ভাঙড়, 29 মার্চ : কারও স্পাইনাল কর্ডে অপারেশন হয়েছে, তো কারও বাইপাস সার্জারি । সবাই ঘরে ফেরার জন্য মুখিয়ে রয়েছে । কিন্তু লকডাউনের জেরে প্রত্যেকেই আটকে পড়েছেন মাদুরাইতে । কবে ফিরবেন কীভাবে ফিরবেন তা কেউ জানেন না । হাতেও টাকা নেই। বের করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন । এই অবস্থায় স্থানীয় ও রাজ্য প্রশাসনের কাছে বাড়ি ফেরার আর্জি জানালেন আটকে পড়া বাঙালিদের ।
ভাঙড় ২ ব্লকের BDO কৌশিক কুমার মাইতি বলেন, " লকডাউনের জেরে বহু মানুষ বহু জায়গায় আটকে আছেন । কে কোথায় আটকে আছেন তাঁর একটা তালিকা তৈরি করা হচ্ছে প্রতিটা ব্লক থেকে । সেই তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে ।
কাশিপুর থানার জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা 59 বছরের হাজরা পদ সর্দারের মেরুদণ্ডে ক্ষয় রোগ ধরেছিল বছর কয়েক আগে। কলকাতার সবকটি হাসপাতাল ঘোরাঘুরি করে অবশেষে ঠিক করেন তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহরে মিনাক্ষী মিশন হাসপাতালে অপারেশন করাবেন। সেইমতো ছেলে স্বপন সর্দারকে নিয়ে 11 মার্চ মাদুরাই যান তিনি । দেড় লাখ টাকা খরচ করে সফল অপারেশন হয় । 24 তারিখ তিরুচিরাপল্লি থেকে ট্রেন ধরার কথা ছিল বাবা-ছেলের । তাঁর আগেই ২৩ তারিখ থেকে গোটা দেশ জুড়েই চলছে লকডাউন ।
টেলিফোনে হাজরা পদ বাবু জানালেন, " পঞ্চাশ হাজার টাকা অতিরিক্ত এনেছিলাম, সব শেষ। লজের প্রতিদিনের ঘর ভাড়া 500 টাকা । মিল ৭০ টাকা । আমাদের হাতে আর কোনও পয়সা নেই ।"
হুগলির হরিপালের বাসিন্দা রতনচন্দ্র ঘোষের বছর ছয়েক আগে বাইপাস সার্জারি হয়েছিল । তিনি চেক আপে গিয়েছিলেন । গত পাঁচ দিন ধরে তিনিও আটকে আর পাঁচ জনের মতো । বলেন, "নিজের এলাকায় জয়েন্ট BDO ,MLA , MP-কে বলেও সাড়া পাইনি।"
দিদিকে বলো তেও কথা বলে ফল পাননি রতন । লজ কর্তৃপক্ষ বলেছেন বকেয়া না মেটাতে পারলে ঘর ছেড়ে রাস্তায় থাকতে। রতনের কাতর আর্তি, "লকডাউনের সময় যদি রাজ্যে ফিরতে অসুবিধা হয় তবে এখন নাই বা ফিরলাম । কিন্তু এখানে যেন মাথা গোঁজার ঠাই পাই আর দু'বেলা দু'মুঠো খাবার পাই সেই ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।"