কলকাতা, 24 সেপ্টেম্বর: 2007 সালে এক ঝাঁক তরুণ তুর্কিকে নিয়ে ওয়ার্ল্ড টি20 চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সংস্করণে নেমেছিল ভারত ৷ সেই টুর্নামেন্টেই ভারতে প্রথমবারের জন্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ৷ বিশ্ব ক্রিকেট তো দূর, নিজের দেশের সমর্থক থেকে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ, সকলে ভেবেছিল গ্রুপ পর্যায় থেকেই ছিটকে যাবে ভারত ৷ কিন্তু, সবাইকে ভুল প্রমাণ করে ফাইনালে ওঠা শুধু নয়, আজকের দিনেই 17 বছর আগে ভারতকে ওয়ার্ল্ড টি20 চ্যাম্পিয়ন করেছিল ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারত ৷
ঐতিহাসিক সেই ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রথম টি20 বিশ্বকাপ জয়ী দল হয় ভারত ৷ যে দলে সেই সময়ের বড় রথী-মহারথীদের কেউ ছিলেন না ৷ ছিলেন, তারুণ্যে ভরা একদল খেলোয়াড় ৷ যাঁদের মধ্যে ছিল, জেতার খিদে, হার না-মানা জেদ ৷ আর সেই জেদকে পুঁজি করে হারের মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে আনার ইতিহাস গড়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি, গৌতম গম্ভীর, ইরফান পাঠান, আরপি সিং, হরভজন সিং, শ্রীসন্থ, যোগিন্দর শর্মারা ৷
রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে স্লো মিডিয়াম পেসার যোগিন্দর শর্মার বলে শর্ট ফাইন লেগে মিসবা-উল-হকের ক্যাচ নিয়েছিলেন এস শ্রীসন্থ ৷ সেটা শুধু ক্যাচ ছিল না ৷ সেদিনের সেই ক্যাচ ছিল ভারতের প্রথম টি20 বিশ্বকাপ জয়ী হওয়ার স্ট্যাম্প পেপারে সই ৷ তবে, ওই একটা মুহূর্ত শুধু নয় ৷ পুরো ম্যাচ জুড়ে ছিল একাধিক মুহূর্ত ৷ টস জিতে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে ওপেনিংয়ে গৌতম গম্ভীর (54 বলে 75 রান) এবং মিডল-অর্ডারে অষ্টাদশী রোহিত শর্মার (16 বলে 30 রানে অপরাজিত) দুরন্ত ইনিংসে ভর করে ভারতের 5 উইকেটে 157 রান তোলা ৷
এরপর সেই রান ডিফেন্ড করতে নেমে, দুই পেসার ইরফান পাঠান এবং আরপি সিংয়ের দুরন্ত বোলিং ৷ বিশেষত, আরপি সিংয়ের বোলিংয়ের দাপটে 12 ওভারে পাকিস্তান মাত্র 77 রান তুলে 6 উইকেট হারায় ৷ আর সেখানেই চাপে পড়ে যায়, শক্তিশালী পাকিস্তান দল ৷ কিন্তু, সেখান থেকে পাকিস্তানকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন মিসবা-উল-হক ৷ তাঁর দুরন্ত ব্যাটিংয়ে একটা সময় জেতা ম্যাচ হারতে বসেছিল ভারত ৷
অন্যদিকে, পাকিস্তানও সরু সুতো উপর ঝুলে ছিল ৷ কারণ, একদিকে যখন মিসবা ইনিংসের হাল ধরছিলেন, তখন উলটোদিক থেকে একের পর এক উইকেটের পতন হতে থাকে ৷ 18.5 ওভারে 141 রানে 9 উইকেট পড়ে যায় পাকিস্তানের ৷ ফলে শেষ ওভারে ভারতের সামনেও সমান সুযোগ ছিল ৷ যা ভরপুর কাজে লাগিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ৷ যে মুহূর্তও আজ ভারতীয় ক্রিকেটের সব সমর্থকের হৃদয়ে রয়েছে ৷ ম্যাচের 4 ওভারে 16 রান দিয়ে 3 উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন ইরফান পাঠান ৷