মালদা, 30 সেপ্টেম্বর: সর্পাঘাতে মৃত তরুণ ৷ মৃতের নাম দেবদাস হেমব্রম (18) । বাড়ি মালদা জেলার বামনগোলা ব্লকের নিমডাঙা গ্রামে । অভিযোগ, সাপে কাটার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে ওই তরুণকে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয় পরিবারের তরফে ৷ শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলেছিল ওঝার কেরামতি । ফলে শেষরক্ষা হয়নি । পরদিন শনিবার বিকেলে মৃত্যু হয় তরুণের । তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ । এখনও যে মানুষ কুসংস্কারের অন্ধকার থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি, এই ঘটনা থেকে তা ফের প্রমাণিত বলে বলছেন অনেকে । এমনকী, মৃতের পরিবারের বক্তব্যে সচেতনতামূলক প্রচার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিল দেবদাস । সেখানে তাঁকে একটি বিষধর সাপে ছোবল মারে । পরিবারের লোকজন দেবদাসকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে দিঘলবর গ্রামের এক ওঝার কাছে নিয়ে যান । পরদিন বিকেলে মৃত্যু হয় তাঁর ।
কুসংস্কারের বলি 18 বছরের তরুণ (ইটিভি ভারত) দেবদাসের দাদা বিশ্বনাথ হেমব্রম বলেন, "গত শুক্রবার ভাই মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিল । দুপুর 2টো নাগাদ ভাইকে সাপে ছোবল মারে । গ্রামের মানুষের থেকে বিষয়টি শুনতে পেয়ে তড়িঘড়ি ভাইকে পাশের গ্রামে কবিরাজের কাছে নিয়ে যাই । ভাইয়ের অবস্থা তখন শোচনীয় ছিল । কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর ভাই খানিক সুস্থ হয় । পরদিন সকালে ভাইয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে । ভাই ক্রমাগত ঘামতে থাকে । সেই সময় আমরা গ্রামীণ চিকিৎসদের ডেকে আনি । জানতে পারি, ভাইয়ের রক্তচাপ অনেক বেড়ে গিয়েছে । এরপরেই আমরা ভাইকে বুলবুলচণ্ডী আরএন রায় হাসপাতালে নিয়ে আসি । সেখান থেকে ভাইকে মালদা মেডিক্যালে রেফার করা হয় ।"
মৃতের দাদার কথায়, "মালদা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা ভাইকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । শুক্রবারই ভাইয়ের পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছিল ভাইকে বাঁচানো যাবে না । সাপে ছোবল মারলে রোগীকে কবিরাজের কাছে নিয়ে না গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোনও প্রচার আমরা শুনিনি ।"