দুর্গাপুরে বস্তি উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে আন্দোলন দুর্গাপুর, 22 ফেব্রুয়ারি: রাষ্ট্রায়ত্ত ডিভিসির ডিটিপিএস কারখানার নতুন 800 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন-ক্ষম ইউনিট প্রতিস্থাপনের জন্য বস্তি উচ্ছেদ অভিযান প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিভিসি ৷ ডিভিসির পক্ষ থেকে পুনর্বাসন নিয়ে কোনও কথা বলা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন বস্তিবাসীরা ৷
ডিভিসি সংলগ্ন এই জমিতে 4 হাজার 700 টি ঘর রয়েছে ৷ এছাড়া ডিভিসির নিজস্ব যে কর্মী আবাসন, যা এখন সিংহভাগ বে-আইনি দখলে সেরকম 508টি আবাসন ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে ৷ উচ্ছেদ অভিযান প্রক্রিয়া শুরু হওয়া মাত্রই অরাজনৈতিক আন্দোলন শুরু করে বস্তিবাসীরা ৷ এতদিন পর্যন্ত আন্দোলনের মুখ ছিলেন অরিন্দম কোনার, চুমকি অঙ্কুরের মতো যুবক-যুবতীরা ৷
তাঁদের আন্দোলনে কোন রাজনৈতিক স্লোগান ছিল না ৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার বস্তিবাসীরা যখন সিটি সেন্টারে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসকের দফতরে মিছিল করে স্মারকলিপি জমা দিতে আসেন, তখন সেই আন্দোলনে স্লোগান দেওয়া হল, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ ৷" বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া, বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, এমনকী কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেও স্লোগান তুলতে শোনা গেল আন্দোলনকারীদের ৷
আন্দোলনের প্রধান মুখ অরিন্দম কোনার সাংবাদিকদের বলেন, "এই আন্দোলনের রাজনৈতিক রং লেগেছে ৷ আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেতা বিশ্বনাথ পাড়িয়াল, মতুয়া সমাজের নেত্রী মমতা বালা ঠাকুর এবং মতুয়া সমাজের পশ্চিম বর্ধমান জেলার নেতা সঞ্জীব কুণ্ডু ৷" পুনর্বাসনের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের পর এবার দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভে বস্তিবারা ৷ বিজেপি সাংসদ-বিধায়কের দেখা মিলছে না ৷ এই স্লোগানও উঠে।
বিক্ষোভকারী সুমনা বাউড়ি অভিযোগ করেন, রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা তাঁদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ৷ কিন্তু কোথায় যাবেন তাঁরা ? কেউ পাশে থাকছে না । পুনর্বাসন ছাড়া কোনওভাবেই ঘর ছাড়বেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন ৷ পুনর্বাসনের দাবি তুলেই মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয় বলেও জানান ৷
অন্যদিকে, আন্দোলনের প্রথম থেকেই নেতৃত্ব দেওয়া অরিন্দম কোনার আরও বলেন, "বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া কিংবা বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেছিলেন বস্তি উচ্ছেদের আগে বুলডোজার তাদের উপর দিয়ে চালাতে হবে ৷ কিন্তু আজ তারা দুজনই নিখোঁজ ৷" এই আন্দোলনের আরেক প্রধান মুখ চুমকি অঙ্কুর ফোনে ইটিভি ভারতকে বলেন, "ডিভিসি কর্তৃপক্ষ প্রাচীর দিতে গেলে যে যে বাড়িগুলি ভাঙা পড়বে তাদের পুনর্বাসন দেওয়ার মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিলেও লিখিত কোনও প্রতিশ্রুতি এখনও পর্যন্ত দেয়নি ৷ ডিভিসির চিফ ইঞ্জিনিয়ার বস্তি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন ৷ তাহলে আমরা কাকে বিশ্বাস করব ? তাই আমরা চাই আগে পুনর্বাসনের লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হোক, তারপর উচ্ছেদ হবে৷" তবে এই বিষয়ে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ কোন কথাই বলতে চায়নি ৷
আরও পড়ুন:
- পুরনো গাড়ি বাতিলের প্রতিবাদে পরিবহণ ভবন অভিযানের ডাক 5 বাস সংগঠন
- ব্যারিকেড ভাঙল কৃষকদের 'দিল্লি চলো' অভিযান, পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানায় ধেয়ে এল টিয়ার গ্যাসের শেল
- 'বেশি বাড়াবাড়ি করলে নবান্নের সামনে অনশনে বসব', হুঁশিয়ারি ডিএ আন্দোলনকারীদের