কলকাতা: হার্টের পর কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । কিডনি শরীরে বিপাকক্রিয়ার ফলে তৈরি হওয়া বর্জ্য পদার্থকে নিষ্কাশন করে । তবে বিভিন্ন কারণে যেমন- আজকের জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে এগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে । একবার কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে ডায়ালাইসিস এবং কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান, একবার কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা অসম্ভব হয়ে পড়ে । তবে কিডনি রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায় ও এটি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে প্রতিরোধ করতে পারে । তবে হায়দরাবাদের এক হাসপাতালের নেফ্রোলজিস্ট ডাঃ শ্রীভূষণ রাজু এই সম্পর্কে বিবরণ দিয়েছেন ৷
তিনি বলেন, "প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগের কোনও সমস্যা হয় না । কিন্তু রোগের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে কিছু লক্ষণ দেখা দেয় । এগুলি শনাক্ত করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে কিডনি সুস্থ রাখা যায় ।"
খিদে না লাগা: রক্তে টক্সিন বাড়লে খিদে কমে যায় । বমি বমি ভাবও দেখা যায় । এরফলে কোনও খাবার খেতে ইচ্ছা হয় না । ফলে ওজন কমে ।
শুষ্ক ত্বক, চুলকানি: কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের মতো মিনারেলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় । বিশেষজ্ঞদের মতে, এরফলে শুষ্ক ত্বক, চুলকানি ও জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয় ।
পা ফোলা: কিডনি সুস্থ না হলে শরীরের বর্জ্য বের হতে সমস্যা হয় । এরফলে আমাদের শরীরে বিশেষ করে পা, গোড়ালি, চোখের চারপাশে ফোলাভাবের মতো সমস্যা শুরু হয় ৷
অতিরিক্ত প্রস্রাব:কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রস্রাবের পরিবর্তন হতে পারে । এই কারণে রাতের বেলা অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাবের উৎপাদন কমে যাওয়া, প্রস্রাবে রক্ত পড়া বা ফেনার মতো উপসর্গ দেখা যায় ।
ক্লান্তি ও অলসতা:কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে রক্তশূন্যতা হতে পারে । এরফলে শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা কমে যায় । এই কারণে পেশী ও টিস্যু পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না ফলে অলসতা ও ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দেয় । সারাদিনের ক্লান্তি ও অলসতার মতো সমস্যাও হতে পারে ।
মাথাব্যথা ও কোনও বিষয়ে মনোনিবেশ করতে না পারা: রক্তে বর্জ্য জমে মস্তিষ্কের কার্যকারিতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে । এই কারণে, মনোযোগে অক্ষমতা ও হালকা মাথাব্যথার লক্ষণ দেখা দেয় । বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেন এই সমস্যা আরও খারাপ হলে এটি খিঁচুনি হতে পারে ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য নির্দিষ্ট গবেষণা থেকে প্রাপ্ত এবং এর মতামতও ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত গবেষক-বিশেষজ্ঞের ব্যক্তিগত ৷ শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷