কলকাতা, 23 জানুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় দফার সরকারে মন্ত্রী থাকা জন বারলা কি এবার তৃণমূল কংগ্রেসের পথে ? বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে সুভাষিণী চা-বাগানে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁকে একমঞ্চে দেখা গিয়েছে ৷ তার পর থেকেই এই প্রশ্ন ঘুরতে শুরু করেছে ৷ যদিও বারলার ফুল-বদলের সম্ভাবনা নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নন দিলীপ ঘোষ ৷ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি এদিন জানান, বারলার এই সিদ্ধান্তের জেরে গেরুয়া শিবিরের লাভ বা ক্ষতি কোনোটাই হবে না ৷
2019 সালে আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসন থেকে জিতে সাংসদ হন জন বারলা ৷ 2021 সালে মন্ত্রিসভায় রদবদল করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সেই সময় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মোদির মন্ত্রী পরিষদে ঠাঁই হয় জন বারলার ৷ 2024 সালে অবশ্য তাঁকে প্রার্থী করেনি বিজেপি ৷ বরং মাদারিহাটের দু’বারের বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে টিকিট দেয় গেরুয়া শিবির ৷ এই নিয়ে সেই সময় থেকে বিজেপির সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল জন বারলার ৷
গত কয়েকমাসে বহুবারই তাঁর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনা তৈরি হয়েছে ৷ কিন্তু কোনোবারই তা সত্যি হয়নি ৷ কিন্তু বুধবার যখন তাঁকে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের দরাজ প্রশংসা করতে দেখা যায়, তখনই প্রশ্ন উঠেছিল যে তাঁর তৃণমূলে যোগের জল্পনা এবার কি সত্যি হতে চলেছে ?
বারলা অবশ্য স্পষ্ট কোনও উত্তর দেননি ৷ এমনকী বৃহস্পতিবারও তাঁকে তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে নিতে দেখা যায়নি ৷ তিনি শুধু মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত থেকেছেন মাত্র ৷ তবে এই উপস্থিতিই তাঁর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগসূত্র তৈরি করল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ তাদের মতে, বারলার হাতে ঘাসফুলের পতাকা ওঠা এখন সময়ের অপেক্ষা ৷
প্রশ্ন উঠেছে, এর ফলে উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণে কী প্রভাব পড়বে ? চা-বলয়ে কি বিজেপির শক্তি কমবে ? মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ অবশ্য সেকথা মনে করেন না ৷ তাঁর কথায়, ‘‘অনেকে চলে গিয়েছে ৷ অনেকে বিজেপিতে এসেছে ৷ তাতে বিজেপির খুব লাভ হয়েছে, এরকম নয় ৷ অনেকে বিজেপি থেকে অন্য দল চলে গিয়েছে ৷ তাতে বিজেপির ক্ষতি হয়েছে, এরকম নয় ৷ অনেকে আসে, অনেকে যায়, রাজনীতিতে চলতে থাকে ৷ পার্টির তাতে খুব একটা কিছু যায় আসে না ৷ এদের উপরে পার্টি দাঁড়িয়ে নেই ৷’’
এদিন উত্তর 24 পরগনার দত্তপুকুরে একটি পিকনিকে হাজির হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ ৷ সেখানে বসেই তিনি এই কথা বলেন ৷ পাশাপাশি চা-বাগানের প্রসঙ্গ তুলে তোপ দাগেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ৷ তিনি বলেন, "চা-বাগানের এই দুর্দশা, শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছে না । তাতে রাজ্য সরকারের কী ভূমিকা আছে ? ওখানকার লোকেরা যে জমিতে আছে, রাজ্য সরকার যদি তাদের পাট্টা দিত, তাহলে তো তারা সরকারি বাড়ি পেতে পারত । সেটাও পাচ্ছে না । রাজ্য সরকারের দেখা উচিত যাতে চা-শ্রমিকেরা যেন কষ্টে না থাকেন ।"