট কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তার জন্য বেঞ্চ বিস্ময় প্রকাশ করে ৷ প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ জানায়, "ওএমআর শিটই তো আসল কাগজ ৷ ওটাই তো প্রাথমিক প্রমাণ ৷ প্রমাণ বা মেন পেপারের উপর কোনও কারচুপি হলে তা ওএমআর শিটে ধরা পড়ার কথা ৷ তাহলে সার্ভারে থাকা স্ক্যান করা ওএমআর শিট এবং আসল ওএমআর শিট এক কি না, এটা প্রমাণ করার কোনও জায়গা নেই ৷"

এদিন শুনানিতে সিবিআই-এর আইনজীবীকে আদালত জিজ্ঞেস করে, কবে ওএমআর ডেটাগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল, সেই তারিখ তারা জানতে পেরেছে কি না ৷ বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, "একটা আশ্চর্যের বিষয়, যাঁদের যোগ্যতা ছিল না, যাঁদের অনুমোদন করা হয়নি, তাঁদের নিয়োগের চিঠি পাঠানো হয়েছিল ৷ এটা একটা গুরুতর বিষয় ৷" বৃহস্পতিবার দু'দফায় দিনভর শুনানি হয় ৷ কপিল সিবাল, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভভি, শ্যাম ডিভান, জয়দীপ গুপ্তা, সঞ্জয় হেজের মতো সিনিয়র আইনজীবীরা এই মামলার শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ৷ পরবর্তী শুনানি জানুয়ারি মাসে ৷

নয়াদিল্লি, 19 ডিসেম্বর: ওএমআর শিট থেকে শুরু করে সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি- এসএসসি দুর্নীতি মামলায় একাধিক প্রশ্নে রাজ্যকে বিদ্ধ করল সুপ্রিম কোর্ট ৷ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে প্রায় 26 হাজার চাকরি বাতিলের মামলার শুনানি চলছিল দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে ৷

গত 22 এপ্রিল এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ 25,573 জনের চাকরি বাতিলের পক্ষে রায় দেয় ৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনের 2016 পুরো প্যানেল (গ্রুপ-সি, ডি, নবম-দ্বাদশ) বাতিল করেন তাঁরা ৷ 281 পাতার রায়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নয়া টেন্ডার ডেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালুর নির্দেশও দেয় আদালত ৷ এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ৷

সেই মামলার শুনানিতে এদিন রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী এসএসসির বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে একটি রিপোর্ট আদালতে পেশ করেন ৷ সেই রিপোর্ট দেখেন দুই বিচারপতির বেঞ্চ ৷ তাঁরা আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীকে বলেন, "আপনারা সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি করেছিলেন কেন ? এর কারণ কী ?"

এর জবাবে আইনজীবী সওয়াল করেন, কমিটি কিছু বেনিয়ম পেয়েছে ৷ কিন্তু তা সিবিআই-এর মতো বিস্তারিত নয় ৷ বেঞ্চ জানায়, "তাহলে বেনিয়ম হয়েছিল ৷ এই পরিস্থিতিতে যাঁদের বেআইনিভাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল, তাঁদের বাদ দেওয়ার বদলে আপনারা সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি করলেন ? আপনি যদি খুঁজে পান যে বেনিয়ম হয়েছে, সেক্ষেত্রে আপনি কি প্রথমে তাঁদের ছুড়ে বাইরে ফেলে দেবেন না ?" পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবী তখন জানান, ওয়েট-লিস্টে থাকা প্রার্থীদের নিযুক্ত করতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল ৷ এরপর দেশের প্রধান বিচারপতি বলেন, "ঠিক ৷ এটাই কারণ যে, আপনারা বেআইনি প্রার্থীদের বাইরে বের করতে চাননি ৷"

এর আগে 7 মে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয় ৷ পাশাপাশি সিবিআই-কে এই বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেয় ৷ শীর্ষ আদালত উল্লেখ করে, 2022 সালের 19 মে রাজ্য সরকার ওয়েট-লিস্ট তালিকায় থাকা প্রার্থীদের জন্য শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে 6 হাজার 861 টি সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি করে ৷ আদালত আরও জানায়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) অনুমোদন অনুযায়ী ওয়েট-লিস্টে থাকা প্রার্থীদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৷ গত 7 মে শীর্ষ আদালত, হাইকোর্ট যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল, তা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ৷ কিন্তু পাশাপাশি জানিয়ে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না ৷

এদিনের শুনানিতে বেঞ্চ প্রশ্ন করে, "তালিকা থেকে বৈধ ও অবৈধ নিয়োগ আলাদা করা সম্ভব নয়, রাজ্য সরকার কি এই তত্ত্ব সমর্থন করে ?" সরকারের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী জানান, রাজ্য বৈধ-অবৈধ আলাদা করার পক্ষে ৷ আইনজীবী জানান, বেআইনি নিয়োগ খুঁজতে কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই-কে প্রয়োজনে প্রত্যেক প্রার্থীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশও দিয়েছিল ৷

আসল ওএমআর শিট কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তার জন্য বেঞ্চ বিস্ময় প্রকাশ করে ৷ প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ জানায়, "ওএমআর শিটই তো আসল কাগজ ৷ ওটাই তো প্রাথমিক প্রমাণ ৷ প্রমাণ বা মেন পেপারের উপর কোনও কারচুপি হলে তা ওএমআর শিটে ধরা পড়ার কথা ৷ তাহলে সার্ভারে থাকা স্ক্যান করা ওএমআর শিট এবং আসল ওএমআর শিট এক কি না, এটা প্রমাণ করার কোনও জায়গা নেই ৷"

এদিন শুনানিতে সিবিআই-এর আইনজীবীকে আদালত জিজ্ঞেস করে, কবে ওএমআর ডেটাগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল, সেই তারিখ তারা জানতে পেরেছে কি না ৷ বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, "একটা আশ্চর্যের বিষয়, যাঁদের যোগ্যতা ছিল না, যাঁদের অনুমোদন করা হয়নি, তাঁদের নিয়োগের চিঠি পাঠানো হয়েছিল ৷ এটা একটা গুরুতর বিষয় ৷" বৃহস্পতিবার দু'দফায় দিনভর শুনানি হয় ৷ কপিল সিবাল, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভভি, শ্যাম ডিভান, জয়দীপ গুপ্তা, সঞ্জয় হেজের মতো সিনিয়র আইনজীবীরা এই মামলার শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ৷ পরবর্তী শুনানি জানুয়ারি মাসে ৷

Last Updated : Dec 19, 2024, 10:46 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.