পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

‘ঘরে ফেরা’ বিধায়কের পদ খারিজের আবেদন প্রত্যাহারের চিঠি বিজেপির - Anti Defection Law

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 15, 2024, 7:58 PM IST

Anti Defection Law: কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় ৷ 2021 সালে তিনি বিজেপির প্রার্থী হিসেবে জেতেন ৷ পরে তৃণমূলে যোগদেন ৷ তার পর তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জমা পড়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ৷ লোকসভা ভোটের আগে ফের বিজেপিতে ফিরেছেন সৌমেন ৷ এবার তাঁর বিরুদ্ধে করা আবেদন ফিরিয়ে নিতে চায় বিজেপি ৷ সেই নিয়ে তারা চিঠি দিয়েছে অধ্যক্ষকে ৷

BJP MLA SOUMEN ROY
‘ঘরে ফেরা’ বিধায়কের পদ খারিজের আবেদন প্রত্যাহারের চিঠি বিজেপির (ইটিভি ভারত)

কলকাতা, 15 জুলাই: বিজেপির প্রার্থী হিসেবে জিতে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়ের পদ খারিজ করার আবেদন জমা পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে ৷ সোমবার সেই আবেদন ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য নতুন আবেদন জমা পড়ল অধ্যক্ষের কাছে ৷ সেই আবেদন জমা দিয়েছে বিজেপিই ৷ যা নিয়ে শোরগোল পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে ৷

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে কেন এমন হল ? আসলে লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই সৌমেন রায় আবার বিজেপিতে ফিরে আসেন ৷ সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ বিজেপি ফিরিয়ে নিতে চাইছে ৷

কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় (নিজস্ব চিত্র)

এখন প্রশ্ন হল, অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় কি বিজেপির আবেদন গ্রহণ করবেন ? এ দিন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে, তাই এই নিয়ে এই মুহূর্তে আমি কোনও মন্তব্য করব না ।’’ তবে বিধানসভা সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এই বিষয়টি নিয়ে সোমবার আইনজীবীরা অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন । 3 অগস্ট মামলাটির ফের শুনানি হবে । সেখানেই বিষয়টির নিষ্পত্তি হতে পারে ৷

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে দলবদলের ঘটনা নতুন নয় ৷ বিশেষ করে 2011 সালের পর বিভিন্ন দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের একাধিক নজির রয়েছে ৷ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই পদ না ছেড়েই দলবদল করে থেকে গিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিধায়করা ৷ 2011 থেকে 2021, যতদিন বাম ও কংগ্রেস পর্যায়ক্রমে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল ছিল, সেই সময় দলবদলু বিধায়কদের পদ খারিজের বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি হইচই হয়নি ৷

2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি রাজ্য়ের প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠে ৷ তার পর থেকে এই বিষয়টি নিয়ে বারবার শোরগোল পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে ৷ গত তিন বছরে বিজেপি ছেড়ে একাধিক বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ৷ কিন্তু কেউই বিধায়ক পদে ইস্তফা দেননি ৷ বরং বাইরে তৃণমূল ও বিধানসভার অন্দরে ‘বিজেপি’ হয়ে থেকে গিয়েছেন ৷ প্রতিটি বিধায়কের বিরুদ্ধেই দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করে বিজেপি ৷

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা (নিজস্ব চিত্র)

সেই নিয়ে অধ্যক্ষের কাছে শুনানিও হয় একাধিকবার ৷ সবচেয়ে বেশি টানাপোড়েন মুকুল রায়কে ঘিরে৷ আদালত পর্যন্ত গড়ায় বিষয়টি ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কোনও বিধায়কের পদই দলত্যাগ বিরোধী আইনে খারিজ হয়নি ৷ বরং তৃণমূলের টিকিটে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য যে তিনজন ‘বিজেপি’ বিধায়ক পদত্যাগ করেছিলেন, সেই তিনজনের মধ্যে দু’জন - রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণী ও রানাঘাটের মুকুটমণি অধিকারী সদ্য হওয়া উপ-নির্বাচনে ঘাসফুল প্রতীকে জিতে ফের বিধায়ক হয়েছেন ৷

রাজনৈতিক মহলের মতে, বাকি যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাও হয়তো পদত্যাগের ‘বিশেষ’ প্রয়োজন না পড়লে বিধানসভার অন্দরে ‘বিজেপি’ বিধায়ক হিসেবেই পরবর্তী দু’বছর কাটিয়ে দেবেন ৷ কারণ, দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁদের পদ খারিজের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে ৷

কিন্তু সৌমেন রায়ের কী হবে ? তাঁর কি বিধায়ক পদ থাকবে ? নাকি বিজেপির আবেদন গৃহিত হবে ? এখন সেই দিকেই তাকিয়ে বাংলার রাজনৈতিক মহল ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details