কলকাতা, 8 মার্চ: রাজ্যের সংশোধনাগারের অবস্থা কতটা শোচনীয়, তা দেখতে নিজেই জেল পরিদর্শনে যেতে চান কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। শুক্রবার এমনটাই জানালেন তিনি। তবে কবে যাবেন সেটা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি ৷ অনুমান, সংশোধনাগারের অবস্থা কেমন তা জানতে আচমকা পরিদর্শন করতে চাইছেন হাইকোর্টের বিচারপতি ।
জেলে মহিলাদের অবস্থা-সহ বেশ কিছু অভিযোগ নিয়ে দায়ের হওয়া স্বত:প্রনোদিত মামলায় নিজেই একথা জানান বিচারপতি । বিচারপতির নিজে জেল পরিদর্শন নি:সন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ হবে মানছেন অনেকেই। এদিন শুনানিতে রাজ্যের পক্ষে এজি, কিশোর দত্ত জানান, বেশ কিছু বিষয় সামনে এসেছে। জেলে প্রচুর ভিড়। এই নিয়ে রোজ বৈঠকের কথা বলা হচ্ছে । তাছাড়া জেলের চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অতিরিক্ত ভিড়, বন্দিদের ডায়েট, জেলে মারা গেলে ক্ষতিপূরণ, জ্যামার লাগানো ইত্যাদি বিষয়গুলি উঠে এসেছে।
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি জানতে চান, কটি ওপেন জেল আছে? ক্রেস (বাচ্চাদের রাখার জন্য) এবং লেখা পড়ার জায়গাই বা আদৌ আছে কি না? মামলায় আদালত বান্ধব তাপস ভঞ্জ বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে একদিকে শিশুদের বন্দি মায়েদের সঙ্গে নিয়ে তাদের ভবিষ্যত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ৷ তেমনই বিচারপতির কাছে অনুরোধ করেছেন, শিশুরা পিতৃ পরিচয় পেলে বা তাদের বাবা কে তা জানতে পারলে ভবিষ্যতে দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে
এরপর বিচারপতি জানান, শিশু মায়ের সঙ্গে থাকতে চাইলে আমরা তাকে বের করে দিতে পারি না। যারা হোমে থাকবে তাদের সপ্তাহে অন্তত একবার দেখা করতে পারবে। আর যেসব বন্দিদের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ তাঁরা যদি পরিবারের সঙ্গে ওপেন জেলে থাকতে পারেন সেই ব্যবস্থার দিকেও নজর দেওয়া উচিত ৷ পাশাপাশি বিচারপতি মহিলা ও পুরুষ সংশোধনাগারে অতিরিক্ত বন্দি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷ কারণ একটি সেলে অতিরিক্ত বন্দি থাকা স্বাস্থ্যকর নয় ৷ ফলে এই বিষয়টি নিয়েও চিন্তা প্রকাশ করেছেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ৷
এরপর আইনজীবী তাপস ভঞ্জ জানান, নেলশন মেন্ডেলা রুল প্রতি জেলে বাধ্যতামূলক। যদিও বিচারপতি বাগচির মত, নেলশন ম্যান্ডেলা এক শতক আগের ঘটনা। তিনি বলেন, "আমরা 21 শতকের দ্বিতীয় দশকে আছি। আমরা কি বাস্তব বাদি হব না? ভঞ্জ এদিন অভিযোগ করেন, জেলের ভোটে যারা জিতে যান, সেইসব বন্দিরা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। শক্তিশালী বন্দিরা তখন অফিসার হয়ে ওঠেন। তাই তাঁরা বাইরে গেলে তাঁদের জেলে ঢোকার আগে পরীক্ষা করা দরকার। এছাড়া জেলে যথেচ্ছভাবে ফোন, গাঁজা, মদ ইত্যাদি আসে, ব্যবহার করা হয়।