কলকাতা, 25 ফেব্রিয়ারি: গত 7 ফেব্রুয়ারি রাত থেকে উত্তপ্ত বসিরহাট লোকসভার সন্দেশখালি 2 নম্বর ব্লক ৷ শেখ শাহজাহান এবং শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগে সরব হয়েছে সন্দেশখালি ব্লকের একের পর এক গ্রাম ৷ ঘটেছে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ৷ আর তা থামাতে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পালটা অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে ৷ সবমিলিয়ে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে সন্দেশখালি ৷ কিন্তু, এই সময়ের মধ্যে একবারও বসিরহাটে তারকা তৃণমূল সাংসদের দেখা পাওয়া যায়নি ঘটনাস্থলে ৷ এনিয়ে সংবাদ মাধ্যমে গ্রামবাসীরা ক্ষোভপ্রকাশ শুরু করতেই উদয় হলেন বসিরহাটের সাংসদ ৷
তবে জনসমক্ষে আসেননি অভিনেত্রী নুসরত জাহান ৷ রবিবার সোশাল মিডিয়ায় ঝরঝরে ইংরেজিতে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া সমালোচনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংসদ ৷ উল্লেখ্য, বেশকিছু সংবাদ মাধ্যম এবং সংবাদপত্রে সাংসদের অশান্ত সন্দেশখালিতে না-যাওয়া নিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের খবর প্রকাশিত হয়েছে ৷ সেই খবর দেখেই নড়েচড়ে বসেছেন সাংসদ ৷ তবে, তাঁর পুরো পোস্টটিতে নিজের সমর্থনে কথা বলে গেলেন নুসরত ৷
নুসরতের সোশাল মিডিয়া পোস্ট তাঁর লেখা ইংরেজি পোস্টের বাংলায় তরজমা করলে দাঁড়ায়, "এই সমস্ত অভিযোগ শোনাটা খুবই হৃদয় বিদারক ৷ একজন মহিলা ও একজন জন প্রতিনিধি হিসেবে আমি সবসময় দলের নির্দেশ মেনে চলি এবং মানুষের সেবা করি ৷ আর সন্দেশখালির যে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে সাহায্য পাঠিয়েছেন ৷ আর মানুষের উন্নতি ও সাহায্যে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ৷ আমরা আইনের ঊর্ধ্বে নই.. সব কিছু মেনে ও প্রশাসনকে সমর্থন করাই একমাত্র কাজ ৷"
সন্দেশখালি দ্বীপের বহু গ্রামের বাসিন্দারা ক্ষোভের সুরে জানাচ্ছেন, পাঁচ বছর আগে নির্বাচনী প্রচারে শেষবার নুসরত জাহানকে তাঁরা দেখেছেন ৷ এরপর আর তাঁকে দেখা যায়নি ৷ এমনকী স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পর্যন্ত নুসরতের এলাকায় না-যাওয়া নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন গত বৃহস্পতিবার ৷ তারও জবাব দিয়েছেন সাংসদ ৷ তিনি বলেন, "সুখের সময় হোক বা কষ্টের, আমি সবসময় আমার লোকসভার মানুষের পাশে থেকে সেবা করে গিয়েছি ৷ আমি সবসময় আমার দলের নির্দেশ মেনে কাজ করেছি ৷ আর আমি মনে করি, সকলের রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনের উপর বিশ্বাস রাখা প্রয়োজন ৷ আর যেটা ভুল, সবসময় সেটার নিন্দা করব ৷ আমাদের একে অপরকে নিশানা করা থেকে বিরত থাকা উচিত ৷"
এক্ষেত্রে কথাটি নুসরত যে সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তা স্পষ্ট ৷ আর শেষে বলেছেন, "মানুষের সুরক্ষা ও উন্নয়ন আমাদের একমাত্র অগ্রাধিকার ৷ বাকি কে, কাকে, কী বলল তাতে কিছু যায় আসে না ৷ আর আগেও বলেছি, আবারও বলছি রাজনীতি বন্ধ হোক ৷" কিন্তু প্রশ্ন হল, রাজনীতির ময়দানে নেমে রাজনীতি বন্ধ করতে বলছেন বসিরহাটের তারকা সাংসদ ! আর মানুষের সুরক্ষা ও উন্নয়নই যদি একমাত্র অগ্রাধিকার হয়, তাহলে কেন আজ সন্দেশখালির এই প্রতিবাদ ও অভিযোগ ? এর জবাব মানুষ সাংসদ হিসেবে তাঁর থেকে চাইবে, সেটাই স্বাভাবিক ৷
আরও পড়ুন:
- নন্দীগ্রামের সঙ্গে তুলনা টেনে সন্দেশখালিকে 'বশ্যতা বিরোধী সংগ্রাম' বলে উল্লেখ শুভেন্দুর
- পার্থর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে সন্দেশখালির অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ, আশ্বাস মন্ত্রী পার্থর
- বামগড় জেএনইউতে সন্দেশখালি ইস্যুতে মমতাকে তুলোধোনা শুভেন্দু-সুকান্তর