নয়াদিল্লি, 3 জানুয়ারি: ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার ক্ষেত্রে মানবিক ইরান ৷ বৃহস্পতিবার সে দেশের একজন সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘নিমিশার জন্য ইরান যতদূর করতে পারে করবে ৷’ কেরলের পালাক্কাদ জেলার কোলেনগোডের বাসিন্দা প্রিয়া ইয়েমেনের নাগরিককে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ৷ সোমবার সে দেশের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি এই মালয়ালী নার্সের মৃত্যুদণ্ডে অনুমোদন দিয়েছেন । এরপরেই মনে করা হচ্ছে, এক মাসের মধ্যে নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে ।
2017 সালের জুলাই মাসে এক ইয়েমেনি নাগরিককে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাঁকে । 37 বছর বয়সি এই নার্স বর্তমানে ইরান-সমর্থিত হাউতিদের নিয়ন্ত্রণাধীন ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি কারাগারে বন্দি । ইরান সরকারের ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি দেখছি । ওর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে । মানবিক কারণে আমরা যা কিছু করতে পারি তা করব ৷’’
নার্স হিসেবে কাজ করতে 2012 সালে ইয়েমেনে আসেন নিমিশা প্রিয়া । তার ঠিক তিন বছর পর 2015 সাল থেকে তালাল আবদু মেহেদি সঙ্গে সেখানে একটি ক্লিনিক চালাতে শুরু করেন তিনি । কিন্তু অভিযোগ ওঠে, নিমিশাকে খুব ভালো করে চিনতেন না তালাল ৷ তা সত্ত্বেও তিনি ক্লিনিকের শেয়ারহোল্ডার হিসাবে নিমিশার মাসিক আয়ের অর্ধেক নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন । পরে তালাল নিজেকে নিমিশার স্বামী বলেও পরিচিতি দেয় বলে জানা গিয়েছে ।
পরবর্তীকালে, এটিই দু’জনের মধ্যে ঝামেলার কারণ হয়ে দাঁড়ায় । এমনকি এও অভিযোগ ওঠে, তালাল নিমিশার উপর শারীরিক অত্যাচার শুরু করেন ৷ তিনি তাঁকে বাধ্য করেন তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে । এর পরেই 2017 সালের জুলাই মাসে নিমিশা তালালকে ড্রাগ ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করেন । যদিও নিমিশার যুক্তি হল, তালালকে হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল না তাঁর ৷ নিমিশার উদ্দেশ্য ছিল, তালালের কাছ থেকে নিজের পাসপোর্ট উদ্ধার করা । যেটি তালাল নিজের কাছে নিয়ে রেখেছিল ৷
জানা গিয়েছে, 2020 সালে একটি ট্রায়াল কোর্ট প্রিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ৷ 2023 সালের নভেম্বরে ইয়েমেনের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল সেই রায় বহাল রাখে । সোমবার ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি রাশাদ আল-আলিমি প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেন । মঙ্গলবার বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ভারত এই মামলায় প্রাসঙ্গিক বিকল্পগুলি অনুসন্ধানে সম্ভাব্য সমস্ত সাহায্য করছে ।
প্রিয়ার মা প্রেমা কুমারী বর্তমানে সানায় আছেন ৷ মেয়ের জীবন বাঁচানোর জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছেন তিনি । ইয়েমেন থেকে এক ভিডিয়ো বার্তায় প্রেমা কুমারী কেন্দ্রকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন ।