ETV Bharat / politics

মুখপত্র চালাতে প্রয়োজন অর্থের, সিপিএম কর্মীদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে সঞ্চয়ের পরামর্শ বিমানের - BIMAN BASU

সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তির 59তম প্রতিষ্ঠা দিবসে ভাষণ দেন বিমান বসু ৷ সেখানেই তিনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে সঞ্চয়ের পরামর্শ দেন ৷

BIMAN BASU
গণশক্তির 59তম প্রতিষ্ঠা দিবসে ভাষণ বিমান বসুর৷ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 4, 2025, 8:14 PM IST

কলকাতা, 4 জানুয়ারি: 2011 সালে বাম জমানার অবসান হয় পশ্চিমবঙ্গে ৷ ক্ষমতায় আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ৷ তার পর কেটে গিয়েছে 13 বছরেরও বেশি সময় ৷ এই সময়ের মধ্যে ক্রমশ সরকারি বিজ্ঞাপন কমেছে সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তির ৷ ইদানীং কমেছে বেসরকারি বিজ্ঞাপনের সংখ্যাও ৷ এই পরিস্থিতিতে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর উপরই আস্থা রাখতে চাইছেন সিপিএম নেতৃত্ব ৷

তাই সিপিএম নেতৃত্বের তরফে দলের কর্মীদের কাছে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে বছরের শেষে যেন ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর টাকা গণশক্তির তহবিলে দেওয়া হয় ৷ যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ৷ প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাতেই এবার পার্টির মুখপত্র চালাতে চায় সিপিএম ?

আসলে এই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে সিপিএমের মুখপত্রের 59তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে ৷ সেখানে এই প্রসঙ্গ তোলেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বিমান বসু ৷ বলেন, ‘‘অনেকেই অনেক বহুমূল্য জিনিস কেনেন । তার মধ্য থেকেই প্রতি মাসে টাকা জমাতে হবে । সেই টাকা জমিয়ে বছরে গণশক্তি তহবিলে দিতে হবে ।’’

এর পর তিনি পরামর্শ দেন ভাণ্ডার কিনে তাতে টাকা জমাতে । সেই অর্থ দান করতে । নিজেও তিনি পার্টি সদস্যপদ পাওয়ার আগে থেকেই প্রতি মাসে নিয়ম তিনি কীভাবে অর্থ সাহায্য করতেন সেই কথাও বলেন ৷

বাঙালির প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এই ধরনের ভাণ্ডার থাকে ৷ যা মূলত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত ৷ প্রতিটি বাড়ির মহিলারা মূলত এই ভাণ্ডারে অর্থ জমান ৷ কিন্তু 2021 সালের বিধানসভা ভোটের সময় থেকে এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মানেই বদলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ৷ বাড়ির মহিলাদের জন্য চালু হওয়া ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প ওই ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে বাজিমাত করতে অনেকটা সাহায্য করে ৷

পরবর্তীতে অন্যান্য অনেক রাজ্যেই দেখা গিয়েছে যে এই ধরনের প্রকল্প ভোটের হাওয়া ঘুরিয়ে দিয়েছে ৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে তাহলে কি সিপিএমও ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর উপর আস্থা রাখতে চাইছে ? যদিও বিমান বসু ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর কথা উল্লেখ করেননি ৷ তিনি ভাণ্ডার কিনে অর্থ জমাতে পরামর্শ দিয়েছেন ৷

যদিও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প নিয়ে বিরোধিতা সাময়িকভাবে কেউ কেউ করলেও নিয়ে সিপিএম নেতৃত্ব এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেনি । বরং একসময় শিবির করে আবেদনপত্র পূরণ করে দিয়েছেন নেতারা ।

কিন্তু প্রশ্ন হল, গণশক্তির এই পরিস্থিতি কেন হল ? কেন গণশক্তিকে চালাতে কর্মীদের থেকে ব্যাপক হারে অর্থ সাহায্য প্রয়োজন ?

সিপিএমের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পর থেকেই গণশক্তি পত্রিকাকে সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দেয় । এই নিয়ে আদালতে মামলা করলে গণশক্তি জিতে যায় । তবে তারপরেও রাজ্যের সরকার বিজ্ঞাপন দেয়নি । অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপের মুখে অনেক বেসরকারি বিজ্ঞাপনদাতাও বন্ধ করেছে বিজ্ঞাপন দেওয়া ।

এদিকে নিউজ প্রিন্ট থেকে রং, সব কিছুর দাম দিনে দিনে বেড়েছে । ফলে আর্থিক সংকট হয়েছে প্রকট । দৈনিক পত্রিকা চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠলেও দলীয় কর্মীদের অনুদান সেই সংকট মেটাতে অনেকটাই সাহায্য করেছে এতোগুলো বছর । প্রতি বছরের মতো এবছরও অনুষ্ঠানের দিন বহু পাঠক এককালীন অর্থ সাহায্য করেছেন ।

তবে সংকট যেখানে দাঁড়িয়েছে, সেখানে কিছু কর্মী-সমর্থক বা পাঠকের অর্থ সাহায্য নয়, পার্টি নেতৃত্ব চাইছে পার্টির সকল কর্মী-সমর্থক-পাঠক এগিয়ে আসুক । তাই অনুষ্ঠানে বিমান বসু কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান অর্থ সাহায্যের ।

এই নিয়ে বিজেপি নেতা তমঘ্ন ঘোষ বলেন, ‘‘এই ঘটনায় অবাক হওয়ার কিছুই নেই । ওরা তো ইন্ডি জোটের সদস্য । একসঙ্গে ফিসফ্রাই খায় । তাই একজনের প্রকল্পের নাম লক্ষ্মীর ভাণ্ডার । আর আরেক দল তহবিল ভরতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ব্যবহারের কথা বলছেন । আসলে আমরা বলেই আসছি শুরু থেকে সিপিএম হল তৃণমূলের বি টিম । এদের ধ্যান-ধারণা অনেকটাই একই হবে, খুব স্বাভাবিক । রাজ্যে এখন ভোট কাটা ছাড়া সিপিএমের কোনও ভূমিকা নেই ।’’

কলকাতা, 4 জানুয়ারি: 2011 সালে বাম জমানার অবসান হয় পশ্চিমবঙ্গে ৷ ক্ষমতায় আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ৷ তার পর কেটে গিয়েছে 13 বছরেরও বেশি সময় ৷ এই সময়ের মধ্যে ক্রমশ সরকারি বিজ্ঞাপন কমেছে সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তির ৷ ইদানীং কমেছে বেসরকারি বিজ্ঞাপনের সংখ্যাও ৷ এই পরিস্থিতিতে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর উপরই আস্থা রাখতে চাইছেন সিপিএম নেতৃত্ব ৷

তাই সিপিএম নেতৃত্বের তরফে দলের কর্মীদের কাছে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে বছরের শেষে যেন ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর টাকা গণশক্তির তহবিলে দেওয়া হয় ৷ যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ৷ প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাতেই এবার পার্টির মুখপত্র চালাতে চায় সিপিএম ?

আসলে এই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে সিপিএমের মুখপত্রের 59তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে ৷ সেখানে এই প্রসঙ্গ তোলেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বিমান বসু ৷ বলেন, ‘‘অনেকেই অনেক বহুমূল্য জিনিস কেনেন । তার মধ্য থেকেই প্রতি মাসে টাকা জমাতে হবে । সেই টাকা জমিয়ে বছরে গণশক্তি তহবিলে দিতে হবে ।’’

এর পর তিনি পরামর্শ দেন ভাণ্ডার কিনে তাতে টাকা জমাতে । সেই অর্থ দান করতে । নিজেও তিনি পার্টি সদস্যপদ পাওয়ার আগে থেকেই প্রতি মাসে নিয়ম তিনি কীভাবে অর্থ সাহায্য করতেন সেই কথাও বলেন ৷

বাঙালির প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এই ধরনের ভাণ্ডার থাকে ৷ যা মূলত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত ৷ প্রতিটি বাড়ির মহিলারা মূলত এই ভাণ্ডারে অর্থ জমান ৷ কিন্তু 2021 সালের বিধানসভা ভোটের সময় থেকে এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মানেই বদলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ৷ বাড়ির মহিলাদের জন্য চালু হওয়া ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প ওই ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে বাজিমাত করতে অনেকটা সাহায্য করে ৷

পরবর্তীতে অন্যান্য অনেক রাজ্যেই দেখা গিয়েছে যে এই ধরনের প্রকল্প ভোটের হাওয়া ঘুরিয়ে দিয়েছে ৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে তাহলে কি সিপিএমও ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর উপর আস্থা রাখতে চাইছে ? যদিও বিমান বসু ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর কথা উল্লেখ করেননি ৷ তিনি ভাণ্ডার কিনে অর্থ জমাতে পরামর্শ দিয়েছেন ৷

যদিও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প নিয়ে বিরোধিতা সাময়িকভাবে কেউ কেউ করলেও নিয়ে সিপিএম নেতৃত্ব এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেনি । বরং একসময় শিবির করে আবেদনপত্র পূরণ করে দিয়েছেন নেতারা ।

কিন্তু প্রশ্ন হল, গণশক্তির এই পরিস্থিতি কেন হল ? কেন গণশক্তিকে চালাতে কর্মীদের থেকে ব্যাপক হারে অর্থ সাহায্য প্রয়োজন ?

সিপিএমের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পর থেকেই গণশক্তি পত্রিকাকে সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দেয় । এই নিয়ে আদালতে মামলা করলে গণশক্তি জিতে যায় । তবে তারপরেও রাজ্যের সরকার বিজ্ঞাপন দেয়নি । অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপের মুখে অনেক বেসরকারি বিজ্ঞাপনদাতাও বন্ধ করেছে বিজ্ঞাপন দেওয়া ।

এদিকে নিউজ প্রিন্ট থেকে রং, সব কিছুর দাম দিনে দিনে বেড়েছে । ফলে আর্থিক সংকট হয়েছে প্রকট । দৈনিক পত্রিকা চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠলেও দলীয় কর্মীদের অনুদান সেই সংকট মেটাতে অনেকটাই সাহায্য করেছে এতোগুলো বছর । প্রতি বছরের মতো এবছরও অনুষ্ঠানের দিন বহু পাঠক এককালীন অর্থ সাহায্য করেছেন ।

তবে সংকট যেখানে দাঁড়িয়েছে, সেখানে কিছু কর্মী-সমর্থক বা পাঠকের অর্থ সাহায্য নয়, পার্টি নেতৃত্ব চাইছে পার্টির সকল কর্মী-সমর্থক-পাঠক এগিয়ে আসুক । তাই অনুষ্ঠানে বিমান বসু কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান অর্থ সাহায্যের ।

এই নিয়ে বিজেপি নেতা তমঘ্ন ঘোষ বলেন, ‘‘এই ঘটনায় অবাক হওয়ার কিছুই নেই । ওরা তো ইন্ডি জোটের সদস্য । একসঙ্গে ফিসফ্রাই খায় । তাই একজনের প্রকল্পের নাম লক্ষ্মীর ভাণ্ডার । আর আরেক দল তহবিল ভরতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ব্যবহারের কথা বলছেন । আসলে আমরা বলেই আসছি শুরু থেকে সিপিএম হল তৃণমূলের বি টিম । এদের ধ্যান-ধারণা অনেকটাই একই হবে, খুব স্বাভাবিক । রাজ্যে এখন ভোট কাটা ছাড়া সিপিএমের কোনও ভূমিকা নেই ।’’

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.