পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sports

মাত্র সাড়ে তিনে বিশ্বরেকর্ড, দাবার জগতে বিস্ময় প্রতিভা অনীশ

বিশ্বের কনিষ্ঠতম হিসেবে ফিডে রেটিং পেয়ে বিশ্বরেকর্ড দাবাড়ুর ৷ তিন বছর আট মাস বয়সে অনন্য সাধারণ নজির কলকাতার অনীশ সরকারের ৷

CHESS RECORD BY ANISH SARKAR
দাবার জগতে বিস্ময় প্রতিভা অনীশ (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Sports Team

Published : 4 hours ago

কলকাতা, 1 নভেম্বর: তিন বছর আট মাস বয়সে দাবায় বিশ্বরেকর্ড। অনন্য সাধারণ নজির কলকাতার অনীশ সরকার। খুদে দাবাড়ু ইতিমধ্যেই ফিডে রেটিংয়ে নথিভুক্ত হয়েছে। এর আগে বিশ্বদাবায় এত ছোট বয়সে ফিডে রেটিংয়ে নথিভুক্ত হওয়ার নজির নেই। সেদিক থেকে বাঙালি ছেলেটিকে বিস্ময় প্রতিভা বলা হচ্ছে।

নিউটাউনের বাসিন্দা শিক্ষক দম্পতির ছেলে অনীশ মাত্র ছয় মাস আগে দাবা খেলা শুরু করেছিল। বর্তমানে দিব্যেন্দু বড়ুয়ার চেস অ্যাকাডেমির সদস্য খুদে অনীশ। ছোট্ট ছাত্র সম্বন্ধে উচ্ছ্বসিত গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু ৷ বলছেন, "অসাধারণ কৃতিত্ব নিসন্দেহে ৷ এর আগে মিত্রাভ গুহর মধ্যে এই প্রতিভা দেখেছিলাম। মিত্রাভ এসেছিল চার সাড়ে বছর বয়সে। আমাদের অ্যাকাডেমিতে সাধারণত পাঁচ বছরের আগে ভর্তি নেওয়া হয় না। কিন্তু ওর বাবা, মা ছয় মাস আগে অ্যাকাডেমিতে নিয়ে এসে অনুরোধ করেছিল। আমরা কয়েকটা পরীক্ষা করেছিলাম। দেখলাম পেরে গেল। তারপর থেকেই চলছে।"

বিশ্বরেকর্ড দাবাড়ুর (ইটিভি ভারত)

মাত্র তিন বছর বয়সে দাবার বোর্ডে হাতেখড়ি সাধারণত হয় না। তাও খেলাটার নাম যখন দাবা। যেখানে মগজাস্ত্রের সঞ্চালনের ভূমিকা থাকে। ছোট্ট অনীশকে বল ব্যাট না-দিয়ে কেন দাবার বোর্ডে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল ? ছেলের কৃতিত্বের বাবা, মা হিসেবে নিজেদের প্রচারের আলোয় অনিচ্ছুক অনীশের মা বলছেন, "আমরা সব ধরনের খেলা ওর সামনে মেলে ধরেছিলাম। ফুটবল ক্রিকেট খেলার জন্য পার্কে নিয়ে যেতাম। কিন্তু ওর আগ্রহ ছিল দাবায়। বাড়িতে চুপ করিয়ে রাখার জন্য দাবার বোর্ড দিয়েছিলাম। তাছাড়া বাচ্চাদের একটা ঝোঁক থাকে কোনও কিছু মুখে দেওয়ার। আমি গৃহবধূ।"

তিনি আরও বলেন, "বাড়ির কাজে ব্যস্ত থাকার সময় যদি কোনও ছোট জিনিস মুখে দিয়ে ফেলে, সেই আশঙ্কা ছিল। দাবার ঘুটি গুলো আকারে বড়। তাই মুখে দিতে পারবে না। সেই ভাবনাও ছিল দাবা বোর্ডের সামনে বসানোর পিছনে। এইভাবেই জিজ্ঞাসা করত আমাদের। আমি এবং অনীশের বাবা যতটুকু জানি তা দিয়ে শিখিয়েছিলাম। ইউটিউব খুলে দাবা খেলা দেখাতাম। সাদা ঘুঁটি, কালো ঘুঁটির বিভিন্ন চাল দেখে অনীশ আগ্রহী হয়ে ওঠে। তখন দিব্যেন্দু স্যরের অ্যাকাডেমিতে নিয়ে যাই ৷"

খুদে ছাত্রের দাবা বোর্ডে কর্মকাণ্ড দেখে দিব্যেন্দু বড়ুয়া আশাবাদী। বলছেন, "এই তো ছয় মাস ধরে খেলা শিখছে। অনেক পথ বাকি। ফিডে রেটিংয়ে নাম উঠেই শেষ নয়। অ্যাকাডেমিতে সাত-আট ঘণ্টা প্র্যাকটিস করে। আমি এবং সহেলি সময় থাকলে বাড়িতে ডেকে নিই। খুব তাড়াতাড়ি শিখে নিতে পারে।"

এখনও কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে ছোট্ট অনীশ ? দিব্যেন্দু বলছেন, "রাজ্য দাবা ছাড়াও কয়েকটি প্রতিযোগিতায় খেলেছে। আসন্ন টাটা চেস টুর্নামেন্টে খেলবে।"

অঙ্ক সংক্রান্ত বিষয়ে আগ্রহী অনীশ। এখনই সংখ্যার যে কোনও বিষয় সহজেই করায়ত্ত করতে পারে বলে অনীশের মা জানিয়েছেন। টাটা চেস টুর্নামেন্টে বিশ্বখ্যাতদের গা-ঘ্যাঁষাঘেঁষি করার সুযোগ অনীশের। এককথায়, বিশ্বখ্যাতদের মঞ্চে বিস্ময় প্রতিভার পরিচয়। ভবিষ্যতের চ্যাম্পিয়নের পথ চলা বোধহয় এভাবেই শুরু হতে চলেছে।

ABOUT THE AUTHOR

...view details