বালুরঘাট, 17 মে : লকডাউনের প্রায় দু’মাস অতিবাহিত । কোরোনা মোকাবিলায় সমস্তরকম কাজকর্মে ছেদ পড়েছে ৷ প্রতিবছর বিভিন্ন সময় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় ৷ ফলে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের অভাব প্রায় হয়না বললেই চলে ৷ কিন্তু এবছরের পরিস্থিতি অন্যরকম ৷ কোরোনার জেরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সমস্তরকম জমায়েত বন্ধ রয়েছে ৷ রক্তদান শিবিরের আয়োজন হচ্ছে না ৷ এর ফলে বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত মজুতের পরিমাণ দিন দিন কমছে । এমত অবস্থায় রক্তদান দান করতে ব্লাড ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করার আর্জি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা ।
কোরোনার ও লকডাউনের জন্য প্রায় একমাস কোনওরকম রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হচ্ছে না দক্ষিণ দিনাজপুরে । যার প্রভাবে বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর হাসপাতালে থাকা ব্লাড ব্যাঙ্কে তীব্র রক্ত সংকট দেখা দিয়েছে । সমস্যায় পড়ছেন মুমূর্ষ রোগীরা । সবথেকে সমস্যায় পড়েছেন থ্যালাসেমিয়া রোগীরা ৷ তাঁদের রক্তের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ । যদিও জেলার রক্ত সংকট মেটাতে এগিয়ে এসেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ প্রশাসন । কিছুদিন ধরে বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর ব্লাড ব্যাঙ্কে পুলিশকর্মীরা রক্ত দান করছেন । বালুরঘাট থেকে প্রায় 200 ইউনিট রক্ত দান করা হয়েছে । গঙ্গারামপুরে একশ'রও বেশি জেলা পুলিশকর্মী রক্তদান করেছেন । তবে এই মুহূর্তে হাসপাতালে দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীর সংখ্যা কম ৷ পাশাপাশি অস্ত্রোপচার কম হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ।
চিকিৎসকরা জনাচ্ছেন, বালুরঘাট ব্লাড ব্যাঙ্কে প্রতিদিন 20 থেকে 22 ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয় । তবে লকডাউনের কারণে এখন 15টির বেশি রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে । যার মধ্যে বেশিরভাগই থ্যালাসেমিয়া রোগীদের প্রয়োজনে । অন্যদিকে গঙ্গারামপুর ব্লাড ব্যাঙ্কেও প্রত্যেকদিন বেশি ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয় ।
বালুরঘাট ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক অমিত দে জানান, ‘‘কোরোনা ও লকডাউনের জন্য জেলাজুড়ে রক্ত সংকট চলছে । তবে অস্ত্রোপচার ও রোগী ভর্তির সংখ্যা কম থাকায় বর্তমানে কিছুটা হলেও স্বাভাবিক রয়েছে ৷ জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে রক্তদান শিবির আয়োজন করা হচ্ছে ৷ যার জন্য কিছুটা হলেও স্বাভাবিক রয়েছে । তবে লকডাউন উঠে যাওয়ার পর রোগীর ভর্তির সংখ্যা বাড়লে তীব্র রক্ত সংকট দেখা দিতে পারে ।’’ বর্তমানে যেহেতু বাইরে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হচ্ছে না, তাই রক্তের জোগান স্বাভাবিক রাখতে ব্লাড ব্যাঙ্কে এসে রক্তদানের আবেদন জানিয়েছেন চিকিৎসক । অন্যদিকে দক্ষিণ দিনাজপুর ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের পক্ষ থেকে সুশান্ত কুণ্ডু জানান, ‘‘জেলায় কোরোনা ও লকডাউনের ফলে রক্ত সংকট চরম আকার নিয়েছে । ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদানের জন্য দক্ষিণ দিনাজপুর ভলেন্টিয়ার ব্লাড ডোনার্স ফোরামের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করা হচ্ছে ।’’