কলকাতা, 5 এপ্রিল: রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে নয়া মোড় ৷ সরকারি অনুদান প্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার বিচারবিভাগী তদন্ত নির্দেশ দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যালয় নিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ এসেছিল তাঁর কাছে। সেই দুর্নীতির ভিত্তিতেই এই বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিলেন তিনি। এক্ষেত্রে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে এই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে তীব্র কটাক্ষ করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
জানা গিয়েছে, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, নির্বাচন-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবহারের মতো বিভিন্ন বিষয়কে সামনে রেখেই এই তদন্ত হবে বলে জানা যাচ্ছে। রাজ্যপালের নির্দেশ প্রকাশ্যে আসতেই আরও একবাপর তাঁকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে রাজনৈতিক প্রচারের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার অভিযোগে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। আমরা সকলেই জানি সরকার ফেসবুক বা এক্স হ্যান্ডেলের মতো সোশাল মিডিয়ার সাহায্যে পরিচালিত হয় না। তাই রাজ্যপালের নির্দেশ সরকার এবং সংবাদমাধ্যমের কাছেই আগে যাওয়া উচিত। তাছাড়া আমার আরও একটি প্রশ্ন আছে। রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। তাহলে রাজ্যপাল যা পারেন তা কি আচার্য পারেন!"
রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পর এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, "প্রচন্ড গরম পড়েছে কলকাতায়। এই গরমে মাথা খারাপ হওয়াটা কোনও অস্বাভাবিক বিষয় নয়। শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে রাজ্যপাল যেটা করছেন সেটা অসংবিধানিক-অগণতান্ত্রিক এবং স্বৈরতান্ত্রিক। উনি নিজেকে জমিদার ভাবছেন। উনি নিজেকে রাজতন্ত্রের প্রতীক ভাবছেন। ভারতবর্ষে রাজতন্ত্র চলে না। চলে গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজ্যপালের পদটি সাংবিধানিক মাত্র। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তিনি একের পর এক যে কাজ করে যাচ্ছেন তা কোনওভাবেই আইন সম্মত নয়। তিনি এ ধরনের যত সিদ্ধান্ত নেবেন তত তাঁর মুখটা মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।"
এদিন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটিকে যে বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর মধ্যে যেমন রয়েছে দুর্নীতির বিষয়টি, তেমনই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যেই হিংসা তথা সন্ত্রাসের বিষয়ও ৷ এছাড়া রাজনীতি তথা ভোট-সহ বিভিন্ন কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে ব্যবহারের বিষয়টিকেও এর মধ্যে রাখা হয়েছে।