রায়গঞ্জ, 5 জুন: "পিছিয়ে পড়া উত্তর দিনাজপুর", এই তকমা মেটাতে বদ্ধপরিকর তিনি ! জয়ের পর সেই কথাটাই আরও একবার স্পষ্ট করলেন রায়গঞ্জ থেকে বিজেপির জয়ী প্রার্থী কার্তিক পাল ৷ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীকে 68 হাজার 197 ভোটে হারিয়ে বিজেপির মান রক্ষা করেছেন কার্তিক ৷ জয়ের শংসাপত্র হাতে নিয়ে মঙ্গলবার তিনি বলেন, "মানুষ আমার পাশে ছিল বলে আমি এত ভোটে জিতেছি ৷ উত্তর দিনাজপুর জেলার সঙ্গে 'পিছিয়ে পড়া জেলা'র যে তকমা রয়েছে, সেটা মুছে ফেলা আমার প্রধান লক্ষ্য ৷" সেইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "আমাদের ক্যাপ্টেন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ৷ আগামী দিনে আমাদের একাধিক লক্ষ্য পূরণ করতে হবে ৷"
রায়গঞ্জে জয়ী বিজেপির কার্তিক পাল (ইটিভি ভারত) মঙ্গলবার সকাল থেকেই ইসলামপুরের গণনাকেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি প্রার্থী কার্তিক পাল ৷ জয় নিশ্চিত হতেই কার্তিক পাল সড়কপথে ইসলামপুর থেকে 110 কিলোমিটার পেরিয়ে রায়গঞ্জ পলিটেকনিক কলেজের গণনাকেন্দ্রে এসে পৌঁছন রাত 8 টা নাগাদ । ততক্ষণে গণনাকেন্দ্রের সামনে বিজেপির সমর্থকেরা ব্যান্ডপার্টি নিয়ে হাজির । জয়ের শংসাপত্র হাতে নিয়ে কার্তিক পাল গণনাকেন্দ্র থেকে বের হতেই বিজেপি কর্মীরা ব্যান্ড বাজিয়ে, আবির খেলে উল্লাসে মেতে ওঠেন ।
এবারের নির্বাচনে বাংলার গুরুত্বপূর্ণ আসন ছিল রায়গঞ্জ ৷ লোকসভা কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকে সবচেয়ে বেশি এই আসনে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস ৷ 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জয়ী হন বিজেপির প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী ৷ তৃণমূলের প্রার্থী কানাইলাল আগারওয়ালকে 60 হাজারের বেশি ভোটে হারান তিনি ৷ দেবশ্রীর সেই জয়ের সঙ্গে চতুর্থস্থানে নেমে আসেন কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাসমুন্সী ৷ 2024 সালের নির্বাচনে দেবশ্রীর টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও কার্তিককে টিকিট দেয় বিজেপি ৷ দলের এই সিদ্ধান্তে চিন্তায় ছিলেন কর্মীরা ৷ যদিও সকলকে চিন্তা মুক্ত করেছেন কার্তিক ৷
বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী আলি ইমরান রামজের ভোট আটকাতে না পারাকে রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে দলের পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন উত্তর দিনাজপুর তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়ালা । গণনা শেষ হওয়ার কিছু আগেই এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, "ইসলামপুর মহকুমার চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর ও ইসলামপুর বিধানসভা এলাকায় তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী এগিয়ে গেলেও বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী আলি ইমরান রামজ ভালো সংখ্যায় ভোট পেয়েছেন । তাঁর ভোটটা আমরা আটকানোর চেষ্টা করেও পারিনি । পাশাপাশি রায়গঞ্জ, করনদিঘি, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ ব্লকে বিজেপি বিপুল লিড পেয়েছে । যদিও ওই এলাকার সমস্ত বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসের । এই সব মিলিয়ে আমাদের প্রার্থী পরাজিত হচ্ছে । আমরা বুথ ধরে ধরে পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবো ।"