কলকাতা, 17 জুলাই:আসন্ন বিধানসভা ভোটে দলের বৈতরণী পার করা নিয়ে বিজেপির এক বড় অংশের আস্থা দিলীপ ঘোষের উপর । এমনকি জেলা সফরে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সামনেই মনের ভাব প্রকাশ করছেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা । লোকসভা নির্বাচনের পর বুধবার প্রথমবার সমস্ত জেলা মন্ডল ও বুথ সভাপতি ও রাজ্যে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সায়েন্স সিটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে । তার আগে মঙ্গলবার আইসিসিআর-এ বিজেপির বিস্তারক যোজনা বৈঠকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পান্ডের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গেল দিলীপ ঘোষকে । তবে অনুপস্থিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্যে সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । এরপরই রাজনৈতিক মহলে ফের দিলীপ ঘোষের পরবর্তী রাজ্য সভাপতি হওয়ার জল্পনার আগুনে ঘৃতাহুতি করেছে ।
শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি রাজ্য সভাপতির পদে রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার ৷ তবে বিজেপির নীতি 'এক ব্যক্তি, এক পদ' অনুসারে তাঁকে ছাড়তে হবে রাজ্যে সভাপতির পদ ৷ অন্যদিকে, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দু'বছর । সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্যে সভাপতি হিসেবে পাঠানো হয়েছে বেশ কয়েকটি নাম । পাশাপাশি, পাঠানো হয়েছে সাধারণ সম্পাদকের নামও । রাজ্যে সভাপতি হওয়ার দৌড়ে দিলীপ ঘোষ ছাড়াও রয়েছেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার । তবে এই দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন দিলীপ ঘোষ । কারণ একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে দলটাকে নিজের হাতের তালুর মত চেনেন সবার প্রিয় দিলীপ দা ।
অন্যদিকে, যদি নতুন কাউকে রাজ্যে সভাপতি করা হয় তাহলে দলের সমীকরণ বুঝতেই তাঁর অনেকটা সময় লেগে যাবে । তাই পুরনো এবং অবশ্য অভিজ্ঞ কাউকে রাজ্যে সভাপতি করা হলে তিনি সমস্ত বিষয়গুলি খুব তাড়াতাড়ি ধরতে পারবেন । লোকসভা নির্বাচন এবং তারপর উপনির্বাচনে জেতা আসনে হেরে যাওয়া, এই সব মিলিয়ে দলের মান ফিরিয়ে আনতে বেশিরভাগ কর্মী-সমর্থক এখন দিলীপ ঘোষের উপরই আস্থা রাখছেন । ভোটের ফলাফল নিয়ে আলোচনা হলেই ইতিহাসের পথ ধরে 2021-এই ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা । একেবারে দুই থেকে 18, এহেন ম্যাজিকের পিছনে যে ম্যাজিশিয়ান রয়েছেন সেই দিলীপ ঘোষের উপরই আস্থা রাখতে চাইছেন সবাই ।
বিজেপি বাংলায় সাংগঠনিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল ৷ একাধিক জায়গায় সংগঠন বলে আর কিছুই নেই। সঙ্গে দোসর লোকসভা নির্বাচনের হতাশা এবং নির্বাচনী কাজ করে সেই অর্থ না পাওয়ার মতো একাধিক বিষয় যা বাংলায় বিজেপিকে আরও ব্যাক ফুটে নিয়ে গেছে । তাই জনসংযোগ বাড়াতে এমন কাউকে প্রয়োজন যিনি একেবারে তৃণমূল স্তরে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন । আর জেনেই হোক বা অজান্তেই লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর এক দিনের জন্যেও দিলীপ ঘোষ সেই জনসংযোগ নষ্ট হয়ে যেতে দেননি বলে মত দলীয় কর্মীদের । তিনি জেলায় জেলায় ঘুরে কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের মনবল বাড়িয়েছেন । তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ।
বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের জেলা সফরের সময় বিজেপি কর্মীরা বিভিন্ন অভাব অভিযোগের কথা তুলে ধরেছেন ৷ সেইসঙ্গে তাঁরা যে পরবর্তী রাজ্যে সভাপতি হিসেবে দিলীপ ঘোষকেই চাইছেন, সে কথাও জানিয়েছেন । এই বিষয়ে রাজ্যে কমিটির সদস্য সৌমেন তিওয়ারি বলেন, "সংগঠনকে শক্তিশালী করতে এমন কাউকে চাই যার পুরনো এবং নতুন কর্মীদের মধ্যে একটা মাস অ্যাপিল রয়েছে । নিঃসন্দেহে লোকসভা নির্বাচনে জগন্নাথ সরকার রেকর্ড সংখক ভোট পেয়েছেন ৷ তবে সংগঠনকে শক্তিশালী করে কর্মীদের মনোবল ফিরে তাঁদের আবার 2026-এর লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করতে পারেন একমাত্র দিলীপ দা ।"