কলকাতা, 29 জুন: কোচবিহারে বিজেপির জেলাস্তরের নেত্রীর উপর নির্যাতনের যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে শনিবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তাঁর দাবি, কোচবিহারের ঘটনা থেকে সংবাদমাধ্যমের নজর ঘোরাতে চান মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই কারণেই হকার উচ্ছেদের ঘটনা ঘটানো হল ।
এ দিন বিজেপি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন সুকান্ত মজুমদার ৷ তিনি বলেন, ‘‘দিনের পর দিন, একের পর এক মব লিঞ্চিংয়ের ঘটনা ঘটেছে ৷ কোচবিহারে এই মহিলার উপর যেদিন অত্যাচার হল, সেদিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হকার নিয়ে অনেক কথা বললেন এবং হকার উচ্ছেদ শুরু হয়ে গেল ৷ তার এক-দু’দিন পর সমস্ত বিষয়টি আবার ঠান্ডা হয়ে গেল ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি যে হকার উচ্ছেদ ছিল পলিটিক্যাল স্টান্টবাজি (রাজনৈতিক কৌশল) ৷ এবং কোচবিহারের ঘটনা থেকে মিডিয়ার চোখ সরানোর জন্য... মুখ্যমন্ত্রী এই হকার উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেছিলেন ৷ পুরো ঘটনা হয়েছিল কোচবিহারের নির্যাতনের ঘটনাকে ঢাকা দেওয়ার জন্য ৷’’
তৃণমূল কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য় করে সুকান্তর কটাক্ষ, ‘‘আমরা মর্মাহত, যখন দেখছি মা-মাটি-মানুষের সরকারের আমলে একজন মা বিবস্ত্র অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন ৷ মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে এই ঘটনা ঘটল ৷’’ একই সঙ্গে তিনি কোচবিহারে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছেন ৷ সেখানে অনেক মহিলা ধর্ষিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ সুকান্তর ৷ একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহার থেকে ঘুরে আসার পরই একজন মহিলার উপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটল ৷
তিনি তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে শেখর কাপুরের ‘ব্যান্ডিট কুইন’ সিনেমার প্রসঙ্গ তোলেন ৷ পশ্চিমবঙ্গেও একইভাবে মহিলাদের নগ্ন করে হাঁটানোর ‘সংস্কৃতি’ চলে আসছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ পশ্চিমবঙ্গ চম্বল হয়ে যাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সুকান্ত ৷ এমনকী তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে আখলাখের (যাকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল) কথা ৷ তাঁর প্রশ্ন, আখলাখের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে, এই ক্ষেত্রেও প্রতিবাদ করতে হবে ৷
সুকান্তর আরও দাবি, "তর্কের খাতিরে যদি ধরেই নিই যে পুলিশ পারিবারিক বিবাদ বলছে এবং যদি পুলিশ তদন্ত করে থাকে, তাহলেও দোষীরা কিভাবে ছাড়া পায় । পুলিশ এই ধরনের লঘু ধারা দিয়ে তদন্ত করতে পারে না তৃণমূলের মদত ছাড়া । তৃণমূল কংগ্রেস মিথ্যে বলছে । সিবিআই তদন্তের দাবি জানাব আমরা । আমরা আদালতে যাব । এর শেষ দেখে ছাড়ব ।"