কলকাতা, 23 ডিসেম্বর: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রশংসা শোনা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের গলায় ৷ তিনি বিজেপির অন্য নেতাদের চেয়ে এগিয়ে রাখলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ককে ৷ পাশাপাশি তিনি কটাক্ষ করেছেন বঙ্গ বিজেপির বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে ৷ বালুরঘাটের সাংসদ রাজনীতিতে নবজাতক৷ এমনটাই মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের এই নেতা ৷
বৃহস্পতিবার কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল থেকে গিয়েছেন, তাই সংগঠনে কাজ করা বা প্রশাসনে কাজ করা, মন্ত্রী ছিলেন, সাংসদ ছিলেন, বিধায়ক ছিলেন, তাই শুভেন্দুর অভিজ্ঞতা বিজেপির অন্য নেতাদের থেকে বেশি ৷’’ এর পর তাঁর সংযোজন, ‘‘এতে যদি সুকান্ত মজুমদারের রাগ হয়ে থাকে, উনি নিঃসন্দেহে নবজাতক, তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই ৷... ওঁর সময়ে বিজেপিতে যেভাবে আসন কমে গিয়েছে, তা নিয়ে বিজেপির মধ্যে সমস্যার কথা শোনা যায় ৷’’
একই সঙ্গে কুণাল অবশ্য জানিয়েছেন, বিজেপিতে কী হচ্ছে, তা নিয়ে তৃণমূলের কোনও আগ্রহ নেই ৷ তবে তিনি আরও জানিয়েছেন যে বিজেপির নেতৃত্বে যেই থাকুন, বাংলায় বিজেপি হারবে ৷ কারণ, বাংলার মানুষ বিজেপিকে শত্রু বলে মনে করে ৷ বিজেপি মানুষের বন্ধু নয়৷ সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী বা দিলীপ ঘোষ, মুখ যেই হোন না কেন, বিজেপি হারবে ৷
উল্লেখ্য, 2020 সালের একেবারে শেষের দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা, নন্দীগ্রামের বিধায়ক পদ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ ছেড়ে দেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ যোগদেন বিজেপিতে৷ 2021 সালের বিধানসভা ভোটে তিনি নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে বিধায়ক হন ৷ বিধানসভায় তাঁকে বিরোধী দলনেতা করে বিজেপি ৷
এর পর থেকে বাংলায় রাজনীতির জল যত গড়িয়েছে, ততই শুভেন্দু ও তৃণমূলের অন্য নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক বৈরিতা আরও বেড়েছে ৷ কুণাল ঘোষই তো প্রায় রোজ আক্রমণ শানান বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে ৷ তাঁর মুখেই শুভেন্দুর প্রশংসা রাজ্যে নয়া রাজনৈতিক জল্পনার জন্ম দিয়েছে ৷
যদিও কুণাল ঘোষ এদিন স্পষ্ট করেছেন যে কেন শুভেন্দুকে নিশানা করা থেকে তিনি পিছু হটছেন না ৷ কুণালের কথায়, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী দল বদলে গিয়েছেন, তাই তাঁকে বিশ্বাসঘাতক-দলবদলু বলে একশোবার আক্রমণ করব ৷ আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ শুভেন্দু করে, তার জবাবে একই ভাষায় তাঁকে আক্রমণ করব ৷’’
এদিকে এদিন উত্তর 24 পরগনার দত্তপুকুর থেকে কুণাল ঘোষকে পালটা নিশানা করেন দিলীপ ঘোষ ৷ তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি বিজেপির কাজ করছে ৷ কর্মীরা কাজ করছেন ৷ আড়াইশো লোক প্রাণ দিয়েছেন ৷ সেই কারণে মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করে প্রধান বিরোধী দল করেছে ৷ আমরা লড়াই করে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করেছি ৷ সেটাকে শেষপর্যন্ত নিয়ে যাব৷ যে যেভাবে দেখছে, সেটা তাদের দায়িত্ব ৷’’