নয়াদিল্লি, 27 জানুয়ারি : করোনা আবহে ‘শাপে’ কি ‘বর’ হল ভারতবাসীর? স্বাস্থ্য় খাতে বরাদ্দ প্রসঙ্গে কতকটা তেমনই ইঙ্গিত পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ তাঁদের আশা, অতিমারীর পর টনক নড়বে নীতি নির্ধারকদের৷ বরাদ্দ বাড়বে দেশের স্বাস্থ্য খাতে ৷
এক করোনা গোটা পৃথিবীকে কার্যত নাচিয়ে ছেড়েছে ৷ স্বাস্থ্য় সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা সামাল দিতে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই যে অপারগ, সেই সত্যিটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ভয়ঙ্কর ভাইরাস ৷ আপদকালীন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে টাকার জোগান অব্য়াহত থাকা যে কতটা জরুরি, করোনাকালে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বিশ্ববাসী ৷
ভারতের সমস্য়া হল, স্বাস্থ্য় খাতে বাজেট বরাদ্দ বরাবরই কম৷ যা নিয়ে বারবার মুখ খুলেছে ওয়াকিবহাল মহল৷ মোদি জমানায় বরাদ্দের পরিমাণ আরও কমেছে৷ এই প্রবণতা যে ভয়ঙ্কর পরিণতি ঘটাতে পারে, কোভিড ভাইরাসই তা বুঝিয়ে দিয়েছে আমাদের ৷ আর এখানেই আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁদের মতে, আসছে বাজেটে বরাদ্দ বাড়বে স্বাস্থ্য খাতে৷
একটি সমীক্ষা রিপোর্ট মোতাবেক, পৃথিবীতে যে ক’টি দেশ স্বাস্থ্য় খাতে সবথেকে কম টাকা বরাদ্দ করে, তাদের মধ্য়ে ভারতের স্থান চতুর্থ ৷ 2020-21 অর্থবর্ষে স্বাস্থ্য় পরিষেবায় কেন্দ্র করেছিল 67 হাজার 112 কোটি টাকা টাকা৷ যা গড় জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপির মাত্র 1.5 শতাংশ৷ তথ্য় বলছে, আম ভারতীয়দের মধ্য়ে 70 শতাংশই নিজের পকেট থেকে চিকিৎসার খরচ বহন করেন৷ আর মোট জনসংখ্য়ার মাত্র অর্ধ্বেক ন্যূনতম স্বাস্থ্য় পরিষেবা পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন৷ বাকিদের সে সুযোগটুকুও হয় না৷ সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রতি 10 হাজার নাগরিকের জন্য় ভারতীয় হাসপাতালে শয্য়া বরাদ্দ রয়েছে মাত্র 5.5টি৷ এর থেকেই পরিষ্কার, আমাদের দেশে চিকিৎসা পরিষেবার হাল আদতে কতটা বেহাল!
কোরোনা পরিস্থিতি বুঝিয়ে দিয়েছে, দেশের স্বার্থে অগ্রাধিকার দিতে হবে স্বাস্থ্য় পরিষেবা ও পরিকাঠামোকে৷ খরচ সামলাতে বাড়াতে হবে বরাদ্দের পরিমাণ৷ লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, 2020-21 অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা ও পরিকাঠামো খাতে যত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, তার সিকিয়ানাও জোটেনি স্বাস্থ্য় খাতে৷ এমনকী, এ নিয়ে নানা স্তরে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ৷ বদলে যেটুকু টাকা দেওয়া হয়েছিল, তা মোট বাজেটের 5 শতাংশের কিছু বেশি৷
আরও পড়ুন: সাধারণতন্ত্র দিবসে কোরোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাশে থাকার বার্তা বরিস
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ফিকি এবং সিআইআই-এর তরফেও স্বাস্থ্য় খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানোর দাবি তোলা হয়েছে৷ বাজেট তৈরির আগে সরকারের প্রতি ফিকির পরামর্শ, কেন্দ্রের উচিত আগামী পাঁচ বছর স্বাস্থ্য় খাতে জিডিপির আরও .5 শতাংশ ব্য়বহার করা৷ আর সিআইআই চায়, আগামী তিন বছরের মধ্য়ে স্বাস্থ্য় খাতে বাজেট বরাদ্দ দ্বিগুণ করুক নয়াদিল্লি৷ জিডিপির 3 শতাংশ ব্য়বহার করা হোক স্বাস্থ্য় পরিষেবায়৷