কলকাতা, 2 জানুয়ারি: হাতে সন্তোষ ট্রফি নিয়ে বিমানবন্দরে নামতেই ফুটবলপ্রেমীরা স্বাগত জানালেন বাংলা ফুটবল দলকে ৷ আট বছর বাদে সন্তোষ ট্রফি জয় করে নতুন বছরের বুধসন্ধ্যায় শহরে ফিরল বাংলা ফুটবল দল। চারিদিকে তখন বাজছে ঢাক ৷ বাংলা ফুটবল দলকে স্বাগত জানাতে ফুটবলপ্রেমী থেকে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের তরফে এসেছে ফুলের মালা থেকে উত্তরীয় ও পুষ্পস্তবক ৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাঙালি স্ট্রাইকার রবি আবেগী হয়ে জানালেন, একটা চাকরি চাই ৷
2024-এর শেষদিন কেরলের বিরুদ্ধে রোমাঞ্চকর সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে বাংলা আবারও তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। হায়দরাবাদের গাচিবাউলি বাংলা সেদিন 1-0 গোলে কেরলকে পরাজিত করে 33তম সন্তোষ ট্রফির শিরোপা জয় করেছে। তারপরই 1 জানুয়ারি ট্রফি কাঁধে সঞ্জয় সেনের ছেলেরা ঘরে ফিরেছেন ৷ রবি হাঁসদাদের স্বাগত জানাতে এদিন বিমানবন্দরে অগণিত সমর্থকরা হাজির ছিলেন।
ট্রফিজয়ী বাংলা দলকে স্বাগত জানাতে অগণিত ফুটবলপ্রেমীর ভিড় (ইটিভি ভারত) গতকাল সংবাদমাধ্যমে রবি জানান, এই গোল তিনি বাবাকে উৎসর্গ করেছেন ৷ পাশাপাশি সাংবাদিকরা যখন জিজ্ঞাসা করলেন, "এত সংগ্রাম তোমার ৷ কী চাউ তুমি"? আবেগী হয়ে বাঙালি স্ট্রাইকারের উত্তর, "একটা চাকরি চাই ৷" এদিন বিমানবন্দরে রবির স্ত্রী এবং দেড় বছরের ছোট্ট সন্তানও ছিল। সন্তানের মুখে বাবার জন্য আদুরে দুষ্টুমিতে রবির মুখে একেবারে গোধূলির আলো। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বিমানবন্দরে এদিন বাংলা দলের সাফল্য নিয়ে যেমন প্রশংসা করেছেন, তেমনই কোচ সঞ্জয় সেনকেও বাহবা জানিয়েছেন ৷ মন্ত্রীর কথায়, "বাংলার এই মুহূর্তে সেরা কোচ তিনিই ৷"
উল্লেখ্য, পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার অন্তর্গত মশারু গ্রামের আদিবাসী পরিবারের ছেলে রবি। পায়ে পায়ে প্রতিকূলতা পেরিয়ে রবির ফুটবলার হয়ে ওঠা। রবির খেলা দেখতে নিয়মিত মাঠে আসতেন ওঁর বাবা। স্বপ্ন দেখতেন ছেলের ফুটবলার হয়ে ওঠার। সেই বাবার আচমকা মৃত্যু দিশেহারা করে দিয়েছিল রবিকে । মনে হয়েছিল, এবার ফুটবলটাই ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু, তা তিনি করেননি ৷ আর সে জন্যই বাবার স্বপ্ন পূরণ করে চলতি সন্তোষ ট্রফির সর্বোচ্চ স্কোরার হিসেবে লেখা রইল রবি হাঁসদার নাম।