ETV Bharat / politics

পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের গরিব মানুষের বাড়ি-বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর - MAMATA BANERJEE

2026 সালের বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যেই এই পরামর্শ, অভিযোগ বিজেপির ৷

MAMATA BANERJEE
মালদায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 21, 2025, 8:55 PM IST

মালদা, 21 জানুয়ারি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইউএসপি, তাঁর ‘আমি তোমাদেরই লোক’ ইমেজ ৷ যে ইমেজে ভর করে চলন্ত গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়তে পারেন যেকোনও জায়গায় ৷ এগিয়ে যেতে পারেন যেকোনও মানুষের দিকে ৷ কখনও ভাবেন না কোন দলের সমর্থক ৷

নিজের এই ইমেজ এবার প্রশাসনের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ মঙ্গলবার মালদার সরকারি সভায় সেই বার্তাই দিয়েছেন তিনি ৷ প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে, মানুষের সঙ্গে মিশতে ৷ যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, এসবই ছাব্বিশের দিকে তাকিয়ে ৷ এখন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে নির্বাচনের ময়দানে নামিয়ে দিতে চাইছেন ৷

এদিনের সভায় একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি খুশি, মালদার এই মিটিং থেকে আজ দু’লক্ষ মানুষের কাছে সমস্ত পরিষেবা পৌঁছে যাবে ৷ থ্যাংক্স টু মাই ডিএম অ্যান্ড অল দ্য বিডিও, এসডিও অ্যান্ড অল পুলিশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর দেয়ার অ্যাকটিভ পার্টিসিপেশন ৷’’

এর পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি গ্রামসভা, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, কর্পোরেশনকে বলব, সপ্তাহে সপ্তাহে বিডিও-দেরও বলব, দেখে শিক্ষা নিন ৷ চিফ সেক্রেটারি কাল আমার সঙ্গে এসেছেন ৷ উনি আজ সকালবেলায় মালদা মেডিক্যাল কলেজ ভিজিট করেছেন ৷ উনি আজ সকালবেলায় আরও ছ’টি, সাতটি জায়গা ভিজিট করেছেন ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি বিডিও-দেরও বলব, ডিএম-কেও বলব, যাঁরা ওসি আছেন তাঁদেরও বলব এবং যাঁরা গ্রামসভা, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, কাউন্সিলর, এমএলএ, এমপি আছেন, এমপি আমাদের এখানে কেউ নেই, কারণ, দুটো সিট, একটা বিজেপি, আরেকটা কংগ্রেস পেয়েছে ৷ মৌসমকে আমি রাজ্যসভায় নিয়ে গিয়েছি ৷ আমি সবাইকে বলব, সপ্তাহে অন্তত একদিন এক ঘণ্টা করে গরিব মানুষের বাড়িতে যান ৷ তাঁদের সঙ্গে মিশুন ৷’’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁর ক্ষমতা নেই, একটু চা পাতা কিনে নিয়ে যান ৷ একটু দুধ কিনে নিয়ে যান ৷ একটু চিনি কিনে নিয়ে যান ৷ তাঁদের বাড়িতে বলুন, আসুন, আমিও চা খাই, আপনাকেও চা খাওয়াই ৷ এইটুকু কাজ করতে বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না ৷ আর এর জন্য কারও কাছে চাইবার প্রয়োজন হয় না ৷ মানুষ মনে করে, উনি আমার বাড়িতে এসেছেন ৷ এটা বড় ব্যাপার ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘যাবেন, মাটির দাওয়ায় বসবেন, খাটিয়ায় বসবেন, চেয়ার দিলে চেয়ারে বসবেন ৷ যেখানে যেমন জায়গা পাবেন বসবেন ৷ আর বসে জিজ্ঞেস করবেন, আপনার কি কোনও সমস্যা আছে ? যদি থাকে, 24 জানুয়ারি থেকে 1 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবার দুয়ারে সরকার হচ্ছে ৷ যদি এখনও পর্যন্ত কেউ কোনোকিছু না পেয়ে থাকেন, পাওয়ার যোগ্যতা আছে, 37টা প্রোজেক্টে আপনারা দরখাস্ত করতে পারেন ৷ আমরা 28 ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্ত কাজগুলো করে দেব ৷”

মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মধ্যে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের গন্ধ দেখছেন বিজেপির জেলা মুখপাত্র অজয় গঙ্গোপাধ্যায় ৷ তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আজ সরকারি মঞ্চকে কার্যত রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ৷ আজ যেভাবে তিনি সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের গরিব মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট, সরকারি কাজের নামে তিনি সরকারি কর্মীদের দিয়ে নির্বাচনের আগে গ্রামের গরিব মানুষের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন ৷’’

এই বিজেপি নেতা আরও বলেন, ‘‘গরিব মানুষ ভোটের সময় সেই সরকারি আধিকারিকদের দেখলে নিশ্চিতভাবে ভীত হবেন ৷ কারণ, তাঁরা ততদিনে জেনে ফেলবেন, এই কর্তারাই পুলিশ ও প্রশাসনের নিয়ন্ত্রক ৷ আমরা দলীয়ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছি ৷ তবে মানুষ এখন আর অত বোকা নয় ৷ তারা তৃণমূলের রাজনীতি ধরে ফেলেছে ৷ লোকসভা নির্বাচনে তার প্রমাণ মিলেছে ৷”

মালদা, 21 জানুয়ারি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইউএসপি, তাঁর ‘আমি তোমাদেরই লোক’ ইমেজ ৷ যে ইমেজে ভর করে চলন্ত গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়তে পারেন যেকোনও জায়গায় ৷ এগিয়ে যেতে পারেন যেকোনও মানুষের দিকে ৷ কখনও ভাবেন না কোন দলের সমর্থক ৷

নিজের এই ইমেজ এবার প্রশাসনের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ মঙ্গলবার মালদার সরকারি সভায় সেই বার্তাই দিয়েছেন তিনি ৷ প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে, মানুষের সঙ্গে মিশতে ৷ যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, এসবই ছাব্বিশের দিকে তাকিয়ে ৷ এখন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে নির্বাচনের ময়দানে নামিয়ে দিতে চাইছেন ৷

এদিনের সভায় একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি খুশি, মালদার এই মিটিং থেকে আজ দু’লক্ষ মানুষের কাছে সমস্ত পরিষেবা পৌঁছে যাবে ৷ থ্যাংক্স টু মাই ডিএম অ্যান্ড অল দ্য বিডিও, এসডিও অ্যান্ড অল পুলিশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর দেয়ার অ্যাকটিভ পার্টিসিপেশন ৷’’

এর পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি গ্রামসভা, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, কর্পোরেশনকে বলব, সপ্তাহে সপ্তাহে বিডিও-দেরও বলব, দেখে শিক্ষা নিন ৷ চিফ সেক্রেটারি কাল আমার সঙ্গে এসেছেন ৷ উনি আজ সকালবেলায় মালদা মেডিক্যাল কলেজ ভিজিট করেছেন ৷ উনি আজ সকালবেলায় আরও ছ’টি, সাতটি জায়গা ভিজিট করেছেন ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি বিডিও-দেরও বলব, ডিএম-কেও বলব, যাঁরা ওসি আছেন তাঁদেরও বলব এবং যাঁরা গ্রামসভা, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, কাউন্সিলর, এমএলএ, এমপি আছেন, এমপি আমাদের এখানে কেউ নেই, কারণ, দুটো সিট, একটা বিজেপি, আরেকটা কংগ্রেস পেয়েছে ৷ মৌসমকে আমি রাজ্যসভায় নিয়ে গিয়েছি ৷ আমি সবাইকে বলব, সপ্তাহে অন্তত একদিন এক ঘণ্টা করে গরিব মানুষের বাড়িতে যান ৷ তাঁদের সঙ্গে মিশুন ৷’’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁর ক্ষমতা নেই, একটু চা পাতা কিনে নিয়ে যান ৷ একটু দুধ কিনে নিয়ে যান ৷ একটু চিনি কিনে নিয়ে যান ৷ তাঁদের বাড়িতে বলুন, আসুন, আমিও চা খাই, আপনাকেও চা খাওয়াই ৷ এইটুকু কাজ করতে বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না ৷ আর এর জন্য কারও কাছে চাইবার প্রয়োজন হয় না ৷ মানুষ মনে করে, উনি আমার বাড়িতে এসেছেন ৷ এটা বড় ব্যাপার ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘যাবেন, মাটির দাওয়ায় বসবেন, খাটিয়ায় বসবেন, চেয়ার দিলে চেয়ারে বসবেন ৷ যেখানে যেমন জায়গা পাবেন বসবেন ৷ আর বসে জিজ্ঞেস করবেন, আপনার কি কোনও সমস্যা আছে ? যদি থাকে, 24 জানুয়ারি থেকে 1 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবার দুয়ারে সরকার হচ্ছে ৷ যদি এখনও পর্যন্ত কেউ কোনোকিছু না পেয়ে থাকেন, পাওয়ার যোগ্যতা আছে, 37টা প্রোজেক্টে আপনারা দরখাস্ত করতে পারেন ৷ আমরা 28 ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্ত কাজগুলো করে দেব ৷”

মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মধ্যে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের গন্ধ দেখছেন বিজেপির জেলা মুখপাত্র অজয় গঙ্গোপাধ্যায় ৷ তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আজ সরকারি মঞ্চকে কার্যত রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ৷ আজ যেভাবে তিনি সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের গরিব মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট, সরকারি কাজের নামে তিনি সরকারি কর্মীদের দিয়ে নির্বাচনের আগে গ্রামের গরিব মানুষের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন ৷’’

এই বিজেপি নেতা আরও বলেন, ‘‘গরিব মানুষ ভোটের সময় সেই সরকারি আধিকারিকদের দেখলে নিশ্চিতভাবে ভীত হবেন ৷ কারণ, তাঁরা ততদিনে জেনে ফেলবেন, এই কর্তারাই পুলিশ ও প্রশাসনের নিয়ন্ত্রক ৷ আমরা দলীয়ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছি ৷ তবে মানুষ এখন আর অত বোকা নয় ৷ তারা তৃণমূলের রাজনীতি ধরে ফেলেছে ৷ লোকসভা নির্বাচনে তার প্রমাণ মিলেছে ৷”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.