কলকাতা, 21 ডিসেম্বর: বাংলাদেশে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর বিশেষ প্রশিক্ষণ নেয় জঙ্গি সন্দেহে ধৃত মিনারুল শেখ ৷ এমনটাই দাবি করল ভবানী ভবন ৷ অসম এসটিএফের থেকে তেমনই তথ্য মিলেছে ৷
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে জঙ্গি সন্দেহে দু'জনকে গ্রেফতার করে অসম পুলিশের এসটিএফ ৷ ধৃতদের মধ্যে অন্যতম হল এই মিনারুল শেখ ৷ তার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত নথিপত্র এবং মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ঘেটে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে অসম পুলিশের ৷ এরপরেই তা তারা বেঙ্গল এসটিএফকে জানায় ।
ভবানী ভবনের দাবি, জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া মিনারুল একাধিকবার বাংলাদেশে গিয়েছিল । শুধু বাংলাদেশে গিয়ে সেখানকার একাধিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষনেতা সঙ্গে বৈঠক নয়, বরং ওপার বাংলা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণও সেরে আসে মিনারুল । সেখানে গিয়ে কোন কোন আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণ শিখেছিল এবং কে মিনারুলকে এই প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, সেই বিষয়ে এখনও প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাইনি রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ।
তবে এসটিএফের দাবি, মিনারুল শেখ-সহ বাকি অভিযুক্তরা একটি কমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ভিনদেশের বেশ কয়েকটি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা বলতো । সেখানেই তাদের দেওয়া হতো বিশেষ অ্যাসাইনমেন্ট । আর তার উপর ভিত্তি করেই তারা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে তাদের মতাদর্শে বাংলার যুব সম্প্রদায়ের মগজ ধোলাই করত । তবে তারা কোন কোন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতো, এখনই খোলসা করে তা বলতে চাইছেন না রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা ।
মুর্শিদাবাদ থেকে আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গি সন্দেহে দু'জনকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে শুক্রবারই ভবানী ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার ৷ তিনি জানান, মূলত যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা ভারত বিদ্বেষী মনোভাব ছাড়ানোর কাজে নিযুক্ত ছিল ৷ পাশাপাশি পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ ঘেঁটে এমনটাই অনুমান করা হচ্ছে যে, তারা বিভিন্ন জায়গায় নাশকতার ছকও করেছিল ।
সম্প্রতি অসম পুলিশের বিশেষ ইউনিট জানতে পারে যে বাংলাদেশের একাধিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা এবং বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেলের সদস্যরা এই রাজ্যে ঢুকেছে । সেই মতো রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে কাজে লাগিয়ে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে দু’জন, পর আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয় ৷ তবে প্রথমে সবমিলিয়ে মোট আটজনকে জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেলের সদস্য সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় ।
এই ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষকর্তা বলেন, "আমরা নিয়মিত অসম পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি । এই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা এই রাজ্যের আর কোথায় কোথায় আস্তানা গড়ে তুলেছে, তাও ভালোভাবে খতিয়ে দেখছি ।"