ETV Bharat / state

দলে দুষ্কৃতী বাড়ছে, পরোক্ষে স্বীকার মালদা তৃণমূলের; গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই বলছেন গুলিবিদ্ধ নেতার ভাই - MALDA TMC LEADER KILLED

দলে দুষ্কৃতীদের ভিড় বাড়ছে, পরোক্ষে স্বীকার মালদা তৃণমূলের মুখপাত্রের ৷ কালিয়াচকে শুট আউটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছেন গুলিবিদ্ধ নেতার ভাই ৷

ETV BHARAT
দলে দুষ্কৃতী বাড়ছে, পরোক্ষে স্বীকার মালদা তৃণমূলের (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 14, 2025, 8:09 PM IST

Updated : Jan 14, 2025, 10:54 PM IST

মালদা, 14 জানুয়ারি: প্রায় বছর ত্রিশ আগের কথা ৷ কালিয়াচক মানেই তখন দুষ্কৃতীদের রাজত্ব ৷ দিনদুপুরে চলে গুলি-বোমার লড়াই ৷ দুষ্কৃতীদের সেই লড়াইয়ে মাঝেমধ্যেই স্তব্ধ হয়ে যায় তৎকালীন 34 নম্বর জাতীয় সড়ক ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয়েছে পুলিশকেও ৷ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কব্জায় রাখতে এভাবেই গোটা কালিয়াচকে ত্রাস ছড়িয়ে দিত দুই দুষ্কৃতীর গোষ্ঠীর লোকজন ৷

দু’দলের মাথায় ছিল জাকির শেখ ও বকুল শেখ ৷ দীর্ঘ লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে জাকিরের ভাই আর ছেলের ৷ মারা যান বকুলের এক কাকাও ৷ নওদা যদুপুরের বকুল আর কাশিমনগর এলাকার জাকিরের সেই লড়াই চলছে এখনও ৷ মকর সংক্রান্তির সকালে তার প্রমাণ পেয়েছেন সালেপুর গ্রামের মোমিনপাড়ার লোকজন ৷

শুট আউটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছেন গুলিবিদ্ধ নেতার ভাই (ইটিভি ভারত)

একসময় জাকির আর বকুল কংগ্রেসের ছত্রছায়ায় ছিলেন ৷ রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর তৎকালীন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন বকুল ৷ সেই সময় সাবিত্রী মিত্রের স্বামী কমল ঘোষই বকুলকে নিয়ন্ত্রণ করতেন ৷ কমলের মৃত্যুর পর বকুলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের ৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে লড়ার সময় সাবিনা তাঁর বাড়িতেও যান ৷ সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল ৷

এদিকে, দীর্ঘ বছর কংগ্রেসের ছত্রছায়ায় থাকলেও কিছুদিন আগে জাকির শেখও তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি আর কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সারিউল ইসলামের হাত ধরে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেন ৷ সবাই ভেবেছিল, এবার হয়তো দু’জনকেই নিয়ন্ত্রণ করবে তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি ৷

নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দীর্ঘদিন বকুল শেখের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বকুল-জাকিরের এই লড়াইয়ে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন এলাকার মানুষজন ৷ তার প্রভাব পড়ে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ৷ 30 আসনের এই পঞ্চায়েতে তৃণমূল 14টি আসনে জয় পায় ৷ বাকি 16টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস 12টি আর আইএসএফ চারটি আসনে জয়লাভ করে ৷ বকুল জমানার অবসান ঘটাতে আইএসএফ-এর সঙ্গে হাত মেলায় কংগ্রেস ৷ প্রধান হন আইএসএফ-এর আবু জাহেদ আলি ৷ উপপ্রধান করা হয় কংগ্রেসের রোজি খাতুনকে ৷ পরে অবশ্য আইএসএফ-এর চার সদস্যের সঙ্গে কংগ্রেসের একাধিক সদস্যও তৃণমূলে যোগ দেন ৷ তৃণমূল নেতত্বের দাবি, এই পঞ্চায়েতে বর্তমানে 25 জন সদস্যই তাদের ৷

ETV BHARAT
শুট আউটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছেন গুলিবিদ্ধ নেতার ভাই (নিজস্ব চিত্র)

বকুল-জাকিরের এই দ্বৈরথে ক্ষতি হয়েছে নওদা যদুপুর এলাকার ৷ ক্ষতি হয়েছে এলাকার অর্থনৈতিক, সামাজিক থেকে শুরু করে শিক্ষাক্ষেত্রেও ৷ সেই কারণে প্রশাসনের নজরেও ছিল এই এলাকা ৷ তার সুফলও ধীরে ধীরে মিলতে শুরু করে ৷ এখন আর আগের মতো বোমা-গুলির লড়াই চলত না এলাকায় ৷ 12 নম্বর জাতীয় সড়ক স্তব্ধ হত না ৷ এরই মধ্যে পুলিশ প্রশাসন যদুপুরে মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের দফতর স্থাপন করে ৷ এতে কিছুটা হলেও ভয় পায় স্থানীয় দুষ্কৃতীরা ৷ তারাও ধীরে ধীরে পেশা পরিবর্তন করতে শুরু করে ৷ এদিনের ঘটনা কিছুটা ব্যতিক্রমী বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী ৷

এদিন সকালে নতুন তৈরি রাস্তার উদ্বোধনে গিয়েছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ ৷ সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছায়াসঙ্গী আতাউল হক ওরফে হাসানুল ওরফে হাসা ৷ কে এই হাসা ? একাধিক খুন, ডাকাতি, ছিনতাই-সহ অন্যান্য সমাজবিরোধী কাজে লিপ্ত ৷ পুলিশের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল ৷ বহুবার জেল খেটেছেন ৷ তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশের পক্ষেও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল ৷ রাস্তার উদ্বোধনে গিয়ে এদিন বকুলের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী নাসিউর শেখের ৷ প্রথমে বিবাদ, পরে নাসিউরকে সেখানে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ ৷ এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন জাকির ঘনিষ্ঠ নাসিউর ৷ 10 মিনিটের মধ্যে বকুলদের উপর হামলা চালায় জাকির অনুগামীরা ৷ তাদের প্রথম নিশানায় ছিল হাসা ৷ সেই লক্ষ্যে তারা সফল হয় ৷

বকুলের ভাই তথা প্রাক্তন প্রধান ও জেলা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সহসভাপতি মহম্মদ আজমল বলছেন, “ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না ৷ তবে রাস্তার কাজের উদ্বোধনেই দাদা সেখানে গিয়েছিল ৷ শুনেছি, ফেরার সময় পিছন থেকে ওদের উপর হামলা চালানো হয় ৷ 25-30 জন দুষ্কৃতী ছিল ৷ ওদের কাজই ঝামেলা পাকানো ৷ জাকির ঘটনাস্থলে নিজে ছিল ৷ ছিল তার ছেলেও ৷ মাস দেড়েক আগে ওরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে ৷ এই ঘটনা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই ঘটেছে ৷ দল বাড়াতে আমরা তো লোকজনকে নেবই ৷ তবে খারাপ লোককে নেব না ৷ জাকিরদের প্রত্যেকের নামে 40-50টি করে মামলা রয়েছে ৷ নিহত হাসা দলের অঞ্চল সাধারণ সম্পাদক ৷ জাকির আর বকুলের মধ্যে আগে ঝামেলা ছিল ৷ কিন্তু সেটা মিটে গিয়েছিল ৷ এখন বকুলকে সরিয়ে জাকির অঞ্চল সভাপতি হতে চায় ৷ এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পিছনে দলের ব্লক সভাপতি সারিউল ইসলামই দায়ী ৷ তার উস্কানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে ৷”

দলে যে দুষ্কৃতীদের ভিড় বেড়েছে তা এদিন কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের মালদা জেলার মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু ৷ তিনি বলেন, “আজ সকালে কালিয়াচকের নওদা যদুপুর অঞ্চলে একটি রাস্তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গুলি চালনার ঘটনা ঘটেছে ৷ সেই অনুষ্ঠানে আমাদের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ, তার ভাই এসারুদ্দিন আর হাসা ছিল ৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসা সেখানেই মারা গিয়েছেন ৷ বকুল আর এসারুদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৷ তাঁদের মেডিক্যালে আনা হয়েছে ৷ চিকিৎসকদের দল কাজ করছে ৷ যারা গুলি চালিয়েছে তারা যে তৃণমূলের এমন কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই ৷ আমরা যাদের নাম শুনছি তারা কংগ্রেসের ৷ কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে নাম লিখিয়ে যদি কেউ নোংরামো করার চেষ্টা করে, তাদের দল কিংবা প্রশাসন ছেড়ে দেবে না ৷ আর যারা সমাজবিরোধী, তাদের কোনও দল হয় না ৷ সমাজবিরোধী কাজ করার জন্য কোনও দলের পতাকা ব্যবহার করে তারা ছাড় পাবে না ৷ তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে পুলিশ ৷”

মালদা, 14 জানুয়ারি: প্রায় বছর ত্রিশ আগের কথা ৷ কালিয়াচক মানেই তখন দুষ্কৃতীদের রাজত্ব ৷ দিনদুপুরে চলে গুলি-বোমার লড়াই ৷ দুষ্কৃতীদের সেই লড়াইয়ে মাঝেমধ্যেই স্তব্ধ হয়ে যায় তৎকালীন 34 নম্বর জাতীয় সড়ক ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয়েছে পুলিশকেও ৷ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কব্জায় রাখতে এভাবেই গোটা কালিয়াচকে ত্রাস ছড়িয়ে দিত দুই দুষ্কৃতীর গোষ্ঠীর লোকজন ৷

দু’দলের মাথায় ছিল জাকির শেখ ও বকুল শেখ ৷ দীর্ঘ লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে জাকিরের ভাই আর ছেলের ৷ মারা যান বকুলের এক কাকাও ৷ নওদা যদুপুরের বকুল আর কাশিমনগর এলাকার জাকিরের সেই লড়াই চলছে এখনও ৷ মকর সংক্রান্তির সকালে তার প্রমাণ পেয়েছেন সালেপুর গ্রামের মোমিনপাড়ার লোকজন ৷

শুট আউটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছেন গুলিবিদ্ধ নেতার ভাই (ইটিভি ভারত)

একসময় জাকির আর বকুল কংগ্রেসের ছত্রছায়ায় ছিলেন ৷ রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর তৎকালীন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন বকুল ৷ সেই সময় সাবিত্রী মিত্রের স্বামী কমল ঘোষই বকুলকে নিয়ন্ত্রণ করতেন ৷ কমলের মৃত্যুর পর বকুলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের ৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে লড়ার সময় সাবিনা তাঁর বাড়িতেও যান ৷ সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল ৷

এদিকে, দীর্ঘ বছর কংগ্রেসের ছত্রছায়ায় থাকলেও কিছুদিন আগে জাকির শেখও তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি আর কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সারিউল ইসলামের হাত ধরে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেন ৷ সবাই ভেবেছিল, এবার হয়তো দু’জনকেই নিয়ন্ত্রণ করবে তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি ৷

নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দীর্ঘদিন বকুল শেখের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বকুল-জাকিরের এই লড়াইয়ে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন এলাকার মানুষজন ৷ তার প্রভাব পড়ে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ৷ 30 আসনের এই পঞ্চায়েতে তৃণমূল 14টি আসনে জয় পায় ৷ বাকি 16টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস 12টি আর আইএসএফ চারটি আসনে জয়লাভ করে ৷ বকুল জমানার অবসান ঘটাতে আইএসএফ-এর সঙ্গে হাত মেলায় কংগ্রেস ৷ প্রধান হন আইএসএফ-এর আবু জাহেদ আলি ৷ উপপ্রধান করা হয় কংগ্রেসের রোজি খাতুনকে ৷ পরে অবশ্য আইএসএফ-এর চার সদস্যের সঙ্গে কংগ্রেসের একাধিক সদস্যও তৃণমূলে যোগ দেন ৷ তৃণমূল নেতত্বের দাবি, এই পঞ্চায়েতে বর্তমানে 25 জন সদস্যই তাদের ৷

ETV BHARAT
শুট আউটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছেন গুলিবিদ্ধ নেতার ভাই (নিজস্ব চিত্র)

বকুল-জাকিরের এই দ্বৈরথে ক্ষতি হয়েছে নওদা যদুপুর এলাকার ৷ ক্ষতি হয়েছে এলাকার অর্থনৈতিক, সামাজিক থেকে শুরু করে শিক্ষাক্ষেত্রেও ৷ সেই কারণে প্রশাসনের নজরেও ছিল এই এলাকা ৷ তার সুফলও ধীরে ধীরে মিলতে শুরু করে ৷ এখন আর আগের মতো বোমা-গুলির লড়াই চলত না এলাকায় ৷ 12 নম্বর জাতীয় সড়ক স্তব্ধ হত না ৷ এরই মধ্যে পুলিশ প্রশাসন যদুপুরে মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের দফতর স্থাপন করে ৷ এতে কিছুটা হলেও ভয় পায় স্থানীয় দুষ্কৃতীরা ৷ তারাও ধীরে ধীরে পেশা পরিবর্তন করতে শুরু করে ৷ এদিনের ঘটনা কিছুটা ব্যতিক্রমী বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী ৷

এদিন সকালে নতুন তৈরি রাস্তার উদ্বোধনে গিয়েছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ ৷ সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছায়াসঙ্গী আতাউল হক ওরফে হাসানুল ওরফে হাসা ৷ কে এই হাসা ? একাধিক খুন, ডাকাতি, ছিনতাই-সহ অন্যান্য সমাজবিরোধী কাজে লিপ্ত ৷ পুলিশের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল ৷ বহুবার জেল খেটেছেন ৷ তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশের পক্ষেও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল ৷ রাস্তার উদ্বোধনে গিয়ে এদিন বকুলের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী নাসিউর শেখের ৷ প্রথমে বিবাদ, পরে নাসিউরকে সেখানে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ ৷ এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন জাকির ঘনিষ্ঠ নাসিউর ৷ 10 মিনিটের মধ্যে বকুলদের উপর হামলা চালায় জাকির অনুগামীরা ৷ তাদের প্রথম নিশানায় ছিল হাসা ৷ সেই লক্ষ্যে তারা সফল হয় ৷

বকুলের ভাই তথা প্রাক্তন প্রধান ও জেলা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সহসভাপতি মহম্মদ আজমল বলছেন, “ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না ৷ তবে রাস্তার কাজের উদ্বোধনেই দাদা সেখানে গিয়েছিল ৷ শুনেছি, ফেরার সময় পিছন থেকে ওদের উপর হামলা চালানো হয় ৷ 25-30 জন দুষ্কৃতী ছিল ৷ ওদের কাজই ঝামেলা পাকানো ৷ জাকির ঘটনাস্থলে নিজে ছিল ৷ ছিল তার ছেলেও ৷ মাস দেড়েক আগে ওরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে ৷ এই ঘটনা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই ঘটেছে ৷ দল বাড়াতে আমরা তো লোকজনকে নেবই ৷ তবে খারাপ লোককে নেব না ৷ জাকিরদের প্রত্যেকের নামে 40-50টি করে মামলা রয়েছে ৷ নিহত হাসা দলের অঞ্চল সাধারণ সম্পাদক ৷ জাকির আর বকুলের মধ্যে আগে ঝামেলা ছিল ৷ কিন্তু সেটা মিটে গিয়েছিল ৷ এখন বকুলকে সরিয়ে জাকির অঞ্চল সভাপতি হতে চায় ৷ এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পিছনে দলের ব্লক সভাপতি সারিউল ইসলামই দায়ী ৷ তার উস্কানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে ৷”

দলে যে দুষ্কৃতীদের ভিড় বেড়েছে তা এদিন কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের মালদা জেলার মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু ৷ তিনি বলেন, “আজ সকালে কালিয়াচকের নওদা যদুপুর অঞ্চলে একটি রাস্তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গুলি চালনার ঘটনা ঘটেছে ৷ সেই অনুষ্ঠানে আমাদের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ, তার ভাই এসারুদ্দিন আর হাসা ছিল ৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসা সেখানেই মারা গিয়েছেন ৷ বকুল আর এসারুদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৷ তাঁদের মেডিক্যালে আনা হয়েছে ৷ চিকিৎসকদের দল কাজ করছে ৷ যারা গুলি চালিয়েছে তারা যে তৃণমূলের এমন কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই ৷ আমরা যাদের নাম শুনছি তারা কংগ্রেসের ৷ কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে নাম লিখিয়ে যদি কেউ নোংরামো করার চেষ্টা করে, তাদের দল কিংবা প্রশাসন ছেড়ে দেবে না ৷ আর যারা সমাজবিরোধী, তাদের কোনও দল হয় না ৷ সমাজবিরোধী কাজ করার জন্য কোনও দলের পতাকা ব্যবহার করে তারা ছাড় পাবে না ৷ তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে পুলিশ ৷”

Last Updated : Jan 14, 2025, 10:54 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.