কলকাতা, 23 নভেম্বর : বিহার নির্বাচনে সাফল্যের পর আর সময় নষ্ট করতে নারাজ অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM) । সম্ভবত ডিসেম্বর মাস থেকেই পশ্চিমবঙ্গে প্রচার শুরু করতে চলেছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির পার্টি ৷ এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, ডিসেম্বর মাসে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলা থেকেই সভা শুরু করবে AIMIM । সেই সভায় বক্তব্য রাখতে পারেন ওয়েইসি স্বয়ং ৷ ETV ভারতের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে AIMIM-র সর্বভারতীয় মুখপাত্র এবং দলের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক আসিম ওয়াকার বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত সভার কোনও তারিখ ঠিক হয়নি । কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে এবং তারপরেই আমরা আমাদের পরবর্তী কার্যক্রমের কথা জানাব বিশদে ৷"
এদিকে AIMIM-র এক কার্যকর্তার কথায় মুর্শিদাবাদ ছাড়াও আর দু’টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা, মালদা এবং উত্তর দিনাজপুর শহরেও সভা করবার ইচ্ছে আছে AIMIM প্রধানের । সভায় ভিড় কেমন হবে সেইদিকেই চোখ রাজনৈতিক মহলের। আপাতত AIMIM নিয়ে কোনো ভাবনা চিন্তা নেই CPIM এবং কংগ্রেসের । ডিসেম্বরে এই রাজ্যে AIMIM আসলেও বিরোধী রাজনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না । বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে কেউ এসে নির্বাচনের প্রচার করতে পারেন । মুর্শিদাবাদ থেকে প্রচার শুরু করলেই যে বাম-কংগ্রেস ঐক্যের উপর তার প্রভাব পড়বে এমন কথার গুরুত্ব নেই। বিহারে যা হয়, তা এ রাজ্যে হবে এমন ভাবনা ভিত্তিহীন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, AIMIM কোনোভাবেই নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারবে না । তৃণমূল এবং BJP-র বিরুদ্ধে বাম কংগ্রেস ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে।
এদিকে AIMIM-কে আক্রমণ করে তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু বলেন, "AIMIM অন্য কোনও সাম্প্রদায়িক পার্টির হয়ে কাজ করে । কিন্তু সেই ভাগাভাগি বা সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে না গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে AIMIM-এর আনোয়ার পাশা ও আরও অনেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন । শান্তি, মৈত্রী ও উন্নয়নের পক্ষে সারা দেশে একমাত্র মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে তাঁর ।"
কিন্তু যে জিনিসটা তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের নেতৃত্বকে চিন্তায় রেখেছে সেটি হল আসাদউদ্দিন ওয়েইসির সংখ্যালঘু ভোট ভাগের ফলে বহুক্ষেত্রে বিহার নির্বাচনে লাভবান হয়েছে BJP । ওয়েইসি জানিয়ে দিয়েছেন যে বিহারের পর বাংলাতেও তাঁর দল ভোট লড়বে একক শক্তিতে । যদি তাই হয়, তাহলে মুর্শিদাবাদ এবং মালদার মতো সংখ্যালঘু- অধ্যুষিত জেলাগুলিতে কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বামফ্রন্টের যথেষ্ট চিন্তার কারণ থেকে যাচ্ছে ।
এদিকে AIMIM-এর তরফ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে জোটের আহ্বান ইতিমধ্যেই পৌঁছে গেছে । আসিম ওয়াকার জানিয়েছেন যে BJP-কে ঠেকাতেই তৃণমূলের কাছে তাঁদের এই জোটের আহ্বান। তাঁর কথায় " এটা ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন থেকেই প্রমাণিত যে একক শক্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস কোনোমতেই BJP-কে ঠেকাতে পারবে না। যদি মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এটা বোঝেন ভালো, তা না হলে আমরা নিজের শক্তিতেই লড়াই করবো । পশ্চিমবঙ্গের প্রতি জেলাতেই প্রাথী দেওয়ার ইচ্ছা আছে আমাদের।"