অটোয়া, 6 জুন: জল্পনা চলছিল। এবার সেই জল্পনাকেই সত্যি করে পদত্যাগ করেলন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো । সাংবাদিকদের তিনি জানান, তাঁর দল লিবারেল পার্টিতে থাকা অভ্যন্তরীণ গোলমালের জন্যই তাঁকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল । পাশাপাশি তিনি আরও জানান, বাকিদের মধ্যে তিনি হয়তো প্রধানমন্ত্রী পদের সেরা বিকল্প নন। তাঁর জন্যই তাঁকে সরে যেতে হল। এছাড়া দলীয় সভাপতিকে পরবর্তী নেতা নির্বাচন করতে অনুরোধ জানিয়েছেন ট্রুডো। শাসক দলের নির্বাচিত নেতাই পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
গত কয়েকদিন ধরে লিবারেল পার্টিতে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মুখে পড়তে হয়েছে ট্রুডোকে। সেই সূত্র ধরেই মনে করা হচ্ছিল, পদত্যাগ করতে পারেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটা বড় অংশই মনে করছিলেন, পদত্যাগ করার আগে নিজেকে খানিকটা সময় দেবেন তিনি। তাঁর দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে চলেছে বুধবার। কারও কারও মনে হয়েছিল সেই বৈঠক পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। সেখানে কী ধরনের আলোচনা হচ্ছে তা দেখে নিয়েই সিদ্ধান্ত নেবেন । অন্য একটি পক্ষ দাবি করেছিল বৈঠকের আগেই পদত্যাগ করবেন । শেষ পর্যন্ত তাই হল ।
এদিকে, ট্রুডোর এই সিদ্ধান্তের ফলে কানাডার সংসদের অধিবেশন নির্দিষ্ট সময় বসবে না বলে জানিয়েছেন কানাডা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক । তিনি জানান, আগের সিদ্ধান্ত অনুসারে কানাডার সংসদের অধিবেশন বসার কথা ছিল জানুয়ারি মাসের 27 তারিখ থেকে। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে সংসদের অধিবেশন বসবে মার্চ মাসের 24 তারিখ থেকে। তার মানে নিজেদের নেতা নির্বাচন করতে প্রায় দু'মাস সময় পেয়ে যাবে ট্রুডোর দল।
কানাডার পার্লামেন্টের হাউস অফ কমন্সে মোট 338টি আসনের মধ্যে লিবারেল পার্টির 153 জন এমপি রয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য লিবারেল পার্টির 170টি আসনের প্রয়োজন। কয়েক মাস আগে ট্রুডোর সরকারের 'বন্ধু' খালিস্তানিপন্থী এমপি জগমিত সিংয়ের দল নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। তার পরই পরিস্থিতি চরমে ওঠে ৷ জোট ভেঙে যাওয়ার কারণে ট্রুডোর সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এরপর, 1 অক্টোবর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পরীক্ষায়, ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টি অন্য দলের সমর্থন পেয়ে যায় ৷ এর ফলে 'ফ্লোর টেস্টে' তখনকার মতো উতরে যান ট্রুডো। কিন্তু, চাপ এখনও কাটেনি ৷ এমনই আবহে দলের মধ্যেই সমর্থন না পেয়ে পদ ছাড়লেন ট্রুডো।