ঢাকা, 1 নভেম্বর:আওয়ামী লিগের জোট সঙ্গী জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় জ্বালিয়ে দিল একদল প্রতিবাদী ৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার কাকরাইল এলাকায় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো এবং আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে ৷ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল বাহিনী ৷ পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট হুসেন মহম্মদ এরশাদ ৷ হাসিনা সরকারের আমলে অন্যতম প্রধান বিরোধী বিএনপি নির্বাচন বয়কট করেছিল ৷ কিন্তু আওয়ামি লীগের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়েছিল জাতীয় পার্টি ৷ উল্লেখ্য, বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর হাসিনা সরকারের মন্ত্রী তথা জাতীয় পার্টির সাংসদ আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ৷
জাতীয় পার্টি ঘোষণা করেছিল যে শনিবার তারা ঢাকায় একটি মিছিল করবে ৷ এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার কাকরাইল এলাকায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে শ্রমিক জনতা ব্যানারে মিছিল করে যাচ্ছিল বিরোধীরা ৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মিছিলে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় ৷ কার্যালয়ের সাইনবোর্ড নামিয়ে দেয় ৷ দলের প্রতিষ্ঠাতা এরশাদের ছবির উপর কালি লেপে দেয় ৷ এরই সঙ্গে কার্যালয়েও আগুন লাগিয়ে দেয় ৷ দমকলবাহিনী সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ৷
এই হিংসার ঘটনার উসকানি দিয়েছে জাতীয় পার্টির কর্মী, সমর্থকরা, অভিযোগ করেন প্রতিবাদী ৷ জুলাই-অগস্টে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল গণ অধিকার পরিষদ ৷ এই রাজনৈতিক দলের এক নেতা শাকিলুজ্জামান বলেন, "আমরা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে দিয়ে মিছিল করে যাচ্ছিলাম ৷ সেই সময় জাতীয় পার্টির জঙ্গিরা কার্যালয়ের ছাদ থেকে আমাদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে ৷ ওরা নিজেরাই দলীয় কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায় ৷ 2014, 2018 এবং 2024 সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ফ্যাসিস্ট আওয়ামি লীগের দালালের ভূমিকা পালন করেছে ৷"
এই ঘটনায় জাতীয় পার্টির তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করেনি ৷ জানা গিয়েছে, তারা শুক্রবারই বিবৃতি দেবে ৷ অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার প্রায় তিন মাস হতে চলল ৷ বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার আগুন এখনও নেভেনি ৷ তার টাটকা উদাহরণ, বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন লাগানোর ঘটনা ৷
5 অগস্ট গণঅভ্যুত্থানের জেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান ৷ 8 অগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় ৷ এরপর গত 23 অক্টোবর মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগকে 'সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ৷
এর মধ্যে 29 অক্টোবর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামি লীগ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার মামলা খারিজ হয়ে যায় বাংলাদেশ হাইকোর্টে ৷ এই দলগুলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা দাবি তুলে মামলা করেছিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সংগঠন ৷ আদালত সূত্রে খবর, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতা সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লা এবং হাসিবুল ইসলাম এই মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় ৷