কলকাতা, 22 ডিসেম্বর: এন্টালি থানার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একটি পরিত্যাক্ত কারখানার একাংশ সম্প্রতি ভেঙে পড়ে চাপা পড়েন দুই ব্যক্তি। বাড়ির হাল জরাজীর্ণ হওয়ার পরেও কীভাবে বিপজ্জনক তালিকায় নেই সেটি ? এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল বিল্ডিং বিভাগকে। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও সক্রিয় হল কলকাতা কর্পোরেশন।
সম্প্রতি কলকাতা কর্পোরেশনের কমিশনার ধবল জৈন একটি নির্দেশ দিয়ে জানান, কলকাতা কর্পোরেশন আওতাধীন এলাকায় ভগ্নপ্রায়, জরাজীর্ণ বাড়ি কিংবা পরিত্যক্ত বাড়ি হলেই সেটির দেওয়া বিপজ্জনক বোর্ড লাগাতে হবে। পাশাপাশি, বাড়িগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে পরিত্যক্ত।
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এন্টালির ঘটনায় কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ অস্বস্তির মুখে পড়েছে। সেখানে একটি পরিত্যক্ত কারখানার একাংশ ভেঙে চাপা পড়ে দুজন। এর পর বিভিন্ন মহলে অভিযোগ ওঠে জনবহুল এলাকায় এই ভবনটি থাকার পরেও কলকাতা কর্পোরেশন কেন বিপজ্জনক ঘোষণা করেনি? সেই সময় মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, ওই ভবনটি বাড়ি নয় কারখানা। সেটা পরবর্তী সময় মালিক এক প্রোমটারকে বিক্রি করে দিয়েছে। শিল্প দফতরের থেকে নো অবজেকশন নিয়েছে। কিন্তু, সেটা জানা ছিল না। এই ঘটনার পর জানতে পেরে পুরসভা বোর্ড লাগিয়েছে।
এমন অনেক জরাজীর্ণ বাড়ি আছে, যেখানে লোকজন থাকেন, আবার বাড়ির বহু অংশে কেউ থাকেন না। কর্পোরেশন সব ক্ষেত্রেই পরিদর্শন করে বিপজ্জনক অংশে বোর্ড লাগিয়ে দেবে। তবে পরিত্যক্ত বাড়ির ক্ষেত্রে কোনও নজরদারি থাকে না, বলার কেউ থাকে না। সেখানেও এই বোর্ড ঝোলানো হবে। যাতে সাধারণের নজরে আসে।
পরিত্যক্ত বাড়িগুলির খোঁজ করে তাতে বিপজ্জনক বোর্ড লাগানোর কাজ করবে বিল্ডিং বিভাগ। এখানেই শেষ নয়। ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত সব অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নিয়মিত নজর রাখবেন বাড়িগুলির উপর। নির্দিষ্ট দিন অন্তর সেখানে গিয়ে ছবি তুলে সেগুলি ডিজিটাল ডায়েরিতে আপলোড করবেন তাঁরা।
কলকাতা শহরে বর্তমানে বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা মোটামুটি 4000টি । অতি বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা মোটামুটি 400টি। এই প্রসঙ্গে কলকাতা কর্পোরেশনের এক আধিকারিক বলেন, "কমিশনার যেমন নির্দেশ দিয়েছেন, সেই মতো আমরা কাজ শুরু করছি। আমরা বরো এক্সিকিউটিভদের নির্দেশ দিয়েছি, যাতে তারা নির্দেশ মতো এই কাজটা অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ও সাব অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে করান। ডিজিটাল ডায়েরিতে নির্দিষ্ট দিন অন্তর ছবি আপলোড করলে সেই খবর আমরা ও ঊর্ধ্বতন কর্তা পর্যন্ত চলে যাবে।