সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভায় কর্মিসভা থেকে বিতর্কিত মন্তব্য বিধায়ক লাভলি মৈত্রর সোনারপুর, 4 ফেব্রুয়ারি: বোঝাতে চেয়েছিলেন নেত্রী হিসেবে তিনি খুব কড়া ৷ কোনও বেচাল সহ্য করবেন না ৷ কিন্তু, সেটা করতে গিয়ে মুখ ফসকে গেল সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্রর ৷ আর বলে বসলেন, "দল থাকলে রোজগার থাকবে, দল না থাকলে কিচ্ছু না ৷" বিধায়কের এমন ভাষণে স্বভাবতই বেজায় অস্বস্তিতে শাসক শিবির ৷
রবিবার সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভার প্রতাপনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বুথ ভিত্তিক কর্মিসভা ছিল ৷ সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রতিটি বুথে তৃণমূলকে ভালো ফল করতে হবে বলে জানালেন লাভলি ৷ কিন্তু কর্মিসভায় একটি কারণে বেজায় চোটে যান তিনি ৷ সভায় উপস্থিতির হার খুবই সামান্য হওয়ায় মেজাজ হারান তারকা-বিধায়ক ৷ আর তাই দলের ভিতরে থাকা 'গ্রুপবাজি' তিনি বরদাস্ত করবেন না বলে জানিয়ে দেন ৷
এমনকী লোকসভা নির্বাচনে বুথ ভিত্তিক ফলাফল ভালো না হলে, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলে বুথ ও অঞ্চল সভাপতিদের পদত্যাগ করানোর হুঁশিয়ারিও দেন তিনি ৷ টেনে আনেন প্রতাপনগর পঞ্চায়েতের প্রধানকেও ৷ তাঁকেও হুঁশিয়ারি দিলেন ৷ কিন্তু, এই হুঁশিয়ারি দিতে গিয়েই বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন অরুন্ধতী ওরফে লাভলি মৈত্র ৷ তিনি বলেন, "আপনি দলের সদস্য হয়ে থাকবেন, কিন্তু বুথের কোনও দায়িত্ব নেবেন না! বুথের মধ্যে এখনও দলাদলি চলবে, গ্রুপবাজি চলবে ৷ আর আপনাদের জন্য দলটা শেষ হয়ে যাবে। এটা হতে পারে না ৷"
কিন্তু, দলীয় কর্মীদের উপর ক্ষোভপ্রকাশের ক্ষেত্রে বেফাঁস হয়ে যান তিনি ৷ বলে বসেন, "মানুষকে বোঝান কেন বিজেপি-সিপিএমকে ভোট দেবেন না তাঁরা ৷ এটা আপনাদের দায়িত্ব ৷ দল থাকলে সব হবে ৷ দল থাকলে রোজগার হবে ৷ দল না থাকলে কিচ্ছু হবে না ৷ আপনি যদি সদস্য না থাকতে পারেন, আগামিদিনে কিছু করতে পারবেন না ৷ আজ সদস্য আছেন। পঞ্চায়েত প্রধান-উপপ্রধান আছেন। পঞ্চায়েত সমিতি থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত অফিস আছে বলেই সব চলছে ৷"
বিধায়কের এই বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলের উঠেছে নানা প্রশ্ন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, " বিধায়ক বলেছেন, দল থাকলে রোজগার থাকবে। এর অর্থ কে কত রোজগার করেছেন, সেই তথ্য বিধায়কের কাছে আছে ৷ তিনি সব জানেন ৷ মুখ্যমন্ত্রীর উচিত পুলিশকে দিয়ে ওই বিধায়ককে জেরা করানো ৷ তৃণমূলের থেকে কে কত রোজগার করেছে ? তার তথ্য নেওয়া ৷ বিধায়ক আরও বলেন, সদস্য থাকলে সব হবে। না হলে কিছু হবে না। এর মানে তৃণমূল করলে ইনকামের পথ খুলে যাবে ৷ বেআইনি সম্পত্তি বাড়বে ৷ আর এই সমস্ত তথ্য বিধায়কের কাছেই আছে ৷ তিনি প্রশ্রয়ও দিচ্ছেন ৷"
আরও পড়ুন:
- আইনি জট কাটাতে মমতার বাড়িতে হাজির চাকরি প্রার্থীরা, গেলেন তৃণমূল ভবনেও
- সরকারিভাবে তৃণমূল ক্যাডারদের টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা, একশো দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে কটাক্ষ সুকান্তর
- বিজেপি নেতাদের হাত-পা ভাঙার নিদান দিয়ে বিতর্কে মালদার তৃণমূল সভাপতি